প্রবহমান এ সময়ে পাঁড় নাস্তিক পাওয়া যেমনটি দুষ্কর, সত্যিকার ঈশ্বর ভক্ত ধার্মিক মানুষ পাওয়া সহজলভ্য নয়। সমাজে যারা নাস্তিক বলে পরিচিত তারাও কোন না কোন সময় ঈশ্বরভাবনায় আপ্লুত হন। সৃষ্টিগতভাবেই মানুষ নাজুক এবং হারকিউলিসের মতোন মহা শক্তিশালী মানুষও জানে মৃত্যুই জীবনের শেষ পরিণতি। জীবনের এ অসহায়ত্ব থেকেই ধর্ম এবং ঈশ্বরভাবনা তথাকথিত নাস্তিকদের মনেও আসে।
বলছিলাম পৃথিবীতে সত্যিকার বিশ্বাসী ধার্মিক মানুষ পাওয়াটাও সহজলভ্য নয়।
আমাদের আশেপাশে যারা ধার্মিক বলে পরিচিত তাদের বেশীরভাগ আচার সর্বস্ব ধর্মপ্রাণ। মুসলমানদেন মধ্যে অনেকেই আছেন নামাজ, রোজা, হজ্ব-যাকাত ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মনিষ্ঠ। কিন্তু তাদের কজনাই বা সত্যিকার অর্থে ইসলামকে ধারণ করতে পেরেছেন?
ইসলামের মূল বিষয় ইমান বা বিশ্বাস স্থাপন করা । আল্লাহ ও রাসুলের উপর এবং সর্বোপরি ঐশী কেতাব কোরানের উপর পরিপূর্ণ আস্থা না থাকলে মোমীন মুসলমান হওয়া যায় না। মুসলমানদের মাঝে সত্যিকার অর্থে কত জন কোরআনকে দৃঢ়ভাবে ঐশী গ্রন্থ হিসেবে বিশ্বাস করে ? তাদের বিশ্বাসের ভিত প্রবল হলে তারা সত্যিই কোরআন-কে হৃদয়ে ধারণ করতো এবং কোরআনের মূল দর্শন অনুযায়ী জীবনেক করতো পরিচালিত।
কোরআনের মূলদর্শন কি? এককথায় বলা যায় সততার সাথে মানবতার জন্য কাজ করে যাওয়া। এজন্য মুসলমানদের জন্য জরুরী: হারাম রোজগার থেকে বিরত থাকা এবং মানুষের হক না মারা। যে ধর্ম প্রতিবেশীদের অভুক্ত রেখে খেতে নিষেধ করে সে ধর্মের মানুষেরা গরীবের হক মারে কিভাবে কিংবা ঘুষখোর হয় কিভাবে তা বোধগম্য নয়।
কোরআন ভোগবাদ বিরোধী এক চেতনা। মানুষকে সুখে দু:খে সকল অবস্থায় গভীর বিশ্বাস থেকে শোকর আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে-- এটিই আল কোরআনের শিক্ষা।
এ চেতনা যদি মানুষের মাঝে থাকে তবে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মাঝে বর্তমানে যে 'চাই, চাই আরো চাই' চেতনার বিলোপ হত। চারপাশের ভোগ্যপণ্য তাকে এভাবে আকর্ষিত করতো না। উল্লেখ্য, এ ভোগবাদ দর্শনই মানুষকে অসৎ পথে পরিচালনার মুল নিয়ামক।
এখন কথা হচ্ছে মুসলমানরা কেন কোরআনের মূলভাবকে ধারণ করতে পারছে না। এর মূল কারণ পাওয়া যাবে ফ্রয়েডিয় মনস্তাত্বিক ব্যাখ্যায়।
যেহেতু বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত ঈশ্বরের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কোন যুক্তিনির্ভর কোন তত্ত্ব দিত পারেনি অবচেতন মনে বেশীরভাগ মানুষই (বিশেষ করে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী)মূলত: সংশয়বাদী। মননের পাটাতনে এ সংশয়বাদ জোরালো থাকায় মুসলমানরে কোরআনকে ধারণ করতে পারছে না, হতে পারছে না সত্যিকার মুসলমান। তবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে ব্রতী হওয়ার মূল কারণ মুসলমান সেজে সমাজে ভাল মানুষের মুখোশ পড়ে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো্
সত্যিকার মুসলমান সমাজে সামাজিক অন্যায়-অবিচার, ভোগবাদি চেতনা থাকতে পারে না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।