পৃথিবীটা যদি একটা বিশাল নদী হয় , তবে আমি ভাববো পৃথিবীর উপর আমি একটি ভাসমান নৌকা । যার ধর্মই হচ্ছে বয়ে চলা ।
২৪ ঘণ্টা পার করেও এখন পর্যন্ত মঙ্গলের মাটিতে একটি আঁচড়ও কাটেনি ‘কৌতূহল’ , শুরু করেছে তার অভিযানের প্রাথমিক কাজকর্ম। ৬ আগস্ট সোমবার বাংলাদেশ সময় ১১টা ৩২ মিনিটে মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করার পর পৃথিবীর সময়ে এক দিন পার করেছে কৌতূহলী কিউরিওসিটি। মঙ্গলের মাটিতে কেমন কাটল এক দিন?
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলে এ বিশেষ যানটির সব ঠিকঠাক আছে এবং এটি তার প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু করেছে।
মঙ্গলের মাটিতে নামার ধকল কাটিয়ে সফলভাবে অবতরণের পর এর সব যন্ত্রাংশই ঠিকঠাকভাবে কাজ করছে। মঙ্গলের লাল মাটিতে দুই বছরের যে পরিকল্পনা নিয়ে এ রোবট যানটি গেছে, ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আজ থেকে কাজে নেমে পড়বে সে।
মঙ্গলের গেইল কার্টার বা গিরিখাতে সফলভাবে অবতরণ করেছে ৬ চাকার এ বিশেষ যানটি। তবে গবেষকেরা যে সময় নির্ধারণ করেছিলেন, তার চেয়ে ১৪ মিনিট আগেই মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করে কিউরিওসিটি।
নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির গবেষক মাইক ওয়াটকিনস জানিয়েছেন, মঙ্গলে অবতরণের জন্য যে ধরনের নির্দেশনা দিয়ে যানটিকে পাঠানো হয়েছে, সব ঠিকঠাক মতোই কাজ করেছে।
তাই নামতে কোনো সমস্যা হয়নি। মঙ্গলে অবতরণের পর থেকে খুব বেশি সক্রিয় না থাকলেও আজ থেকে অভিযান শুরু করবে কিউরিওসিটি। এখন সারফেস মোডে রয়েছে এ যানটি। এখন পর্যন্ত সফটওয়্যার ত্রুটি বা কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। গাড়ির আকারের এই রোবোট যানটির ১০টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, যা পুরো ঠিকঠাক কাজ করছে।
তবে পুরো পদ্ধতিটি পরীক্ষায় এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে।
মাইক ওয়াটকিনস আরও জানিয়েছেন, পৃথিবী থেকে এ রোবোট যানটির নিয়ন্ত্রক গবেষকেরা আজ এর অ্যান্টেনা বিস্তার করার নির্দেশ পাঠাবেন। এ অ্যান্টেনাটির সাহায্যে সরাসরি পৃথিবী থেকে কিউরিওসিটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন গবেষকেরা। মঙ্গলের কক্ষপথে থাকা মার্স অডিসি ও মার্স রিকোনাইসেন্স অরবিটার (এমআরও) নভোযান ব্যবহার করে এই অ্যান্টেনার সাহায্যে রিলে করে কিউরিওসিটি বিভিন্ন তথ্য পাঠাবে।
রেডিয়েশন অ্যাসেসমেন্ট ডিটেক্টর (আরএডি) যন্ত্রের সাহায্যে আজ পাঁচ ঘণ্টা ধরে মঙ্গলের তেজস্ক্রিয়তা মাপার কাজে ব্যস্ত সময় কাটবে কিউরিওসিটির।
নাসার গবেষকেরা জানিয়েছেন, পাঁচ ঘণ্টা ধরে কিউরিওসিটি যে তথ্য সংগ্রহ করবে, তা কেবল পর্যবেক্ষণ নয়, এটি এ অভিযানেরই অংশ। এ ছাড়া ক্যামেরা ব্যবহার করে চারপাশের নিসর্গের কিছু ছবিও তুলবে কিউরিওসিটি। অবশ্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু ছবি পাঠিয়েছে এ যানটি।
ছোটখাটো এ ধরনের কাজ দিয়েই শুরু হচ্ছে কিউরিওসিটির দুই বছরের অভিযান। ‘কৌতূহলের’ মূল কৌতূহল জৈব অণু খোঁজায়।
তাই অবতরণের জন্য মঙ্গলের ‘গেইল কার্টার’ নামের একটি গিরিখাতকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখানে অতীতে পানি থাকার অনেক চিহ্ন পাওয়া গেছে বলেই গবেষকেরা মনে করেন। আগামী দুই বছর ‘কিউরিওসিটি’ গেইল কার্টার ও মাউন্ট শার্পের তলা থেকে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে উঠবে। রহস্যময় তিন মাইল উচ্চতার এ অঞ্চলটিতে চলার পথে কিউরিওসিটি অনুসন্ধান করবে ভিনগ্রহের কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব বা আদি কোনো প্রাণ।
নাসার গবেষকেরা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, বিজ্ঞানের একটি অসাধ্য সাধন করা গেছে। এখন বড় কিছু করার শুরু মাত্র।
বিজ্ঞানিদের এসব আশ্চর্য আবিস্কার দেখলে মনে পরে যায় আমাদের নিন্মমানের সভ্যতার কথা , আমাদের সভ্যতা শুধু দূর্নীতি, হিংস্র রাজনীতি আর ক্ষমতার লোভ এসবের মধ্যেই সিমাবদ্ধ । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।