আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জ্বীন দেখার সেই অভিজ্ঞতা

সত্য কথা বলি, সৎ পথে চলি......বুদ্ধি ও যুক্তি দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি আমার সাথে ঘটা একটি সত্য ঘটনা . . আমার বয়স তখন বড়জোর ৭ হবে । ক্লাস টু এ উঠেছি সবে । তখন অক্সফোর্ড প্রি ক্যাডেট স্কুলে পড়তাম । এই স্কুলটা অবশ্য আমার বাবারই তৈরী হলে আমি সিম্পলি চলাফেলা করতাম । রোজ কড়া দুপুর ২ টায় বাসায় আসতে হতো ।

যদিও বাসা থেকে স্কুলটা বেশী দুরে নয় , আমাকে স্কুলে নিতে যেতে চাইত আম্মু । আমি একটু বড়াই করে বলতাম যে আমি এখন আর সেই ছোট ছেলে নেই । বলাই বাহুল্য যে আমার স্কুলের পাশে একটি পুরোনো পুকুর ছিল যেটার পাশ দিয়ে আমাকে রোজ বাড়ি যেতে হতো । কোন দিনও কোন সমস্যা হয়নি তবুও আমি অযথাই এটাকে দেখে ভয় পেতাম । বাবা মা হাঁসবে ভেবে আমি এটাকে এড়িয়ে যেতে চাইতাম ।

একদিন বাড়ি ফিরছিলাম । পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমার কোন দিকেই খেয়াল ছিলনা । ২৬শে মার্চের জন্য মাঠে প্রদশর্তনীর চলচিত্রের রিয়ারসাল করে একটু দেরীই হয়ে গেছিল সেদিন । আমি আপন মনে হেঁটেই চলেছি । হঠাত্‍ মনে হলো কেউ যেন আমায় পিছন থেকে ডাকছে ।

পরিচিত গলা । আমি পিছন তাকালাম । নাহ কেউই নেই । আমি মনে করলাম ক্লান্ত হয়ে পড়েছি তাই ভুল শুনছি । একটু পরে আবার সেই ডাক ।

তারপর আবার...... । আমি চিত্‍কার দিয়ে বলে উঠলাম -"ঐ শান্ত বেরিয়ে আয় , ভয় দেখাচ্ছিস ? কালকের কথা মনে নেই ? " । আমি আমার বন্ধু শান্তকে লক্ষ করে বললাম ভেবেছিলাম হয়তো শান্ত আমাকে ভয় দেখাচ্ছে । কিন্তু শান্ত তো ওখানে ছিলনা । আমি ভয় পেলাম ।

তবে ভুতের নয় । ছেলেধরার । শিমু আপু আমাকে ছোট থাকতে আজগুবি সব ভয়ংকর গল্প শোনাত । ছেলে ধরা বা বাঘ বুড়ি নামের একবুড়ি তার বস্তাতে করে বাচ্চা ধরে নিয়ে গিয়ে বেচে দিত । তাই আমি আর আমার ভাতিজা রাফি এই জিনিসটাকে যমের মত ভয় করতাম ।

আমি তো ভয়ে অস্থির । যাইহোক আমি দিলাম ছুট । কিন্তু একি পা চলছেনা কেন ? একটু পরে দেখলাম যে একটি অতি সুন্দরী এক মেয়ে গলি থেকে বের হয়ে আসল । বয়সে আমার চেয়ে ঢের বড় । বলল "আমার সাথে যাবে ? অনেক গল্প শোনাব ।

" আমার আবার এখনও গল্প শোনা বা পড়ার নেশাটা একটু বেশীই । কিন্তু কেন জানি আমি তার কথায় রাজী হলামনা । "মা বকবে বলে । " অসহায়ের চোখে তার দিকে তাকালাম । "কিচ্ছু বলবেনা ।

" সে উত্তর দিল । কিন্তু আমার একই জিদ আমি যাবনা । তারপর সে রেগে গিয়ে আমার ডানহাতটা ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগল । বরফের মত হাতটা স্পর্শ করার পর আমার আর কিছু মনে নেই । যখন চোখ খুললাম তখন আমি আমার বড়আম্মুর কোলে নিজেকে আবিষ্কার করলাম ।

নিজেই হতবাক । কি হয়েছে ? পাড়াসুদ্ধ লোক সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়ে আর পাশে মা কাঁদছে । বড়আব্বুর কন্ঠে শুনতে পেলাম সুরা দরুদ আর ফুক দেবার শব্দ । তখন আমাকে কেউই কিছু বললনা । পরে আমাকে জানানো হলো যে আমি নাকি স্কুল ছুটির পর উল্টো রাস্তা দিয়ে নদীর দিকে যাচ্ছিলাম ।

পার্থ নামের এক বড়ভাই আমাকে ভয়ানক অবস্থা থেকে উদ্ধার করে এখানে এনেছে । আমি নাকি নদীর ধারে যাচ্ছিলাম আর তার ডাক উপেক্ষা করে আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম । তারপর একটা দৃশ্য ভেসে উঠলো স্মৃতিতে , নদীর পাশে বড়আব্বুর তেলের পাম্পে বসে থাকা দেলোয়ার ভাইয়াকে অনেক বার ডেকছি কিন্তু গলা থেকে কোন আওয়াজই বের হয়নি । তার পার্থ ভাই আবার বললো , আমি এক পর্যায়ে নদীর পানিতে চলে যেতে থাকি । আমি হাঁটুপর্যন্ত নেমে গিয়েছিলাম যদিও আমি এখনও ভালভাবে সাঁতার জানিনা ।

এবং পার্থদাদা যখন আমাকে শেষবার ডাক দেন তখন নাকি আমি তার দিকে একবার ঘুরে এক গাল হেঁসে পানিতে অজ্ঞান হয়ে যাই । এবং তিনি তখন আমাকে পানি থেকে তুলে আনেন আমার বডআব্বুর বাসায় । মজার ব্যপার হলো এটা যে পার্থদা নাকি আমার ডিরেক্শনেই বাড়িতে পৌছে দিয়ে গেছে । কিন্তু আমি তখন পুরো বেঁহুশ । ঘটনা এখানেই শেষ নয় ।

চলছেই... মাস তিনেক পর আমি পড়তে পড়তে বা কোন কিছু করতে করতে যদি দেওয়ালে তাকাতাম আমার মনে হত যে কোন কালো ছায়া আমাকে এতক্ষন লক্ষ করছিল এই মাত্র সরে গেল । এরপর এই সমস্যা শোনার পর আমার বাবা এনায়েত পুরের এক কবিরাজ আইজুল মুফতির কাছে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন । তিনি আমাকে কিছু ঔষধ , কালজিরা ও পানিপড়া দিলেন । এরপর আমি আবার সুস্থ ঠিক আগের মত । কিন্তু জ্বীন দেখার সেই অভিজ্ঞতাকে কখনও ভুলতে চাইনা ।

তারপর ধীরে ধীরে এদের প্রতি আকর্ষন আমাকে জিনভুত গবেষক হতে সাহায্য করছে । যার কারনে অল্প বয়সেই আমি এপথে পা দিয়েছি যা সবাই প্রাপ্ত বয়সেও দেয়না । by: Mdsumon Ahmed ভাইয়ের বন্ধু র্সূয্য চৌধুরি http://www.bhooterblog.com থেকে সংগৃহিত ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।