News Link: Click This Link
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট এ মাসেই আরও হরতালসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি দিতে পারে। হরতালের সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে আগামীকাল বুধবার ও বৃহস্পতিবার এবং আগামী সপ্তাহের রবি ও সোমবার অর্থাৎ ১৭, ১৮ এবং ২১, ২২ এপ্রিল রয়েছে। আজ এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে বিএনপির পক্ষ থেকে। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, দাবি না মানা পর্যন্ত সামনের দিনগুলোতে প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে হরতাল দেওয়ারও চিন্তাভাবনা রয়েছে ১৮ দলীয় জোটের।
এ বিষয়ে বিএনপির দলীয় ফোরামেও আলোচনা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ১৮ দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে নি বিএনপি। হরতালসহ দলের পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে জানতে গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও দলটির বর্তমান মুখপাত্র শামসুজ্জামান দুদু দৈনিক আজাদীকে বলেন, আজ মঙ্গলবার আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি থেমে নেই। সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে আছি।
কবে এবং কী ধরনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে, হরতাল হবে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সব কেন্দ্রীয় নেতাকে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই যেকোনো সময় যেকোনো কর্মসূচিই ঘোষণা হতে পারে। তিনি বলেন, হরতালের বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা হয় নি। তবে আমাদের নেত্রী তা জানানোর পরই ঘোষণা হবে।
নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সরকারের পদত্যাগ ও বিএনপি নেতাদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আছি আমরা।
বিএনপি সূত্র জানায়, গত বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির একটি জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেগম খালেদা জিয়া। নেতারা দাবি আদায়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরুর তাগিদ দেন বৈঠকে। এ জন্য তারা প্রতি সপ্তাহেই দুদিন করে হরতাল দেওয়ার পরামর্শও দেন।
তবে এ বিষয়ে ১৮ দলীয় জোটের শরিক নেতাদের সমর্থন পাওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানা গেছে।
পরে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে ১৮ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আরেক সদস্য আর এ গণি জানান, আমরা দেশের সব কিছু নিয়েই আলোচনা করেছি। এসব বিষয়ের সিদ্ধান্তের কথা দু-একদিনের মধ্যেই জানানো হবে।
ওই বৈঠকে ড. আর এ গনি ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ছাড়াও ড. মঈন খান, এম কে আনোয়ার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, বেগম সারোয়ারী রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, সরকার হলমার্ক, শেয়ারবাজার ও ডেসটিনির টাকা বাইরে লুট করে নিয়ে গেছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে লুট করা এসব টাকা জনস্বার্থে ব্যয় করা হবে। আওয়ামী লীগ ‘ষড়যন্ত্র করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে’ এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির একজন নেতা থাকা পর্যন্ত দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রতিরোধ করা হবে।
সরকার তাদের ৭ হাজার ১০৩টি মামলা দলীয় বিবেচনায় প্রত্যাহার করেছে। অথচ এই সরকার বিএনপির নেতাদের নামে নতুন নতুন মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। সরকার নিজেরাই গাড়ি পুড়িয়ে পুলিশকে দিয়ে মামলা করাচ্ছে। বিএনপি নেতাদের মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজপথ অবরোধ করে ১৮ দলের আটক নেতাদের মুক্ত করে আনা হবে।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ নানান ইস্যুতে সরকার পতনে হরতালসহ লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে আসছে ১৮ দলীয় জোট।
হরতালের গাড়ি ভাঙ্চুর, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মামলায় এরই মধ্যে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন দলটির যুগ- মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে গত ৯ ও ১০ এপ্রিল হরতাল পালন করে ১৮ দল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।