Peace cannot be kept by force. It can only be achieved by understanding- Albert Einstein সেই কবে কলেজ লাইফ শেষ করেছি ১৩ বছর কত তারা তারি চলে গেল । হ্যা আমিও ঢাকা সিটি কলেজের প্রক্তন যার জন্য আজ জীবনে এত দুর এসেছি সেই ব্যক্ত্যির আজ মৃত্যু দিবস হ্যা হাফিজ স্যারের কথাই বলছি - কঠিন নিয়ম, শৃক্ষলতা আর অধ্যাবসায়ের কারনে যে কলেজ এখনো বাংলাদেশে সেরাদের তালিকায় সেই ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ: তাকে নিয়ে প্রথম আলোতে শ্রদ্ধাঞ্জলি লিখার লিংক Click This Link
ছবি :হাফিজ উদ্দিন আহমদ
ঢাকা সিটি কলেজের রূপকার: আজ ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর সব সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীর জন্য ভীষণ বেদনার দিন এটি। আন্তরিকতা, অধ্যবসায় ও যোগ্যতা দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে কতটা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব, মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদ এর প্রমাণ রেখেছেন।
ঢাকার সাভার উপজেলার নলাগড়িয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া এ শিক্ষাব্যক্তিত্ব ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্মানসহ এমকম ডিগ্রি লাভ করেন।
এরপর সাভার কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকেও তিনি কিছুদিন চাকরি করেন। কিন্তু তাঁর মন-মানসে জাগরূক ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রছাত্রী নিয়ে ভাবনা। তাই তিনি ১৯৭১ সালে ঢাকা সিটি কলেজে পূর্ণকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। অবশ্য আগে থেকেই এখানে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এরপর ১৯৭৭ সালে অল্প বয়সেই ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ঢাকা সিটি কলেজ ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে স্থান করে নিতে পারলেও কার্যত তখনো তা অপরিচিত ও অখ্যাত এক কলেজ।
তিনি যখন দায়িত্ব নেন, তখন সেখানে ছিল দোতলা একটা ছোট্ট আধা ভাঙা বাড়ি। তখন কলেজে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪০। কলেজ তহবিলে ছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা।
এ দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের এক মাসের বেতন দেওয়াও সম্ভব ছিল না। সে সময়ের কলেজ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও তৎকালীন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খানে আলম খানের উৎসাহে মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদ অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন। পরিবারবিরাগী মানুষটির সব চিন্তা ও চেষ্টার আধার ছিল এই ঢাকা সিটি কলেজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান পর্যায়ে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হলো ১৯৭৭ সালে। মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদ ১৯৭৯ সালেই কলেজে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করেন, যা ছিল তাঁর সাহসী পাঠদান কার্যক্রম।
ছাত্রসংখ্যা তেমন না থাকলে কী হবে, তখনো কলেজে ছাত্ররাজনীতি ছিল। ছাত্রছাত্রী ও তৎকালীন ছাত্রনেতাদের বুঝিয়ে তা বন্ধ করলেন। তিনি কীভাবে বলাকা সিনেমা হলে শিক্ষকদের পাঠিয়ে চ্যারিটি শোর টিকিট বিক্রি করে অর্থসংস্থান করেছেন, তা এখন শুনলে কে বিশ্বাস করবে?
১৯৮৪ সালের প্রথম দিকে কলেজে মোট শিক্ষক ছিলেন ২৫ জন। আর ২০০৯ সালে যখন তিনি মারা যান, তখন অনেক বিভাগেই শিক্ষকসংখ্যা ২৫-এর মতো। তিনি প্রায় ২০০ শিক্ষক, ১২ হাজার ছাত্রছাত্রী ও ৫০ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী রেখে গেলেন।
কলেজের জন্য জমিও কিনেছেন। ছয়তলা চারটি ভবন করেছেন। সরকার বা অন্য কারও কাছ থেকে একটি টাকাও নেননি। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ৮৩টি শ্রেণীকক্ষ, তিনটি সুপরিসর পাঠাগার, কম্পিউটার ও বিজ্ঞানের অনেক ল্যাবসহ প্রয়োজনীয় সব ভৌত সুযোগ-সুবিধা রেখে গেছেন তিনি। এই শিক্ষাবিদ উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে থেকে পাস ও অনার্স কোর্স, মাস্টার্স ডিগ্রি, প্রফেশনাল বিবিএ, এমবিএ ডিগ্রিসহ কত ধরনের কোর্স খুলেছেন এবং সফলতার সঙ্গে চালিয়েছেন, তা ভাবতেই অবাক লাগে।
তিনি পাঠদান, পরীক্ষাপদ্ধতিসহ সব ক্ষেত্রে নতুনত্ব এনে উন্নয়নের চিন্তা করেছেন। শিক্ষকমণ্ডলীর পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধি, আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতি নিয়েও ভাবতেন। সাধারণভাবে সকাল সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে কলেজে চলে আসতেন আর ফিরতেন রাত আটটা-নয়টায়। প্রশাসনিক প্রয়োজন ছাড়া তিনি বাইরে যেতেন না। কখনো ক্লাসে শিক্ষক যেতে দেরি হলে নিজেই ঢুকে পড়তেন ক্লাসে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দাপ্তরিক কাজ করতেন অবসর সময়ে বা বাসায়। তাঁর কক্ষে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা অবাধে যেতে পারত। কোন ছাত্রের কোন শিক্ষকের সহায়তা লাগবে, সে বিষয়েও তিনি খোঁজখবর নিতেন। তিনি হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন বিধায় অঙ্ক দেখানোর জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভিড় করত। হাজারো কাজের মধ্যেও ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজন পূরণে কখনোই বিরক্ত হতেন না।
২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি ৩৯ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি ভাবতেন, অবসরে কীভাবে সময় কাটাবেন; কিন্তু অবসরে আর যাওয়া হলো না। শেষ দিকে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। চিকিৎসক রাগ করতেন পরামর্শমতো বিশ্রাম না নেওয়ার জন্য। কিন্তু কর্মপাগল এই মানুষ বিশ্রাম নেবেন কীভাবে।
২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর অন্য দিনের মতো বাসায় গেলেন।
আমরা কি ভেবেছিলাম, তিনি তাঁর স্বপ্নের কলেজে আর ফিরে আসবেন না। ওই দিন রাতেই অসুস্থ বোধ করায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদ স্বজন-সহকর্মী সবাইকে কাঁদিয়ে ২৯ ডিসেম্বর চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। তিনি আমাদের মধ্যে না থাকলেও তাঁর অদম্য শ্রম ও সাধনা নিত্য অনুপ্রেরণা জোগাবে।
তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে এই মহান শিক্ষাব্রতীর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। --লিখেছেন মো. খালেকুজ্জামা
বিদ্র: সিটি কলেজের সবাই তাদের সৃতি , ঘটনা , প্যদানি মন্তব্যে দিতে পারেন যারা সিটি কলেজের নন তারাও আমন্ত্রিত।
আর সিটি কলেজের সবাই চাইলে ঢাকা সিটি কলেজের এই ফেইসবুক পেইজে জয়েন করতে পারেন https://www.facebook.com/citians ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।