একজন সাধারন বাংলাদেশীর ব্লগ [ফটোগ্রাফির খুঁটিনাটি] ডিএসএলআর এর জন্য কোন লেন্স কিনবেন?
বিসমিল্লাহ্ বলে জীবনের প্রথম ডিএসএলআর কেনার সিদ্ধান্ত যখন নিয়েই ফেললেন তখন নেক্সট যে চিন্তা মাথায় আসে তা হল ক্যামেরার সাথে কোন লেন্স টা কিনবেন? ডিএসএলআর-এর সাথে ফ্রী আসা কিট লেন্স এই কি চলবে? নাকি আরও টাকা খরচ করে অন্য কোন লেন্স কিনে ফেলবেন? আর কিনলেও কোনটা, কোন ধরনের লেন্স কিনবেন; টেলিফটো নাকি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, ফাস্ট নাকি স্লো, প্রাইম নাকি জুম? এরকম হাজারটা প্রশ্ন আসবে মাথায়। তখন বেশীরভাগ মানুষ যা করে তা হল একটি জুম লেন্স কিনে ফেলে কিছু না বুঝেই! তাদের জন্যই এই গাইড, যারা কিনা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না কোন লেন্স টা কিনবেন।
লেন্স এর রকমফের
জুম লেন্সঃ
এটা হল এমন একটি লেন্স যেটা দিয়ে আপনি একটি রেঞ্জ এর ভেতর ফোকাল লেংথ পরিবর্তন করতে পারবেন। যেমন, বাজারে নিকনের সবচেয়ে কমন কিট লেন্স হল Nikon 18-55mm f/3.5-5.6। অর্থাৎ এটা দিয়ে আপনি ফোকাল লেংথ সর্বনিম্ন ১৮মিমি আর সর্বোচ্চ ৫৫মিমি করতে পারবেন।
এখন প্রশ্ন হল ১৮মিমি তে ছবি তুললে কেমন দেখাবে? তখন এটা হবে অনেকটা ওয়াইড আঙ্গেল লেন্স এর মত। ১৮মিমি তে যদি আপনি লন্ডন এর ব্রিজ টার ছবি তোলেন তাহলে এটা হবে এরকমঃ
আর ৫৫মিমি তে ছবি তুললে সেটা হবে টেলিফটো লেন্স, ছবিতা দেখতে হবে অনেকটা এরকমঃ
জুম লেন্স ব্যাবহারের উপকারিতা হল এটা দিয়ে আপনি কম্পোজিশন অথবা পার্সপেক্টিভ অনেক সহজেই চেঞ্জ করতে পারবেন। ধরুন কোন বাচ্চার ছবি তুলতে চান, কিন্তু সে খেলছে। জুম লেন্স থাকলে আপনি দূর থেকে জুম করেই কাঙ্ক্ষিত ছবিটি পেতে পারেন। আর সাংবাদিকদের জন্য তো জুম লেন্স ই একমাত্র ভরসা।
সাধারণত পয়েন্ট অ্যান্ড শুট কামেরাগুলোয় জুম লেন্স থাকে, তাই আমরা সবাই কমবেশি জুম ব্যবহার সম্পর্কে জানি যে এটা দিয়ে দুরের জিনিশ বড় করা যায়। এখন যে জিনিশটা নতুন জানলাম তা হল টেকনিক্যাল সংজ্ঞাঃ জুম হল এমন একটি লেন্স যেটার ফোকাল লেংথ পরিবর্তন করা যায়।
প্রাইম লেন্সঃ
এখন আসি প্রাইম লেন্স এ। প্রাইম লেন্স হল জুম এর বিপরীত, অর্থাৎ এটার ফোকাল লেংথ ফিক্সড, চেঞ্জ করা যাবে না। বুঝতেই পারছেন সহজ বাংলায় এটায় আপনি দুরের জিনিস বড় করতে পারবেন না।
কিন্তু মানুষ তবুও কেন প্রাইম লেন্স ইউজ করছে যেখানে জুম এর এত সুবিধা? কারন হল প্রাইম লেন্স এর দাম, ওজন এবং স্পীড। একটি কমদামী প্রাইম লেন্স সাধারণত একটি হাই-এন্ড জুম লেন্স এর সমমানের অথবা তার চেয়েও বেশি ভাল ইমেজ কোয়ালিটি দিতে সক্ষম! এছাড়াও প্রাইম লেন্সে সাধারণত বড় অ্যাপারচার থাকে জুম এর চেয়ে। অ্যাপারচার বড় হবার সুবিধা হল লেন্স এ বেশি লাইট ঢুকবে এবং কম আলতেও আপনি উজ্জ্বল ছবি পাবেন, এবং শ্যালো ডেপ্তহ অফ ফীল্ড তো পাবেনই বোকেহর জন্য। আর জুম লেন্স সাধারণত হয় বড় সাইজের আর ভারী, যেখানে প্রাইম লেন্স হয় অনেক হাল্কা আর আকারেও ছোট। তাই আপনার ডিএসএলআর এ প্রাইম লেন্স লাগিয়ে নিলে আর হাত ব্যাথা হবে না।
কিন্তু এতকিছু সম্ভব কিভাবে? কারণটা সহজ, জুম লেন্স এ যেহেতু ফোকাল লেংথ বড় করার একটা ব্যাপার থাকে ওটার ভেতর নানান কলকব্জা থাকে যা নড়াচড়া করে আপনার কাঙ্ক্ষিত ফোকাল লেংথ অর্জন করে। কিন্তু প্রাইম লেন্স এ এই ঝামেলা নেই এবং তাই জাস্ট একটা ফিক্সড লেন্স থাকে এটার ভেতর। আর তাই তো প্রাইম লেন্স এর দাম কম, ওজন কম, আকারেও ছোট কিন্তু কোয়ালিটি অনেক ভাল।
কিন্তু লেন্স এর নাম দেখে কিভাবে বুঝবেন কোনটি প্রাইম আর কোনটি জুম লেন্স? নিকন এর বহুল জনপ্রিয় একটি লেন্স হল Nikon 50mm f/1.8। এটা হল একটি প্রাইম লেন্স।
লক্ষ্য করুন, জুম লেন্সটার নাম ছিল Nikon 18-55mm f/3.5-5.6। জুম টার নামেই আছে ১৮-৫৫মিমি আর এটায় শুধু ৫০মিমি লেখা। অর্থাৎ এটার ফোকাল লেংথ ফিক্সড।
ছবির উপর ফোকাল লেংথ এর প্রভাব
উপরের ছবিটি লক্ষ্য করুন। ধরুন আপনার একটি ২৮-২০০মিমি জুম লেন্স আছে।
যদি ২৮মিমি তে ছবি তোলেন তাহলে পুরো দৃশ্যটাই ধরা দেবে ফ্রেমে। ২৮মিমি হল শর্ট ফোকাল লেংথ রেঞ্জ এ। অ্যাপ্রক্সিমেটলি ৩০মিমির নিচের ফোকাল লেংথ কে আমরা বলি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স।
যদি আর একটু জুম করেন, অর্থাৎ ২৮মিমি থেকে ৫০মিমি তে যান তাহলে ছবির এক অংশ বাদ যাবে, কার্যত আপনি দুরের জিনিসগুলো বড় করলেন।
এভাবে ফোকাল লেংথ বাড়াতে বাড়াতে যদি ২০০মিমি তে যান তাহলে ফ্রেমে শুধু দুরের বাড়িটাই দেখা যাবে, অর্থাৎ আপনি দুরের ছোট ছোট বারি গুলোই জুম করে বড় করলেন এক্ষেত্রে।
৫০মিমির উপরের ফোকাল লেংথ হলে তখন আমরা এটাকে বলি টেলিফটো লেন্স।
এবার চিন্তা করুন, আপনার যদি একটি ৫০মিমি প্রাইম লেন্স থাকে তাহলে ওটা দিয়ে তাকালেই আপনি ৫০মিমি এর বক্স টার ভিউ পাবেন। জুম ইন, জুম আউট কিছুই করতে পারবেন না।
আবার যদি একটা ২০০মিমি প্রাইম থাকে তাহলে আপনি ওটা দিয়ে তাকালে শুধু ২০০মিমি এর বক্স এর ভেতর যেটুকু আছে ওটাই দেখবেন। অর্থাৎ তখন আপনি সবকিছু বড় আকারে দেখবেন, কিন্তু কাছের কিছুর ছবি তুলতে পারবেন না।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ফটোগ্রাফাররা বন্য প্রানিদের ছবি কিন্তু এরকম লং ফোকাল লেংথ এর প্রাইম দিয়ে তোলে, জুম দিয়ে না! এগুলোকে টেলিফটো লেন্সও বলা হয়।
ওয়াইড আঙ্গেল লেন্স হল শর্ট ফোকাল লেংথ ওয়ালা লেন্স গুলো। যেমন ধরুন Nikon 10-24mm f/3.5-4.5। এটা কে কি লেন্স বলবেন? এটা যেহেতু ১০-২০মিমি অর্থাৎ ফোকাল লেংথ চেঞ্জ হয় তাই এটা একটি জুম লেন্স। তবে লক্ষ্য করুন এটার ফোকাল লেংথ কিন্তু খুবি শর্ট।
১০মিমি থেকে ২০মিমি মাত্র। অর্থাৎ এটার ফোকাল লেংথ এর রেঞ্জ কিন্তু ওয়াইড অ্যাঙ্গেল এর ভেতর পরে। তাই এটাকে বলব ওয়াইড অ্যাঙ্গেল জুম লেন্স।
লেন্স স্টেবিলাইজেসন
জুম লেন্স এর আসল সমস্যা হল জুম করলে আপনার হাতের হালকা কাঁপুনিও ছবিতে বড় ধরনের ব্লার ঘটাতে পারে। আর তাই আজকালকার জুম লেন্স গুলোয় অটো স্টেবিলাইজেসন অপশন থাকে।
Nikon এর ক্যামেরায় একে বলে VR(Vibration Reduction)। আর Canon এর ক্যামেরায় একে বলে IS(Image Stabilization)। নাম ভিন্ন হলেও, জিনিস একই। লেন্স এর ভেতরকার কলকব্জা নেড়েচেড়ে এটা আপনার হাতের কারনে যেটুকু শেক হয় ওটা কম্পেন্সেট করে। সোজা কথায় VR অথবা IS অন করে নিলে আপনার হাত নড়লেও শার্প ছবি পাওয়ার চান্স অনেকগুনে বেরে যাবে।
স্পীড (না, শুধু জলিল এর নয়, লেন্স এরও স্পীড আছে )
লেন্স এর স্পীড থাকে কিভাবে? ধরুন আপনার লেন্স এর অ্যাপারচার যদি ছোট হয় তাহলে বেশি আলো ঢুকতে পারবে না। অর্থাৎ, একটি সঠিকভাবে আলোকিত ছবি পেতে আপনার বেশিক্ষণ সাটার খুলে রাখতে হবে। আর অ্যাপারচার যদি বড় হয় তাহলে বুঝতেই পারছেন অনেক দ্রুত কম আলোতেও ছবি তুলতে পারবেন। এখন কথা হল ফাস্ট লেন্স কোনটা বুঝবেন কিভাবে? বুঝবেন, লেন্স এর fstop নাম্বার দেখে। আগের দুটো লেন্স দিয়েই উদাহরন দেই।
একটি লেন্স হল Nikon 18-55mm f/3.5-5.6 আরেকটি হল Nikon 50mm f/1.8। এখানে ১৮-৫৫মিমি লেন্স টার ওয়াইডেস্ট অ্যাপারচার হল f/3.5 আর ৫০মিমি লেন্স টার হল f/1.8। অর্থাৎ ৫০মিমি টায় অন্যটার চেয়ে বড় অ্যাপারচার হয়, অর্থাৎ বেশি লাইট ঢুকবে এবং তাই এটা ফাস্টার। তাই এক্সপোজার টাইম ও কম লাগবে এটায়।
ইভেন্ট ফটোগ্রাফাররা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খুব কম আলোয় কাজ করে আর তাই তাদের পছন্দ হল খুব ফাস্ট লেন্স।
কারন অনুষ্ঠানে মানুষজন সবসময় চলতে ফিরতে থাকে, আর তাদের মুভমেন্ট এর কারনে যাতে ছবি ব্লারড না আসে তাই সাটার স্পীড ১ সেকেন্ড এর ৫০ ভাগের মত দিতে হয়। আপনার লেন্স যদি ম্যাক্সিমাম অ্যাপারচার হয় f/3.5 তাহলে ছবি আসবে অন্ধকার কারন পর্যাপ্ত আলো ঢুকতে পারবে না লেন্স এ এত অল্প সময়ে। কিন্তু f/1.8 এ আবার এই অল্প সময়েই একটি উজ্জ্বল ছবি পাবেন।
আরেকটি কথা, খেয়াল করুন Nikon 18-55mm f/3.5-5.6 লেন্স এ ফোকাল লেংথ এর পাশাপাশি অ্যাপারচারও কিন্তু একটা রেঞ্জ হিসেবে দেওয়া। অর্থাৎ জুম করলে ম্যাক্সিমাম অ্যাপারচার ছোট হবে।
১৮মিমি তে ম্যাক্স অ্যাপারচার পাবেন f/3.5 আর ৫৫মিমি তে পাবেন আর ছোট f/5.6। তাই খেয়াল করে দেখবেন, আপনার পয়েন্ট অ্যান্ড শুট এও জুম করে ছবি তুলতে গেলে ছবি একটু অন্ধকার হয়ে যায়।
তবে কিছু জুম লেন্স আছে যেগুলোয় আবার জুম করলেও ম্যাক্স অ্যাপারচার চেঞ্জ হয়না। যেমন Nikon Nikkor AF-S 12-24mm f/4। এটার ম্যাক্সিমাম অ্যাপারচার f/4 আপনি ১২মিমি তেও পাবেন আবার ২৪মিমি তেও পাবেন।
তবে স্বভাবতই এগুলর দাম আকাশচুম্বী। থার্ড পার্টি লেন্স আছে ফিক্সড অ্যাপারচার এর যেমন Tamron SP AF 17-50mm F/2.8। এটায় আপনি ১৭মিমি থেকে ৫০মিমি ফোকাল লেংথ এ ছবি তুলতে পারবেন F/2.8 এই!
কিছু কমন লেন্স এর উদাহরন
Nikon AF-S DX NIKKOR 18-55mm f/3.5-5.6G VR
Nikon: ব্র্যান্ড এর নাম
AF-S: অটোফোকাস মোটর আছে। কমদামী ডিএসএলআর এও অটোফোকাস হবে।
DX: ফুল ফ্রেম লেন্স না।
FX লেন্স হল প্রফেশনাল ডিএসএলআর এর জন্য। আর আমাদের জন্য যারা সেমি প্রো ক্যামেরা ব্যবহার করি তাদের জন্য DX লেন্স।
NIKKOR: নিকন এর লেন্সগুলোর ব্র্যান্ড নাম হয় নিক্কর
18-55mm: ফোকাল লেংথ এর রেঞ্জ। এক্ষেত্রে ১৮-৫৫মিমি
f/3.5-5.6G: অ্যাপারচার এর রেঞ্জ। এক্ষেত্রে এফ/৩.৫-৫.৬।
‘G’ এর মানে হল এটায় অ্যাপারচার রিং নেই। অর্থাৎ অ্যাপারচার ক্যামেরা দিয়ে চেঞ্জ করতে হবে।
VR: Vibration Reduction। হাতের কাঁপুনির জন্য ক্যামেরা শেক করলেও যাতে স্পষ্ট ছবি আসে সেই ব্যাবস্থা
Nikon AF-S 18-105mm f/3.5-5.6G VR
দেখুন এটিও আরেকটি লেন্স তবে সব স্পেসিফিকেশন আগের লেন্স এর মতই। শুধু ফোকাল লেংথ তাই আলাদা।
এটার রেঞ্জ আরেকটু বেশি, ১৮-১০৫মিমি। অর্থাৎ এটা দিয়ে আরও বড় করা যাবে ছবি।
Nikon AF-S DX NIKKOR 18-200mm f/3.5-5.6G ED VR
দেখুন এটিও আরেকটি লেন্স তবে সব স্পেসিফিকেশন আগের লেন্স এর মতই। শুধু ফোকাল লেংথ এর রেঞ্জ আরও অনেক বেশি। ১৮-২০০মিমি।
অর্থাৎ এটা দিয়ে অনেক দুরের জিনিস এর ছবি তুলতে পারবেন আপনি। তাই এটা আকারেও বড়!
Nikon Nikkor AF 50mm f/1.8 D
Nikon: ব্র্যান্ড এর নাম
AF: অটোফোকাস মোটর নেই। শুধু ফোকাস মোটর ওয়ালা ডিএসএলআর এই অটোফোকাস হবে। AF-S লেন্স এ বিল্ট ইন ফোকাস মোটর থাকে যা AF লেন্স এ নেই। তাই এর দাম কম।
NIKKOR: নিকন এর লেন্সগুলোর ব্র্যান্ড নাম হয় নিক্কর
50mm: ফোকাল লেংথ। এক্ষেত্রে ৫০মিমি তেই ফিক্সড
f/1.8 D: ম্যাক্সিমাম অ্যাপারচার। এক্ষেত্রে এফ/১.৮। ‘D’ এর মানে হল এটায় অ্যাপারচার রিং আছে। অর্থাৎ অ্যাপারচার ক্যামেরা দিয়ে চেঞ্জ তো করা যাবেই, পাশাপাশি লেন্স এও একটা অ্যাপারচার রিং আছে যেটি ঘুরিয়েই অনায়াশে অ্যাপারচার চেঞ্জ করা যাবে।
খেয়াল করতে পারেন এটায় Vibration Reduction নেই। কারন এটা প্রাইম লেন্স বিধায় ম্যাক্স অ্যাপারচার এমনিতেই অনেক বড়। তাই এটা অনেক ফাস্ট ছবি তুলতে পারে আর ছবি ব্লার আসার চান্স অনেক কম। তাই VR এর দরকার নেই।
Nikon NIKKOR AF-S 50mm f/1.8G
উপরে বর্ণিত লেন্সটি আর এটি ৫০মিমি প্রাইম লেন্স।
কিছু পার্থক্য বাদে বাকি ফিচার একই। নিচে দেওয়া হল পার্থক্য গুলো।
AF-S: অটোফোকাস মোটর আছে। অর্থাৎ ফোকাস মোটর ছাড়া ডিএসএলআর এও অটোফোকাস হবে, যেমন ধরুন নিকন এর সবচেয়ে কম দামি ডি৩১০০ এও অটোফোকাস হবে। AF-S লেন্স এ বিল্ট ইন ফোকাস মোটর থাকে যা AF লেন্স এ নেই।
মোটর এর কারনে এর দামও বেশি।
f/1.8 G: ম্যাক্সিমাম অ্যাপারচার। এক্ষেত্রে এফ/১.৮। ‘G’ এর মানে হল এটায় অ্যাপারচার রিং নেই। অর্থাৎ অ্যাপারচার ক্যামেরা দিয়ে চেঞ্জ করতে হবে।
কি ধরনের ফটোগ্রাফি করবেন তার ওপর নির্ভর করে কি লেন্স
জেনেরাল ফটোগ্রাফিঃ অর্থাৎ এগুলো ডেইলি ইউজের জন্য সবসময় ব্যবহার উপযোগী, সব কাজের কাজী। আপনার কিট লেন্সটা আপগ্রেড করতে চাইলে এগুলো দেখতে পারেন। যেমনঃ
Nikkor AF-S DX 18-200mm f/3.5-5.6G ED VR II
Nikkor AF-S DX 35mm f/1.8G
Nikkor AF-S 50mm f/1.4G
Nikkor AF-S DX 17-55mm f/2.8G IF-ED।
ইভেন্ট ফটোগ্রাফি, লো লাইট ফটোগ্রাফি, পোরট্রেইটঃ ফাস্ট টেলিফোটো লেন্স। অর্থাৎ লং ফোকাল লেংথ থাকবে আর ম্যাক্স অ্যাপারচার থাকবে বড়।
যেমনঃ
Nikon Nikkor AF 50mm f/1.8 D
Nikon Nikkor AF 35mm f/1.8 G
Nikkor AF-S 85mm f/1.4G
Nikkor AF-S DX 17-55mm f/2.8G IF-ED
Tamron SP AF 17-50mm F/2.8।
অ্যাকসন, স্পোর্টস, ওয়াইল্ড লাইফঃ টেলিফটো জুম লেন্স। যেমনঃ
Nikkor AF-S DX VR 55-200mm f/4-5.6G IF-ED
Nikkor AF-S DX VR 55-300mm f/4.5-5.6G ED VR।
ল্যান্ডস্কেপ, আর্কিটেকচারাল ফটোগ্রাফিঃ ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স। যেমনঃ
Nikkor AF-S DX 10-24mm f/3.5-4.5G ED
Nikkor AF-S 14-24mm f/2.8G ED।
ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি (পোকা-মাকড়, ফুল, ক্লোজ আপ ফটোগ্রাফি): যেমনঃ
Nikkor AF-S DX Micro 40mm f/2.8G
Nikkor AF-S Micro 60mm f/2.8G ED
Nikkor AF-S VR Micro 105mm f/2.8G IF-ED।
উপসংহার
আমি চেয়েছি এই লেখাটি পড়ে যেন পাঠক যেকোনো লেন্স এর নাম দেখেই বুঝতে পারেন সেটা কোন ধরনের লেন্স। পাঠক কি ধরনের ছবি তুলতে চান তার ওপর ভিত্তি করে সে যেন নিজেই ঠিক করতে পারে কোন লেন্স টা কেনা উচিৎ। পাঠককে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলাই পোস্টটির লক্ষ্য। তাই এখানে কোন একটি স্পেসিফিক লেন্স কিনতে বলা হয়নি।
একটা আইডিয়া দেয়া হয়েছে মাত্র।
পাঠকদের প্রতি অনুরোধ, পুরো লেখাটি পড়ুন। সাবজেক্ট এর বিশালতার কারনে লেখাটি কিছুটা এলোমেলো মনে হচ্ছে আমার কাছে, পুরো পোস্টেই বিভিন্ন দরকারি তথ্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মনোযোগ দিয়ে পড়লে আশা করি কাজে আসবে।
আর শুধু নিকন এর লেন্স নিয়ে আলচনার কারন হল আমি নিজে নিকন ব্যবহার করি বিধায় নিকন এর ব্যাপারে আইডিয়া বেশি।
তাই এখানে শুধু নিকন এর ব্র্যান্ড নেইম ইউজ করেছি উদাহরন হিসেবে। ক্যানন এর লেন্স ও কিন্তু একই রকম। আপনি যদি পোস্টটি ঠিকভাবে পড়েন তাহলে নিকন লেন্স এর পাশাপাশি ক্যানন এর লেন্স সম্পর্কেও আইডিয়া পাবেন।
মনে রাখবেন, Nikon Nikkor AF 50mm f/1.8 আর Canon EF 50mm F/1.8 কিন্তু একই জিনিশ।
আমার অন্যান্য ফটোগ্রাফি রিলেটেড পোস্টঃ
ডিএসএলআর কেনার কথা ভাবছেন? একটি পরিপূর্ণ ক্যামেরা বাইং গাইড (বাংলাদেশী দাম সহ!)
'বোকেহ'নামা - শিখে নিন ফটোগ্রাফির একটি বহুল প্রচলিত টেকনিক
ডার্করুম থেকে চলে আসুন লাইটরুম এ
লাইট পেইন্টিং : ছবির ফ্রেম যখন আপনার ক্যানভাস! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।