আমি খুবই সাধারন একজন মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করে পাড়ি জমিয়েছি বিদেশে জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে। আসলেই কি জ্ঞান বাড়ছে, নিজেকেই প্রশ্ন করি মাঝে মাঝে !! ২০০৪-০৫ সালের কথা। হলে থাকি। আমার হল থেকে আপন মামাতো ভাই এর বাসা কাছেই, আজিমপুর কলোনীতে।
আন্যান্য কাছের আত্নীয়রা দূরে (মীরপুর-১৪, সাভার ব্যাংক কলোনী, উত্তরা) থাকায় এই মামাতো ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ বেড়ে গেল আনেকগুন। মামাতো ভাই আমার চেয়ে ৪/৫ বছর বড় হলেও আমরা বন্ধুর মত ছিলাম। এমন কোন সপ্তাহ ছিল না যে আমি ২/৩ দিন তার বাসায় না যেতাম, মাঝে মাঝে তার সাথে থাকতামও।
আমার মামাতো ভাইয়ের স্ত্রী দেখতে আন্য মেয়েদের চেয়ে বেশ আকর্ষনীয় ও সুন্দর ছিল। তাদের দুই সন্তান, বড়টার বয়স ৩ ছোটটা একবোরে কোলের।
তখনি ঘটনার শুরু।
আমার ভাইয়া একদিন রাতে আমাকে কল দিয়ে বলল, কাল তোকে একটা কাজ দিন, খুব বুদ্ধির সাথে করে দিতে হবে। খুব সিরিয়াস একটা ব্যাপার। " আমি বললাম কি কাজ? বলল, কাল ফজরের নামাজ পরেই আমি তোর হলের গেটে থাকব। আমি সম্মতি দিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে যা শুনলাম তাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। ভাবি নাকি গত ২/৩ মাস যাবৎ কোন এক লোকের সাথে মোবাইলে কথা বলে প্রেমিক প্রেমিকার ভাষায় (কাজের বুয়া ও দারোয়ানের বক্তব্য)। সেদিন নাকি ভাইয়ার আত্নীয়ের সাথে বসুন্ধরা সিটিতে দেখা হয়ে যায় ভাবির। তখন নাকি একটা ছেলে ভাবির সাথে ছিল। এখন আমার কাজ ভাবি আসলেই পরকীয়া করছে কিনা বের করা।
ঘটনা সত্যতা বের হল। জানাল, তাকে বিয়ে করবে। শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত হয়েছে। ভাইয়া যেই টাকা কামাই করে তাতে তার হয় না, সে বিকল্প হিসেবে তার নিজের ভবিষ্যৎ নিজে দেখবে, ধনী ব্যবসায়ী নাকি তার জন্য প্রাগলপ্রায়। আমি বললাম, বাচ্চা দুটির কি হবে? বলল, তার বর্তমান প্রেমিক বাচ্চাগুলোকে মানবে না।
ভাবিকে তার বাবা-মা, আমি, আরো আনেক বুঝিয়েছি, কিন্তু সামান্য কাজও হয় নি।
ভাবি পালিয়ে গেল বাচ্চাগুলোর ভবিষ্যৎ আন্ধকার করে দিয়ে। ভাইয়া আবার বিয়ে করল। একটি বাচ্চাও হল। ভাইয়ার নতুন স্ত্রী সব দিক ভাল, খুবই ভাল।
সমস্যা সে তার ঘরের নিজের বাচ্চাকে নিয়েই ব্যস্ত। ভাইয়ার আগের ঘরের বাচ্চাদের সে আত্যাচার/নির্যাতন করত না কখনোই তবে খুব একটা পছন্দও করত না (এটাই স্বাভাবিক। ) শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হল বাচ্চা দুটিকে এতিম খানায় দিয়ে দেয়া হবে।
দিয়ে দেয়া হল। ২০১১ সালে দেশে এসে শুনি ভাইয়া এতিম খানায় থাকা বাচ্চা দুটিকে কোন টাকা দিতে পারে না কারণ মাস শেষে বেতনের ২৪৩০০ টাকা বর্তমান ভাবির কাছে না দিলে মারাত্নক আবস্থায় হয় ঘরে।
এটা দিয়েই নাকি সংসার চালাতে কস্ট হয়। এদিকে প্রথম ভাবির প্রেমিক দ্বিতীয় আরেক মেয়েকে বিয়ে করায় তার আবস্থাও সুবিধার না।
আমি যে খুব দানশীল তা না, তবে আমি প্রায়ই বাচ্চা দুটোর জন্য টাকা পাঠাই যা এতিমখানা কর্তৃপক্ষ ছাড়া তাদের মা-বাবাও জানে না। কোনদিন জানবেও না। কি জীবন কি হল তাদের চিন্তা করে খুব কস্ট হয়।
পরকীয়ার বলি এই সন্তান দুটোর জন্য আমার বুক ভরা মায়া ও ভালবাসা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।