আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ কেমন আচরন ?

স্বপ্ন দেখি এবং চেষ্টা করি সত্যি করার আমি কোনদিন ভাবি নি এমন কিছু আমার চোখের সামনে আমাকে দেখতে হবে। সবার সাথে শেয়ার করলাম । দয়া করে মন্তব্য জানাবেন। বেশ কিছুদিন আগের ঘটনা। আমার অফিস গুলশান ২ নং এ।

তো অফিস থেকে ফিরছি বনানী তে কনক, দেশ বাংলা বাস এর একটা বিশাল লম্বা লাইন হয়। আমি সেই লাইন এর নিয়মিত যাত্রী। বাস এর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন এ দাড়িয়ে থাকতে হয়। মাঝে মাঝে মজার অভিজ্ঞতা হয় মাঝে মাঝে বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা। অনেকক্ষণ লাইন এ দাড়িয়ে থেকে আমি মোটামুটি বিররক্ত।

অনেকক্ষণ পর বাস এ উঠলাম। সিট পেলাম পিছনের দিকে দুইজনের মাঝে। আমার বাম পাশে ছিল একজন বয়স্ক লোক আর ডান পাশে ছিল একজন ১৯ থেকে ২০ বছর বয়সী একটা ছেলে। সামনে সিট এ একজন মধ্য বয়স্ক লোক আর তার মেয়ে। মেয়ের বয়স ১৫ থেকে ১৬ হবে।

যা হোক আসি মুল ঘটনায়। আমার ডান পাশের ছেলেটা দেখি কিছুক্ষণ পর পর উশখুশ করছে আর বার বার তার ডান হাত লুকানোর চেষ্টা করছে আমার থেকে। আর বার বার আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছে। আমি বুঝলাম না কি হচ্ছে কাহিনি কি। আমি ছেলে টা কে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় থাকো আর কোথায় যাচ্ছ ।

শুনলাম সে এয়ারপোর্ট যাচ্ছে তার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে। থাকে শ্যাওড়াপাড়া। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আমার নজরে পড়লো আসল ঘটনা। সামনের সিট এর ডান দিকে জানালার নিচে একটু ফাঁকা জায়গা আছে, ছেলেটি ওই ফাঁকা জায়গা দিয়ে সামনের মেয়েটির শরীরে হাত দিচ্ছে আর সামনের মেয়েটি কে দেখলাম কিছু বলতে না পেরে উশখুশ করছে আর বাম দিকে সরে সরে যাচ্ছে। আমি কিছুক্ষণ পর ছেলে টা কে বললাম সামনের মেয়েকে তুমি চেনো ? উত্তর আসলো না চিনি না।

আমি বললাম তাহলে তুমি এমন আচরন করছ কেন ? ও বলল কি করলাম আমি ? আমি বললাম তুমি ভালো মতই জানো আমি কি বলছি। পরে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল যে এত কথা বলেন কেন। নিজের চরকায় তেল দেন। আমার তখন মাথা গরম হয়ে গেল আমি বললাম যে শেষ বারের মত নিষেধ করলাম এর পর কিছু করলে খুব একটা ভালো হবে না। আমি আশ্চর্য হয়ে কিছু ক্ষণ কপর লক্ষ্য করলাম সে আবার আগের মতই বাজে কাজ শুরু করছে.।

আমার পাশের বয়স্ক ভদ্রলোক এতক্ষণ চুপ করে দেখছিলেন আর শুনছিলেন । আমাকে বললেন বাবা ওই ছেলের গালে একটা কড়া করে থাপ্পড় মারো তো। ইতিমধ্যে সামনের সিট এ বসে থাকা ওই মেয়েটি আর ওর বাবা আমাদের দিকে ফিরে চাইলেন। আমি ওই পোলা রে বললাম আমি তোরে নিষেধ করলাম শুনলি না। বলেই দিলাম কষে একটা থাপ্পড়।

ঠিক তখন ই মেয়ে টা বলল "ভাইয়া আরেকটা মারেন। কুত্তা টা সেই কখন থেকে আমাকে জ্বালাচ্ছে আমি কিছু বলতে পারছি না। লজ্জায় কষ্টে আমার মাথা হেট হয়ে যাচ্ছে। বাবা পাশে আছে তাকেও কিছু বলতে পারছি না" আমি ছেলেটা কে বললাম শোন এই জায়গায় যদি তোর বোন হতো আর আমি যদি এমন কাজ করতাম তুই কি করতি। সে নিশ্চুপ।

বললাম, একটা মেয়ে হল তোর মা অথবা বোন, তুই কিনা তার সাথে এমন করছিস, মা কে সম্মান দিতে না পারলে অন্য কোন মেয়ে কে সম্মান দিতে পারবি না। এতক্ষণ ধরে মেয়েটার বাবা নির্বাক হয়ে শুনছিল। উনি কি করবেন কিছুই বলতে পারছিলেন না। যা হোক কিছু ক্ষণ পর ছেলে টা কে বললাম তোর বোন এর কাছে ক্ষমা চা। বেয়াদব টা ক্ষমা তো চাইলো না উল্টা কেমন জানি করলো ।

উঠে আরও দুইটা থাপ্পড় বসাইয়া দিলাম। বাস এর সবাই ক্ষেপে গেল ওই পোলার উপর। সবাই তো মারবে এমন অবস্থা। পরে খিলখেত এ নামিয়ে দিলাম বাস থেকে। এখন সবার উদ্দেশ্য কিছু কথা, এই ঘটনার জন্য দায়ী কে ? একটা মানুষ কেন এমন কাজ করে।

নিশ্চয় তার পরিবার থেকে কিছু শেখে নি । অথবা তার পরিবার থেকে ভালো কিছু শিখলেও আশে পাশের পরিবেশ তাকে এমন করতে শিখিয়েছে। একজন মানুষ এর বেক্তিত্ত গড়ে উঠার পেছনে কিছু মানুষ এর হাত থাকে ১। পরিবার ২। বন্ধু বান্ধব ৩।

আশে পাশের পরিবেশ এ যারা তার পাশে চলাচল করে এবং তার খোঁজ খবর রাখে এই তিন টা যদি সঠিক পথ দেখায় তাহলে একজন মানুষ এর বেক্তিত্ত ভালো ভাবেই গড়ে উঠবে কোন সন্দেহ ছাড়া। আমরা সবাই চাই আমাদের সন্তান, ভাই বোন, একটা ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক । আর ভালো মানুষ করে গড়ে তুলতে আমাদের ই উদ্যোগ নিতে হবে। একজন ছোট বাচ্চা যদি ছোট থেকেই একটা ভালো সুস্থ আর উঁচু মন মানসিকতা নিয়ে গড়ে উঠতে পারে তাহলে তাকে নিয়ে কোন চিন্তা করা লাগে না। সে ভালো কিছু করতে পারবেই।

আর ভালো কিছু করার জন্য যেটা দরকার সেই পরিবেশ আমাদের ই তৈরি করে দিতে হবে। সবাই ভালো থাকুন। শুভ রাত্রি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.