ওরে ভয় নাই আর, দুলিয়া উঠিছে হিমালয়-চাপা প্রাচী! গৌরীশিখরে তুহিন ভেদিয়া জাগিছে সব্যসাচী! ১০-১২ বছর আগেও ঢাকা কলেজ ছিল এক স্বপ্নের নাম । ছাত্রদের পছন্দের প্রথম কলেজ । সেই গৌরবের স্থানটা এখন কোথায় যেন লুকিয়ে গেছে ।
তবু এখনো হারিয়ে যায়নি বিস্মৃতির আড়ালে ।
সেই ঢাকা কলেজ , এই ঢাকা কলেজ ।
গত বছর থেকে এস,এম,এস এর মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি শুরু হয়েছে । শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি
করতে বলা হয়েছে । র্যাঙ্কিং এ গোল্ডেন পাওয়া প্রথম ৩০০০-৩৫০০ ছাত্র বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে পারবে বলে জানা গেছে ।
ভর্তির প্রথম দিনে ডাকা হয়েছিল প্রথম ৬০০ জন ছাত্রকে । যদিও প্রথম দিনে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৯৩ জন ।
প্রথম দিন থেকেই ক্যাম্পাসে আসা ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখা গেছে ছাত্রলীগের কর্মীদের । র্যাঙ্কিংয়ে ৬০০০-৭০০০ ক্রমে আসা ছাত্রদের
ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নেওয়ার ধান্দায় থাকা এই কর্মীরা কাজ করছেন মূলত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান দুইটি গ্রুপঃ সভাপতি গ্রুপ-পল্লব গ্রুপ ও সেক্রেটারী গ্রুপ-সুইম গ্রুপের হয়ে । নানা কথায় ভুলিয়ে ভালিয়ে
ভর্তি হতে আসা র্যাঙ্কের পেছনের দিকের ছাত্রদের অভিভাবকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে । মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার । চলছে লাখ টাকার বাণিজ্য ।
যদিও তাঁরা ভর্তি করাতে পারবে কিনা
তাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে । আর র্যাঙ্কিং এর সামনের দিকের ছেলেদের বাদ দিয়ে পেছনের দিকের এই ছাত্রগুলো কলেজে ভর্তি হলে কলেজের ফলাফলের কতটা বিপর্যয় হচ্ছে সেটাও বড় প্রশ্ন ।
অধ্যক্ষ আয়েশা বেগমের কাছে ছাত্রলীগের নেতারা নিজেদের জন্য ১০০ ছাত্রের সিট দাবি করে গতকাল । যা প্রত্যাখান করায় বিকেলে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ানো হয় উত্তরা ব্যাংকের সামনে গোলাগোলির মহড়া করে । মেধাবী ছাত্ররা এরকম ঘটনার পর ঢাকা কলেজে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে সন্দিহান ও আশঙ্কিত হয়ে পড়বে সেটা বলাই বাহুল্য ।
এছাড়া পল্লব গ্রুপ ও সুইম গ্রুপের মধ্যে ভর্তি করানো নিয়ে রয়েছে রেশারেশি ।
খবর নিয়ে জানা গেছে ঢাকা কলেজের দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব ও ঝগড়া বিরাজ করছে । এর মধ্যে আছে কলেজের রাস্তা ও বিভিন্ন কক্ষ সংস্কার , গ্যালারি সংস্কার , বিভিন্ন ছাত্রাবাসের ডাইনিং ও বাথরুম সংস্কারের কাজের টাকা । এ নিয়ে গত ১২ জুন হলগুলোতে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয় । তাছাড়া এরও কিছুদিন আগে চন্দ্রিমা মার্কেটের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে কলেজের নতুন নির্মিত মেইন গেইটের ব্যাপক ক্ষতি হয় ।
অনার্স ভর্তিতেও প্রশ্ন আউট করা ও নেতাদের ইচ্ছেমতো ভর্তি করানোর অভিযোগ আছে ।
সরকারের শেষ সময় হওয়ার ফলে ছাত্রলীগ নেতারা ভর্তি বাণিজ্য করার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । নেতাদের তালিকায় আছে পল্লব,সুইম,রোমেল,রনি,সাগর,জনি,লিংকন সহ আরো অনেকে । আতঙ্কিত সাধারণ ছাত্ররা ।
বাংলাদেশের সেরা শিক্ষকদের সমন্বয়ে দেশের অন্যতম প্রাচীন কলেজ ঢাকা কলেজের পড়ালেখার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ না থাকলেও ছাত্রলীগ ও সরকার অনুযায়ী ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিরাজ করা ছাত্র সংগঠনগুলোর সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও বাণিজ্য কলেজের ঐতিহ্যকে ক্ষুণ্ন করছে ব্যাপকভাবে ।
এ নিয়ে প্রতিবাদ করারও যেন কেউ নেই ।
বেঁচে থাকুক ভর্তি বাণিজ্য , বেঁচে থাকুক ছাত্রলীগ আর সরকার বদলালে ছাত্রদল,শিবির ।
ডুবন্ত টাইটানিক ঢাকা কলেজ । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।