আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাবা আমি মালিবাগে রয়েছি। তুমি কোথায়?

জানতে, জানাতে চাই। এটাই ছিলো বাবার সাথে শেষ কথা। তার পর হারিয়ে গেছে মেয়ে সাবিনা। বাবার সঙ্গে কথা বলার পরপরই ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে আত্মহনন করেন ২১ বছরের তরুণী সাবিনা আহসান। চিরদিনের জন্য নিভে যায় তার জীবন প্রদীপ।

তখনও কে জানত, কী মর্মন্তুদ ঘটনা ঘটেছে মালিবাগ রেললাইনে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রেললাইন থেকে প্রিয় মেয়ের লাশ উদ্ধার করেন বাবা আহসান উল্লাহ। সাবিনার হাতে তখনও বাবার মোবাইল নম্বর লেখা একটি সাদা কাগজ। মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগে রাস্তার পাশের মোবাইলের দোকান থেকে ফোন করে আহসানকে নিজের অবস্থান জানান সাবিনা। এরপর মেয়েকে খুঁজতে মালিবাগ ছুটে যান তিনি।

সাবিনার বাবা আহসানের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য সাবিনার স্বামী জাহাঙ্গীর ও তার মা দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছিল। বিভিন্ন সময় যৌতুক হিসেবে প্রায় আড়াই লাখ টাকা নিয়েছে জাহাঙ্গীর। সম্প্রতি দুই দফায় আরও এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করে। যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় ৪-৫ মাস ধরে সাবিনাকে ঘর থেকে বের হতেও দেওয়া হয়নি। এমনকি সাবিনাকে মা-বাবার সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না।

নির্যাতন ও মানসিক চাপ সইতে না পেরেই ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করে সে। আহসান বলেন, মালিবাগের রেললাইনের আশপাশের লোকজন বলেছে, সাবিনাকে এক ব্যক্তি ধাক্কা দিয়ে ট্রেনের নিচে ফেলে দেয়। আমাদের ধারণা, জাহাঙ্গীর সাবিনাকে রেললাইনে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এরপর সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়। তবে সাবিনার স্বামী জাহাঙ্গীর সমকালকে বলেন, সাবিনার সঙ্গে আমার কোনো মনোমালিন্য ছিল না।

আমরা সুখের সংসার করছিলাম। সাবিনা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার যমজ সন্তান হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে আমরা খুব উৎফুল্ল ছিলাম। সাবিনা তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করতে পারে।

আমি সৌদি আরব থাকার সময় সাবিনার বাবা তাকে আমাদের বাড়িতে বেশি দিন থাকতে দিতে চাইতেন না। আজ সকালে আমার কাছ থেকে ৫০ টাকা চায় সাবিনা। এরপর আমি বাথরুমে ঢুকে পড়ি। বাসার অন্য বাসিন্দারা ঘুমিয়ে পড়ে। কাউকে না বলে কখন সাবিনা বাসা থেকে বের হয়ে পড়ে তা আমরা টের পাইনি।

রেল পুলিশের এএসআই আজহারুল ইসলাম সমকালকে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জানা গেছে, ২০১০ সালে সাবিনার সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। স্বামীর সঙ্গে রাজধানীর ধলপুরের ৬০/৪১ নম্বর বাসায় থাকতেন সাবিনা। তার বাবা রাজউকের কর্মচারী।

সাবিনার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে। তিন বোনের মধ্যে তিনি মেজো। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.