দেশের বাইরে আসার আগে ফাস্ট ফুড শরীরের জন্য কতটুকু খারাপ সে ব্যাপারে তেমন কোন ধারণাই ছিল না। নিয়মিত হেলভেশিয়া, পিৎজা হাট, এমেরিকান বার্গার ইত্যাদি জায়গায় খেতাম। অফিসে দুপুরের খাওয়াটা প্রায়ই বাইরে কোথাও করতাম। ফাস্ট ফুড যে খারাপ কিছু হতে পারে জানতামই না। জানলাম কোথায় এসে? ফাস্ট ফুডের দেশে এসে!
ফাস্ট ফুডে যে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কোলেস্টেরোল এবং সোডিয়াম থাকে তাতে শরীর পুষ্টি পায়না, যেটি পায় সেটি হচ্ছে ক্যালোরী।
এত ক্যালোরী একটি শরীরের প্রয়োজন নেই। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য সাধারণত ২০০০ ক্যালোরীই যথেষ্ট। অতিরিক্ত ক্যালোরী খরচ না করে যদি শুধু জমিয়ে রাখেন তাতে ভবিষ্যতে আপনার শরীর হতে পারে ডায়বেটিস, হাই প্রেসার, হৃদরোগসহ আরও নানা শারিরীক সমস্যার কারখানা।
ফেইসবুকে গেলেই বন্ধুদের প্রোফাইল ভর্তি দেখি বিভিন্ন রেস্টোরান্টের ছবি। তারা কি জেনে নাকি না জেনেই বাইরের খাবার খায় তা বলতে পারিনা।
বেশিরভাগ চেনাজানা মানুষদের দেখছি মুটিয়ে যেতে। এর বড় একটি কারণ হতে পরে বাইরের চর্বিযুক্ত খাদ্য। আজকাল ছবি দেখে ঢাকাকে মনে হয় রেস্টোরান্টের শহর। ইরান, ইতালী, জাপান, ইন্দোনেশীয়াসহ আরো বহু দেশের খাওয়া পাওয়া যাচ্ছে আজকের ঢাকায়। দামী রেস্টোরান্টের খাবার সুস্বাদু হতে পারে, কিন্তু স্বাস্থ্যকর কিনা সেটি নিয়ে আমরা অনেক সময়ই চিন্তা করিনা।
ফাস্ট ফুডের দেশে এসে তাই বাইরের চাইতে ঘরের তৈরী খাবারই বেশি খাই। হয়তো মজা কম কিন্তু আমি জানি আমি কি খাচ্ছি এবং এর উপাদান কি কি। যেদিন জানতে পারলাম কোক, পেপসি, স্প্রাইট ইত্যাদিতে মিষ্টি ছাড়া আর কিছুই নেই সেদিন থেকেই ছেড়ে দিয়েছি এসব পানীয়। আইসক্রিম খুব পছন্দ তাই মাঝেমধ্যে খাওয়া হয়। কিন্তু কে জানত আইসক্রিম ভর্তি থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট তা সে যত দামী আইসক্রিমই হোক না কেন!
ছোটবেলায় ম্যাকডোনাল্ডসের গল্প শুনতাম বিদেশফেরত মানুষদের কাছে কিন্তু এই দেশে এসে দেখলাম যে শীক্ষিত, স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা সহসা ম্যাকডোনাল্ডসমুখী হননা।
যারা খাননি তাদের বলছি, তেমন কোন আহামরি মজা না এদের খাবার। ঠেকায়-পড়লে-খাওয়া-যায় টাইপ মনে হয়েছে আমার কাছে। একটি বিগ ম্যাক, এক গ্লাস সোডা এবং এক প্যাকেট ফ্রাইজে যে পরিমাণ ক্যালোরী থাকে তা খরচ করতে আপনাকে হাঁটতে হবে ৭ ঘন্টা! শুধু ম্যাকডোনাল্ডস না, কে এফ সি, পিৎজা হাট বা বার্গার কিং এর খাবারেরও একি অবস্থা। যদিও আজকাল বিভিন্ন রকমের সামাজিক আন্দোলনের কারণে এরা এদের খাদ্যের মান বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
জীবনটা ছোট।
চলুন চেষ্টা করি যে কয়টা দিন বাঁচি সুস্থভাবে বাঁচতে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।