১১ ডিসেম্বর,২০১০
গড এসেছিলেন তাই ডগ’রা ছিলো উৎফুল্ল। গড’এর ভজন-সাধন, আরাধনা হয়ে গেলো বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে। গড একা আসলেননা, সাথে নিয়ে আসলেন এক ঝাক নৃত্যপটিয়সী উর্বশী। গড এলেন, আর ভক্তরা সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করে গডের সন্তূষ্টি লাভের আশায় ছুটে গেলো। এই গড আবার একক কোনো স্বত্তা নন, বিশাল আগ্রাসী গডের সাংস্কৃতিক প্রতিভু যার কাজ হলো স্বাধীন বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ত্বরান্নিত করা; তিনি সেই কাজ বেশ সাফল্যর সাথেই করে গেছেন আর প্রমাণ করে গেছেন জাতি হিসেবে আজো আমরা পরাধীনতার শিকলে বন্দী।
২৪ফেব্রুয়ারী,২০১১
আবারো গড এসেছেন। এবারের হেতু বিশ্বকাপ পরবর্তী তথাকথিত ত্রিদেশীয় কনসার্ট। নামেই ত্রিদেশীয়, মুল কতৃত্ব থেকে গেলো দাদাবাবুদের হাতেই.........। আমরাও সকল আত্মসমান ও আত্মগৌরব ভুলে মত্ত হলাম “শীলা কি জাওয়ানী’তে”...............। কি চমৎকার!!!!! ভাষার মাসে বীর ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি কি অভাবনীয় শ্রদ্ধা প্রদর্শন!!!!!!!!
ভালোই হলো সালাম,বরকত,রফিক তোমরা আজ বেচে নেই।
বেচে থাকলে তোমাদের আত্মত্যাগের প্রতি এই অসম্মান তোমরা সহ্য করতে পারতেনা।
হায়রে প্রিয় বাংলাদেশ!!!!!!!!!!!!!!!!!!
সীমান্তে,বাণিজ্যে,অর্থনীতিতে,সংস্কৃতিতে সর্বত্র এই প্রভুদের আগ্রাসনের স্বীকার।
সীমান্তে চলছে একের পর এক নীরিহ বাংলাদেশী হত্যা,কাটাতারের বেড়ায় ঝুলছে “ফেলানী”র মৃতদেহ আর আমরা ব্যস্ত “শীলা কি জাওয়ানী”তে।
ফারাক্কা,টিপাইমুখের মতো একের পর এক মরণবাঁধ দিয়ে তারা আমাদের নদ-নদীকে দিচ্ছে মৃত্যু-পরোয়ানা,বাংলাদেশ’কে করছে মরুভুমি আর আমরা নির্লজ্জের মতো তাদের শিল্পীদের নিয়ে করছি উচ্ছাস।
বাংলাদেশের কোনো টিভি চ্যানেলকে ভারতে প্রদর্শন করতে দেয়া হয়না আর আমাদের মা-বোনদের ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখার জন্য সে কি ব্যস্ততা।
আমরা সব উজাড় করে তাদের দিলাম কিন্তু আজো ফিরে পাইনি “বেরুবাড়ী”, “তিন বিঘা করিডোর” কিংবা “দক্ষিণ তালপট্টি”।
ট্রানজিট দিলাম,ট্রান্সশিপমেন্ট দিলাম, যা চেয়েছে সবই তারা পেয়েছে কিন্তু আজ’ও আমারা পাইনা তাদের দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার কিংবা ভ্রমণের জন্য ডাবল এন্ট্রি ভিসা।
সবক্ষেত্রেই তারা দিলো বঞ্চনা আর করলাম নির্লজ্জ তোষামোদ!!!!!!!!!!!!!!!!
হায়রে হতভাগা জাতি, কবে জাগ্রত হবে আমাদের আত্ম-মর্যাদাবোধ????? কবে সচেতন হবে আমাদের ঘুমন্ত বিবেক?????
ভাবতে খুব অবাক লাগে, যে দেশে মুক্তিযোদ্ধা পপগুরু আজম খানের চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহের জন্য শিল্পীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কন্ঠযোদ্ধা বিপুল ভট্টাচার্যের চিকিৎসা অর্থাভাবে আটকে থাকে; সে দেশের মানুষ কিভাবে শাহরুখ খানের কনসার্ট উপভোগের জন্য এতো বিপুল অর্থ ব্যয় করে? তাও আবার বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে ও ভাষার মাস ফেব্রুয়ারীতে?????
কি চমৎকার!!!!!! এইতো করদ রাজ্যবাসীর মতো স্বার্থক আচরণ!!!!!!!!!
২০০বছর শোষণ করেছিলো ব্রিটিশরা,তারপর ২৪ বছর শোষণ করলো পাকিরা আর স্বাধীনতার পর হতে অদ্যবধি শোষণ করে আসছে দাদাবাবুরা। এভাবেই শতাব্দীর পর শতাব্দী হায়েনার শোষণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আসছে আমার প্রিয় মাতৃভুমি।
খুব জানতে ইচ্ছা করে,আমরা কি ব্রিটিশ’দের কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছিলাম পিন্ডীর দালালী করার জন্য? আবার পিন্ডীর কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছিলাম কি দিল্লীর দাসত্ব করার জন্য? আমরা কি আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন স্বাধীন জাতি হিসেবে আদৌ কখনো আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছিলাম?
আমাদের পরাধীনতার সর্বশেষ মঞ্চায়ন হলো“২৪শেফেব্রুয়ারী’’তে..................।
তাই আজ গভীর দুঃখবোধ থেকে বলতেই হচ্ছেঃ
“বিজয়ের মাসে এসেছিলেন শাহরুখ খান,ভাষার মাসে এলেন সালমান খান,কবে জাগ্রত হবে আমাদের আত্মসম্মান?”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।