আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতর্কিত হামলা ও আত্মরক্ষা

টুইঙ্কেল টুইঙ্কেল লিটেল বাঁশঝাড় জীবনের চলার পথে রাস্তায় বা আড্ডায় অজানায় হঠাৎ আমরা মাঝে মাঝে হামলার শিকার হয়ে পড়ি। ঘটনা যে কোন জায়গায় ঘটতে পারে। হতে পারে সন্ত্রাসী হামলা, ছিনতাইকারীর হামলা বা কোন ধরণের অপরাধ প্রবণতামূলক বা নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য প্রণোদিত হামলা। এ ধরণের বিভিন্ন ছোটখাট হামলার সম্মুখীন আমরা ইতোমধ্যে কেউ কেউ হয়ত হয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কি তা বুঝতে না পেরে অনেকে ঘাবড়ে যাই।

কখনো কোন ধরনের অতর্কিত হামলার মুখোমুখি হলে কি করবেন তার কিছু বিষয়ের উপর দৃষ্টিপাত করে আপনার জন্য কিছু সাধারণ আত্মরক্ষামূলক টিপস এখানে আলোচনা করা হল। এ ধরনের যে কোন পরিস্থিতিতে অবশ্যই মাথা ঠাণ্ডা রাখবেন এবং পরিস্থিতি বুঝে নিম্ন বর্ণিত কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করবেন। আপনি ধরাশায়ী এবং হামলাকারী দণ্ডায়মান – কি করবেন এক্ষেত্রে? উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেন? কক্ষনো না। তাহলে হামলাকারী পুনরায় আপনাকে হামলা করার সুযোগ পাবে। আপনি উঠে বসতে বসতেই আপনি আবার হামলার মুখোমুখি হবেন।

এক্ষেত্রে প্রথম করণীয় হচ্ছে গড়িয়ে যাওয়া। অন্তত একবার এবং দুবারের বেশি নয়। সম্ভব হলে আপনার ডানদিকে বা ঘড়ির কাঁটার দিকে। গড়িয়ে গিয়ে হামলাকারীর পায়ে আপনার পা দিয়ে আঘাত করুন এবং উঠে পড়ুন। পায়ে আঘাত করার কিছু কায়দা কানুনও পরে জানানো হবে।

আপনি এবং হামলাকারী উভয়ে ধরাশায়ী – আবারও উঠে পড়ার কথা ভাবলে ভুল করছেন। মাটিতে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই পাল্টা আক্রমণ করুন। মনে রাখবেন পাল্টা আক্রমণের চাইতে ভাল আত্মরক্ষা দ্বিতীয়টি নেই। এক হাতে (মনে করুন হামলাকারীর ডানহাত) কলার চেপে ধরলে – বাম পাটা সামান্য এগিয়ে নিয়ে যান। আপনার ডানহাত দিয়ে আক্রমণকারীর কব্জির নিচে শক্ত করে চেপে ধরুন।

ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ১৮০ ডিগ্রী বা দুই সমকোণে ঘুরে যান। এবার আপনার আর হামলাকারীর দিক একই এবং আপনি হামলাকারীর সামনে দাঁড়িয়ে। তার হাত চেপে ধরেই আপনার বাম হাতের কনুই দিয়ে সজোরে মাথায় আঘাত করুন। তবে মনে রাখবেন কাজটি অবশ্যই দ্রুত গতিতে করতে হবে যাতে হামলাকারী নিজেক সামলে নেয়ার মত সময় বা সুযোগ না পায়। খুব দ্রুত নিজের ডান হাত দিয়ে হামলাকারীর ডান হাত চেপে ধরুন আপনার ডান পা কোণাকুণি এগিয়ে তার ডান পায়ের পিছনে নিয়ে গিয়ে পায়ের গোড়ালিতে সজোরে নিজের দিকে আঘাত করুন।

ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার পূর্বে মুখে অথবা বুকে সজোরে পাঞ্চ করুন। এই উপায় শুধুমাত্র মার্শাল আর্টিস্টদের জন্য। সাধারণ মানুষজন এই পদ্ধতি অবলম্বন না করে উপরেরটি করার পরামর্শ রইল। উভয় হাতে কলার চেপে ধরলে – তার দুহাতের ফাঁকে ক্রস করে নিজের দুহাত ঢুকিয়ে দিন। এবার ঝটিকা আক্রমণে তার দুহাত বাইরের দিকে ছুড়ে দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিন, প্রকারান্তে নিজের দুটি হাত দিয়ে বাইরের দিকে সজোরে ছুড়ে দিন।

পরমুহূর্তেই তার কলার চেপে ধরে নিচে নামিয়ে এনে যে কোন পায়ের হাঁটু দিয়ে পেটে আঘাত করুন। এক হাতে গলা টিপে ধরলে – এক হাতে কলার চেপে ধরার মত করে চাইলে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে পারেন। কিন্তু আপনি দক্ষ না হলে বিষয়টা যতটা সহজ মনে হচ্ছে বাস্তবে ততটা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। যে হাতে সে আপনাকে গলা টিপে ধরেছে আপনারও একই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী ও মধ্যমা দিয়ে তার টুটি (Adam Apple) চেপে ধরুন। যদিও এই পাল্টা আক্রমণ করার জন্য আপনি অনেক সময় পাবেন তবুও কাজটি দ্রুত করার চেষ্টা করবেন।

খুব শক্তিশালী কেউ হলেও আপনাকে গলা চেপে ধরে মেরে ফেলতে তার অন্তত ১৫ সেকেন্ড সময় লাগবে যার প্রথম ৫ সেকেন্ড আপনি পুরোপুরি সুস্থ থাকবেন। আপনার কাজ শুরু করার জন্য এই ৫ সেকেন্ড অনেক বেশি সময়। আপনার পাল্টা আক্রমণে লোকটি সহসা মারা যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। এতটুকু নির্মম হতে না চাইলে ২-৩ সেকেন্ড পর বা আপানাকে ছেড়ে দিলে বা লোকটি কুপোকাত বলে মনে হলে ছেড়ে দিন। মনে রাখবেন এই আক্রমণ মারণ আক্রমণ।

এই আক্রমণ কতটুকু কার্যকর ও ভয়ঙ্কর দেখতে চাইলে আলতো করে নিজের টুটি একবার এক মুহূর্তের জন্য চেপে ধরে দেখুন। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে অবশ্যই আলতো করে ধরবেন, সজোরে নয়। মেয়েদের টুটি (Adam Apple) আছে কিনা আমি নিশ্চিত নই (এই বিষয়ে অ্যানাটমিস্ট বা চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যয়নরতদের কাছে প্রশ্ন রাখলাম)। হামলাকারী মেয়ে হলে প্রথম পন্থা অনুসরণ করতে পারেন। উভয় হাতে গলা টিপে ধরলে – টুটি চেপে ধরতে পারেন।

আপনার ডান হাত তার বাম হাতের নিচ দিয়ে এবং ডান হাতের উপরে ঠিক কব্জি বরাবর শক্ত করে চেপে ধরুন। আপনার কব্জিকে কেন্দ্র করে আপনার হাতটি উপরের দিকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরিয়ে দিন। মনে রাখবেন তার সে বাম হাতে আপনাকে ছেড়ে দিবে ও ডান হাতের জোর কমে যাবে কিন্তু আপনি তার ডান হাত ছাড়বেন না। এবার ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ১৮০ ডিগ্রী বা দুই সমকোণে ঘুরে যান। এবার আপনার আর হামলাকারীর দিক একই এবং আপনি হামলাকারীর সামনে দাঁড়িয়ে।

তার হাত চেপে ধরেই আপনার বাম হাতের কনুই দিয়ে সজোরে মাথায় আঘাত করুন। আপনার ডান হাত তার বাম হাতের নিচ দিয়ে এবং ডান হাতের উপরে ঠিক কব্জি বরাবর শক্ত করে চেপে ধরুন। আপনার কব্জি কেন্দ্র করে আপনার হাতটি উপরের দিকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরিয়ে দিন। মনে রাখবেন তার সে বাম হাতে আপনাকে ছেড়ে দিবে ও ডান হাতের জোর কমে যাবে কিন্তু আপনি তার ডান হাত ছাড়বেন না। খুব দ্রুত নিজের ডান হাত দিয়ে হামলাকারীর ডান হাত চেপে ধরুন আপনার ডান পা কোণাকুণি এগিয়ে তার ডান পায়ের পিছনে নিয়ে গিয়ে পায়ের গোড়ালিতে সজোরে নিজের দিকে আঘাত করুন।

ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার পূর্বে মুখে অথবা বুকে সজোরে পাঞ্চ করুন। উপরের পন্থাগুলো কঠিন মনে হলে বা হামলাকারীর তুলনায় আপনার গায়ের জোর নিতান্তই নগণ্য মনে করলে আরেকটি উপায় আছে। বিষয়টি এত সহজ যে হামলাকারী রীতিমত ঘাবড়ে যেতে পারে। আপনার দুহাতের তর্জনী ও মধ্যমা দিয়ে হামলাকারীর বৃদ্ধাঙ্গুলি যে দিকে বল প্রয়োগ করছে তার উল্টো দিকে বল প্রয়োগ করুন। যদি তার বৃদ্ধাঙ্গুলির নিচে নিজের আঙ্গুল ঢুকানোর মত সুযোগ করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপনার বৃদ্ধাঙ্গুলি, মধ্যমা ও তর্জনী দিয়ে শুধুমাত্র তার বৃদ্ধাঙ্গুলি ছাড়ানোর চেষ্টা করুন।

আমরা সাধারণত যা করি অর্থাৎ হাত ছাড়ানোর চেষ্টা কখনোই করবেন না। মনে রাখবেন হামলাকারী আপনার চাইতে বেশি শক্তিশালী হলে এই চেষ্টা শুধু বিফলেই যাবে না আপনি আপনাকে বাঁচানোর মুল্যবান সময়ও হারাবেন। বিশেষ করে প্রথম দিকের সময়গুলো যখন আপনি সহজেই পাল্টা আক্রমণ করতে পারবেন। আপনাদের পছন্দ হওয়া সাপেক্ষে চলবে.। .।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।