আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিসে আমাদের বেশি বেশি চোখে পানি আসা উচিত?

সততাই সর্ব উৎকৃষ্ট পন্থা। জীবনে আমরা বিভিন্ন কারনে কত বার চোখের পানি ফেলেছি , মানুষের তৈরি গল্প - উপন্যাস আমাদের চোখের পাতা অনেকবার ভিজিয়েছে কিন্তু আমাদের জান্নাত প্রাপ্তির প্রধান বাহক , আল্লাহ'র তৈরি কুরান পাঠ করতে গিয়ে কি কখনো এই চক্ষুদ্বয় আল্লাহ'র ভয় ও নেয়ামতের শুকর আদায়ে ভিজেছে ? অথচ ইহা এমন এক মহাগ্রন্থ যা , মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান বহন করে এবং যা পাঠে আল্লাহ ও বান্দার মাঝে নৈকট্য তা বৃদ্ধি পাই । আল্লাহ কুরানে বলেন , "যখন কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, তখন মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাক এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়। আর সকালে ও সন্ধ্যায় স্মরণ করতে থাক তোমার পালনকর্তাকে আপন মনে কাঁদতে কাঁদতে ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম। কোরআন তেলাওয়াত এর সময় অমনোযোগী থেকো না।

" (সূরা আল আ’রাফ: ২০৪-২০৫) "আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়" সূরা যুমার-২৩ ‘‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ।

’’ [সুনান আত-তিরমিযি:২৯১০] আসুন , এই পবিত্র রামদান মাসে আমাদের বেশী বেশী করে অর্থসহ বুঝে পবিত্র কুরআন পাঠ করে আল্লাহ্‌র ভীতি অর্জনের চেষ্টা করি। এবং আমাদের আসল জীবন পরকালকে সমৃদ্ধ করি। এখানে আরেকটি হাদিস বলতে চাইঃ উমর (রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশ করলাম, তিনি চাটাইয়ের উপর শায়িত ছিলেন, আমি বসলাম, তিনি তাঁর ইযার নিকটে টেনে নিলেন: তাঁর দেহে ইযার ব্যতীত আর কিছু ছিল না। দেহের পাশে ছিল চাটাইয়ের ছাপ, আমি স্বচক্ষে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর খাবারের পাত্রের দিকে তাকালাম। এক সা (দু কেজি চল্লিশ গ্রাম) পরিমাণ যব দেখতে পেলাম।

উমর (রা বললেন : আমার নেত্র-দ্বয় অশ্রু সিক্ত হয়ে গেল, তিনি বললেন, হে ইবনুল খাত্তাব তুমি কেন কাঁদছ ? আমি বললাম : হে আল্লাহর নবী, আমি কেন কাঁদব না, কারণ আপনার দেহের পাশে চাটাইয়ের ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই খাবারের পাত্রে আমি তেমন কিছু দেখতে পাচ্ছি না-এই তো কায়সার, কিসরা (রোম ও পারস্য সম্রাট) রকমারির ফল মূল, উদ্যান ও লেক বিশিষ্ট বিভিন্ন প্রাসাদে আরামদায়ক জীবন যাপন করছে, আপনি তো আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর সবচেয়ে খাঁটি বান্দা, অথচ এটাই আপনার খাবারের পাত্র ! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : হে ইবনুল খাত্তাব, তুমি কি একথায় রাজি হবে না যে, আমাদের জন্য পরকাল এবং তাদের জন্য ইহকাল। আমি বললাম হ্যাঁ। [মুসলিম-৩৭৯৯] হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের দিন তাঁর (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি ওহী নাযিল হতে দেখেছি। যখন নাযিল শেষ হত, তখন সেই কঠিন শীতের সময়ও তাঁর পবিত্র ললাট ঘর্মাক্ত হয়ে যেত।

(সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ২) অপর এক বর্ণনায় আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেন, যখন ওহী নাযিল হতো তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শ্বাস-প্রশ্বাস আটকে যেত, পবিত্র চেহারার রং বদলে গিয়ে খেজুর ডালার মত হলদে হয়ে যেত, সামনের দাঁত কাঁপতে থাকত এবং তিনি এতটা ঘর্মাক্ত হয়ে পড়তেন যে, তার ফোটাসমূহ মুক্তার মত চকচক করত। (আল-ইতকানঃ ১/৪৬) ওহী নাযিলের এ অবস্থায় কখনও কখনও চাপ এতটা বেশী হত যে, তিনি যে পশুর পিঠে সাওয়ার থাকতেন, সেটি তাঁর গুরুভারের কারণে বসে পড়ত। একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রাঃ) এর উরুতে মাথা রেখে শোওয়া অবস্থায় ছিলেন, এ অবস্থায় ওহী নাযিল হলো। তাতে হযরত যায়েদ (রাঃ)- এর উরুতে এতটা চাপ পড়ল যে, তা ফেটে যাবার উপক্রম হলো। (যাদুল মাআদঃ ১/১৮-১৯) __♥__♥_____♥__♥__♥__♥_____♥__♥__♥__♥_____♥__♥__♥__♥_____♥__♥ হে মুসলমান ! একটু চিন্তা করে দেখ ওহী নাযিলের সময় তোমার নবীর কত কষ্ট হতো।

তাঁর কত কষ্টের পরে এই কোরআন আজ তুমি পেয়েছ। কিন্তু তোমার তো কোন কষ্ট হয় নি! আর দয়ার নবীও চাননি এই উম্মত এই কষ্ট ভোগ করুক, তিনি তো চেয়েছেন তাঁর উম্মতেরা এই কোরআন পড়বে এবং সে অনুযায়ী জীবন গড়বে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আমরা আজ অনেকেই মুসলমান হওয়া স্বত্বেও কোরআন পড়তে পারি না, পড়তে পারলেও অবহেলায় তা পড়ি না, আর যারা পড়ি তারা অর্থ বুঝার চেষ্টা করি না। এর থেকে কষ্টের আর কি আছে বলুন আপনারা। এই অকৃতজ্ঞতার কারণে আমাদের কি পরিনাম হওয়া উচিত?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.