||__এই ভুবনে কেউ কারো আপন না । সবাই নিজের সত্বা টিকিয়ে রাখতে আপন সার্থের পিছনে হন্য হয়ে ঘুরে । পর ভেবে চললে কষ্ট পাবার ভয় ও থাকে না__|| উচ্চশিক্ষা জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চান? কোথায় শুরু করবেন? কী কী লাগবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার উপায় কী? কোর্স ফি এবং থাকা খাওয়ার জন্য কত অর্থের প্রয়োজন? এমন অনেক প্রশ্নেই হয়তো আপনার মনে হতে পারে । আমি কিছু তুলে উত্তর তুলে ধরার চেষ্টা করছি । জার্মান ভাষা জার্মানিতে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে হলে সরাসরি কোর্সের প্রয়োজনে না হলেও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার জন্য জার্মান ভাষা শেখা অত্যন্ত জরুরি৷ ইদানিং বেশ কিছু কোর্সে ইংরাজি ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে বটে, তবে বাকি সব কোর্সের জন্য নির্দিষ্ট পর্যায়ের জার্মান জ্ঞান থাকা জরুরি৷ বাংলাদেশ থেকে অন্য কোন দেশে যেতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন ভিসার৷ পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে আসতে হলেও ভিসার প্রয়োজন৷ তবে কোন ধরণের ভিসা পাওয়া সবচেয়ে সহজ? ভিসার ক্ষেত্রে সবার আগে যে প্রশ্ন আসবে তা হল আপনি কোন দেশের৷ জার্মানি বা ইউরোপে প্রবেশ করতে আপনার ভিসার আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা৷ এর পাশাপাশি আরেকটি প্রশ্ন হল জার্মানিতে আপনি কেন আসবেন, কী করবেন এখানে৷ অ্যামেরিকাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কিছু দেশের মানুষ যদি জার্মানিতে আসতে চায় তাহলে ভিসার প্রয়োজন হয় না৷ তবে দীর্ঘসময় থাকতে হলে যে কারো ভিসার প্রয়োজন৷ সেটা কাজ, পড়াশোনা বা স্থায়ীভাবে থাকা হোক না কেন৷ দু ধরণের ভিসা দিয়ে থাকে জার্মান দূতাবাস৷ শেঙেন ভিসা এবং ন্যাশনাল ভিসা৷ শেঙেন ভিসা সাধারণত দেওয়া হয় অল্প সময়ে ইউরোপে থাকার জন্য৷ সেটা ইউরোপের যে কোন দেশ হতে পারে৷ প্রযুক্তিগত বিষয়গুলিতে জার্মানি আজও অনেক এগিয়ে তবে তার মেয়াদ কখনোই তিন মাসের বেশি হয় না৷ অর্থাৎ আপনি যদি ভিসার মেয়াদ ইউরোপে এসে বাড়াতে না পারেন তাহলে তিন মাসের মধ্যে আপনাকে ইউরোপ ত্যাগ করতে হবে৷ নয়তো আপনাকে অবৈধ অভিবাসী বলে ধরে নেওয়া হবে৷ যে কারণে শেঙেন ভিসা নিয়ে পড়াশোনা করতে আসা খুব একটা যৌক্তিক হবে না৷ শেঙেন ভিসা সাধারণত তাদের দেওয়া হয় যারা এক মাস বা ছয় সপ্তাহের বিভিন্ন কোর্সে জার্মানিতে আসেন৷ কোন কোন সময় সেই কোর্সের মেয়াদ দুই মাসও হতে পারে৷ কিন্তু কোন অবস্থাতেই কোর্স বা ট্রেনিং তিন মাসের বেশি হবে না৷ তিন মাসের বেশি হলে শেঙেন ভিসা নয়, আবেদন করতে হবে ন্যাশনাল ভিসার জন্য৷ ন্যাশনাল ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব৷ এই ভিসার সাহায্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা সম্ভব৷ কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার্ড স্টুডেন্ট হলে ভিসা অফিস ভিসা বাড়াতে বাধ্য৷ আপনি যদি পড়াশোনার জন্য আসতে চান জার্মান দূতাবাস বলে দেবে কোন ধরণের ভিসা আপনার প্রয়োজন৷ তবে আপনার পড়াশোনা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র আপনাকে দেখাতে হবে৷ আপনি যদি পিএইচডি করতে চান সেক্ষেত্রেও আপনাকে ন্যাশনাল ভিসা নিতে হবে৷ শেঙেন ভিসা আপনাকে সাহায্য করবে না৷ তবে ভিসার জন্য আবেদন করার আগে অনুগ্রহ রে জার্মান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ নির্দিষ্ট করে শুধুমাত্র দূতাবাসই বলতে পারবে কোন ধরণের কাগজপত্র দেখাতে হবে৷ ভিসা ফর্ম পূরণেও দূতাবাস সাহায্য করবে৷জার্মানির বন শহরের ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য তৃতীয় বিশ্বের দেশের বাসিন্দাদের অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন৷ তবে যে সব কাগজ পত্র অবশ্যই দূতাবাসে দেখাতে হবে তা হল: - জার্মানির কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন তার প্রমাণ - হেল্থ ইন্সুরেন্স পলিসির কপি৷ এই ইন্সুরেন্স হতে হবে জার্মানির - নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট, মার্কশিটসহ - আপনি জার্মান ভাষা জানেন তার প্রমাণ৷ এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন, শুধু গ্যোয়েটে ইন্সটিটিউ এবং মাক্স মুলার ভবনের সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য হবে৷ - যদি বৃত্তি না পেয়ে থাকেন কীভাবে খরচ বহন করবেন তা বিস্তারিত দেখাতে হবে৷ দূতাবাস অনেক ধরণের কাগজ পত্রের দাবি করতে পারে৷ তার প্রতিটিই আপনাকে দেখাতে হবে৷ আপনি যদি দু'বছর জার্মানিতে পড়াশোনা করেন তাহলে – পুরো দুই বছরের খরচ একসঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন তা দেখতে চাইতে পারে দূতাবাস৷ সেই অর্থের পরিমাণ হতে পারে কুড়ি লক্ষ টাকা বা তারও বেশি৷ তবে ভিসা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল বৃত্তি পাওয়া৷ আপনি যদি বৃত্তি পান তাহলে অনেক কাগজপত্রই আপনাকে হয়ত দেখাতে হবে না৷ এমনকি দূতাবাসে আপনার ইন্টারভিউও অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে৷ তাই চেষ্টা করুন বৃত্তিসহ জার্মানিতে আসতে৷ আরেক ধরণের ভিসা দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের তাহল ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স ভিসা৷ তবে এই ভিসা নেওয়ার আগে জার্মানির যে কোন ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপনাকে ভর্তি হতে হবে৷ এই ভিসার মেয়াদ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সের মোয়াদের সমতুল্য হবে৷ যেমন - আপনার কোর্স দুই মাসের৷ ১লা আগষ্ট থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর৷ আপনার ভিসার সময়সীমা হবে ২৮শে জুলাই থেকে ২রা অক্টোবর৷ জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য যথাযথ থাকার জায়গা জার্মানিতে ছাত্রাবাসগুলোতে দেখা মেলে নানা দেশের ছাত্র ছাত্রীদের যেখানে কোন ধরণের সমস্যা ছাড়া, নির্বিঘ্নে একটু পড়াশোনা করা যাবে, আর তা হতে হবে খুব অল্প খরচের মধ্যে৷ জার্মানিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পছন্দের জায়গা হল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মিটারিগুলো৷ জার্মানির প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজস্ব ডর্ম বা হল রয়েছে৷ সেখানে রুমের ভাড়া খুবই কম৷ একেকটি ছাত্র বা ছাত্রীকে একটি রুম দেওয়া হয়৷ করো সঙ্গে রুম শেয়ার করতে হয় না৷ তবে টয়লেট বা বাথরুম এবং রান্নাঘর শেয়ার করতে হয়৷ হ্যাঁ, নিজের রান্না নিজেকেই করে খেতে হবে তাই জার্মানিতে আসার আগে বেশ ভাল করে রান্না শিখে আসা জরুরি৷ আর ছেলেদের বা মেয়েদের হল বলে কিছু নেই৷ প্রতিটি হলে ছেলে-মেয়েরা একসঙ্গেই থাকে৷ তবে স্টুডেন্ট ডর্মে থাকা যে কোন বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীর জন্য সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক৷ কোন ধরণের সমস্যা হলে যে কারো কাছ থেকেই সাহায্য পাওয়া যায়৷ আর পড়াশোনার বিষয়ে কোন কিছু না বুঝলে বা একটি ক্লাস মিস করলে অন্যান্য সহপাঠীর কাছে থেকে তা সহজেই জানা যায়, যদি সে থাকে একই গণ্ডির মধ্যে৷ নানা দেশের খাবার দাবারের অভিজ্ঞতাও হয় এখানে এসে । ডর্ম ছাড়া আরেক ভাবে বসবাস করার সুযোগ রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের৷ একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী একসঙ্গে থাকতে পারে৷ তাকে বলা হয় ভোনগেমাইনশাফ্ট সংক্ষেপে ভেগে৷ এখানে রুম ভাড়া ছাড়াও, বিদ্যুৎ এবং পানির খরচ বহন করতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের৷ কোন কোন সময় তা হতে পারে বেশ ব্যয়বহুল৷ ইয়েমেনের ছাত্র আব্দুল রহমান৷ জার্মানিতে প্রযুক্তি বিষয় নিয়ে সে পড়াশোনা করছে৷ ছাত্র হিসেবে থাকার সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে সে বলল, ‘‘আমি প্রথমে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতাম৷ আমার বাড়িওয়ালাও একই বাড়িতে থাকতো৷ আমার সমস্যা ছিল আমি পুরো বাড়িতে একা থাকতাম৷ এরপর আমি যোগাযোগ করি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সার্ভিস সেন্টারে৷ সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে একটি রুমের জন্য আবেদন করি৷ আমাকে প্রায় তিন মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল কারণ কোন রুমই ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছিল না৷ এরপর যখন আমি হলের রুমে উঠে যাই তখন আমার অনেক সুবিধা হয়৷ নিঃসঙ্গতার হাত থেকে আমি মুক্তি পাই৷ চাইলেই পাশের রুমে চলে যেতাম গল্প করার জন্য৷ এছাড়া রান্নাঘরে রান্নার পাশাপাশি সারাক্ষণই চলতো আড্ডা৷ আর হলের রুমে ফার্নিচার ছিল৷ আমাকে কিছুই কিনতে হয়নি৷ বিছানা, টেবিল, চেয়ার, বুক শেল্ফ, রান্নাঘরে ফ্রিজ, কাপড় ধোয়ার জন্য ওয়াশিংমেশিন৷ হলে থাকার পর আমার খরচ প্রায় অর্ধেক কমে গিয়েছিল৷ আমাকে প্লেট-গ্লাস পর্যন্ত কিনতে হয়নি৷ এছাড়া হলে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়৷ এর জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে একটি পয়সাও নেওয়া হয় না৷'' কথা ঠিক৷ যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে থাকলে অনেক ধরণের খরচ বেঁচে যাবে৷ আপনি যদি কয়েকজন বন্ধু বান্ধব মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতে চান তাহলে অনেক কিছুই হয়তো আপনাকে কিনে নিতে হবে৷ যেমন ধরা যাক – প্লেট, বাটি, চামচ, শোবার বিছানা, টেবিল, চেয়ার, বুক শেল্ফ এবং কাপড় রাখার জন্য ওয়াড্রোব বা আলমারি৷ এই খরচগুলো খুব সহজেই বাঁচানো সম্ভব যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে থাকা যায়৷ আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে থাকতে চান তাহলে জার্মানিতে আসার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে হবে অন্তত তিন মাস আগে৷ তা নাহলে আপনার জন্য হয়তো কোন রুম ফাঁকা থাকবে না৷ যেহেতু ডর্মের ভাড়া যে কোন ফ্ল্যাট বাড়ির চেয়ে অনেক কম তাই – ডর্মগুলোই হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম পছন্দ৷ আর ডর্মগুলো সবসময়ই হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কাছে তাই অনেক সময় যাতায়াত খরচও বাঁচানো সম্ভব৷ ডর্মে থাকার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা৷ ক্লাসের অনেককেই আপনি পেতে পারেন আপনার ডর্মে৷ যে বিষয়টি বোঝেননি তা ডর্মে বসেই সহপাঠীর কাছ থেকে বুঝে নিতে পারেন বা বুঝিয়ে দিতে পারেন৷ আর ডর্মে থাকার মধ্যে আনন্দও অনেক বেশি কারণ প্রতি সেমিস্টারে ডর্ম কর্তৃপক্ষ আয়োজন করে বিশাল পার্টির৷ নতুন ছাত্র ছাত্রীদের স্বাগত জানানো হয় এই পার্টির মাধ্যমে আর যেসব ছাত্র-ছাত্রী চলে যাচ্ছে তাদের জানানো হয় বিদায়৷ বেশ কয়েকটি রুম তখন ফাঁকা হয়ে যায়৷ জায়গা করে দেওয়া হয় নতুন অতিথিদের জন্য৷ জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম কাজের উপায় - জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ-সুবিধা কতটুকু? চাইলেই কি কাজ পাওয়া সম্ভব? অথবা সেই পার্ট টাইম কাজ থেকে কি পড়াশোনার পুরো খরচটি উঠে আসবে ? জার্মানিতে কেউ যদি কাজ করে পড়াশোনা করতে চায় তাহলে প্রতিমাসে তাকে অন্তত এক হাজার ইউরো উপার্জন করতে হবে৷ এই খরচের মধ্যে ইউনিভার্সিটির ডর্মে থাকা, খাওয়া এবং টুক-টাক হাতখরচ পুষিয়ে নেওয়া যায়৷ তবে সবচেয়ে কঠিন হল কাজ খুঁজে পাওয়া৷ তার চেয়েও কঠিন হল ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ পাওয়া৷ তবে জার্মানির প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট সার্ভিস সেন্টার রয়েছে৷ সেখানে কোথায় কাজ আছে, বেতন কত হবে তা নিয়ে নানা ধরণের তথ্য দেওয়া থাকে৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরাই বেশি ভিড় করে এখানে৷ তবে বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ করা নিষিদ্ধ, কারণ তাদের খরচ জার্মান সরকার বা অন্য কোনো সংগঠন বহন করছে বৃত্তি দিয়ে৷ কড়া নিয়মের বেড়াজাল স্টুডেন্ট ভিসার আওতায় কাজের সুবিধা থাকলেও তা ভীষণভাবে সীমাবদ্ধ৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা বছরে নব্বই দিনের বেশি কাজের অনুমতি পাবে না৷ ভিসাতেই তার স্পষ্ট উল্লেখ থাকে৷ বছরে নব্বই দিন অর্থাৎ সপ্তাহে দুইদিন, ৮ ঘন্টা অথবা বছরে ১৮০ দিন অর্ধেক দিন, অর্থাৎ সপ্তাহে ১০ ঘন্টা৷ অর্ধেক দিন বলতে দিনে পাঁচ ঘন্টা কাজ করাকে বোঝাচ্ছে৷ পুরো দিনে কাজ করার অর্থ হল দিনে আট ঘন্টা৷ এত অল্প সময়ের জন্য পছন্দমত কাজ পাওয়া কঠিন৷ এছাড়া সপ্তাহে মাত্র দুই দিন অর্থাৎ মাসে মাত্র আট দিন কাজ করে মাসে আটশো ইউরো উপার্জন করা আরো কঠিন৷ তাই বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকে পড়ে বিভিন্ন রেস্তোঁরার কাজের দিকে৷ সেখানে সপ্তাহে ১০ থেকে ১৬ ঘন্টা সহজেই কাজ পাওয়া যায়৷ যে কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি এর চেয়ে বেশি কাজ করতে চায় তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে৷ ভাষার সমস্যা তবে কাজ পাওয়ায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে ভাষাজ্ঞান না থাকা৷ জার্মানিতে যে কোন কাজের জন্য জার্মান ভাষা জানা জরুরি৷ ভাষাটি জানা না থাকলে কোন ধরণের কাজই পাওয়া সম্ভব হবে না৷ আর জার্মানরা সহজে ইংরেজি বলতে চায় না৷ যে কারণে পথে-ঘাটে, কর্মস্থলে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম জার্মান ভাষা৷ যে কোন কাজের জন্য সাক্ষাৎকারটিও হবে জার্মান ভাষায়৷ জার্মান ভাষায় দক্ষ হওয়া একারণেই অনেক বেশি প্রয়োজন৷ ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ পাওয়া কঠিন । চেক প্রজতন্ত্রের ছাত্র টোমাস৷ পড়াশোনার পাশাপাশি সে কাজ করে ইউনিভার্সিটি ক্যাফেটেরিয়ায়৷ সপ্তাহে মাত্র ১০ ঘন্টা৷ এদিয়েই সে তার খরচ চালায়৷ টোমাসের উপার্জন মাসে ৬৪৩ ইউরো এবং তা যথেষ্ট নয়৷ টোমাস বললো, ‘‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই ক্যাফেটেরিয়াতে কাজ পেয়ে যাই৷ পার্ট-টাইম জব বা মিনি-জব বলা যেতে পারে৷ সপ্তাহে দশ ঘন্টা৷ এই কাজটি আমি আনন্দের সঙ্গে করছি কারণ কাজের জন্য আমাকে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হচ্ছে না৷ কাজ থেকেই আমি সরাসরি ক্লাসে যেতে পারি৷ আমার কোন ক্লাস মিস হচ্ছে না৷'' তবে যে কোন কাজের আগে যা দেখে নিতে বল হয় তা হলো, এই বিশেষ কাজ করার অনুমতি আপনার আছে কি না৷ অনুমতি না থাকার পরও যদি কাজটি আপনি নেন তাহলে ভিসা অফিস বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আপনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারেন৷ টোমাসের জন্য কাজ পাওয়া এবং করে যাওয়া সহজ হয়েছে কারণ সে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশের নাগরিক৷ কাজের জন্য কোন ধরণের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি টোমাসের৷ তবে তৃতীয় বিশ্বের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীনভাবে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্স কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয় না৷ তবে যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে সবসময়ই রিসার্চ এ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে লোক খোঁজা হয়৷ যে কোন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য তা সবচেয়ে উপযুক্ত কাজ৷ প্রথমত যে কোন সময়, যে কোন দিন এসে তারা কাজ করতে পারে, এ ধরণের কাজের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতির প্রয়োজন হয় না এবং ক্যাম্পাসেই গবেষণাগার থাকায় ক্লাস থেকে খুব বেশি দূরেও যাওয়ার প্রয়োজন হয় না ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।