আমার লেখায় আমি
ফিল্ম ক্যামেরা
আহ অনেকদিন পর আবার লেখনের মুড আইসে। অনেকে অভিযোগ করসেন যে আমি ক্যান এই সিরিজটা হঠাৎ বন্ধ কইরা দিলাম। আসলে বন্ধ করি নাই, জিনিষটারে শুধু দায়িত্ব পালন টাইপের কিসু বানাইতে ইচ্ছা করে নাই। তাই ঠিক করসি যখন ভাল্লাগবো তখনই শুধু লিখুম নাইলে একটা এক্সট্রা প্রেসার লাগে আর লেখাটাও আগায় না বেশিদুর।
যাইকগা ওহন ফটোগ্রাফি লইয়া আলাপ সালাপ শুরু করি।
ফটোগ্রাফির একটা বড় অংশ জুইরা আসে ক্যামেরা আর লেন্স। যদিও বলা হয় ফটো আসলে তৈরি হয় মাথায়, ক্যামেরায় না, তারপরও যেই বন্দুকটা দিয়া গুল্লি করবেন সেইটার ট্রিগারটা কই আসে ওইটাই যদি না জানেন তাইলে ক্যামনে চলবো কন?
দুনিয়ায় যত ক্যামেরা আসে তার সবটিরে আসলে অনেক গুলা ভাবে প্রকারভেদ করন যায়। যদি ছবি তুলনের মাধ্যমটা চিন্তা করেন তাইলে ২ রকমের ক্যামেরা আসে:
১) ফ্লিম ক্যামেরা
২) ডিজিটাল ক্যামেরা
ফ্লিম ক্যামেরার প্রসঙ্গে যাওনরে আগে এট্টু ফিল্ম লইয়া কথা কইয়া লই। ফ্লিমের ভাগ হইলো ৩টা:
১) স্মল ফরম্যাট ফ্লিম : এইটা সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ফ্লিম টাইপ। দুকানে ফ্লিম চাইলে যে ফ্লিম দেয় এটার সেই ফ্লিম।
এইটার মাপ হইলো ৩৬ মিলিমিটার বাই ২৪ মিলিমিটার। এইটার প্রচলিত নাম হইলো ৩৫ মি.মি ফ্লিম কারন বর্ডার বাদ দিলে এইটার ছবি তোলার প্রস্থের সাইজ ৩৫ মি.মি। এইটার আবার ৪ রকম আই.এস.ও তে পাওয়া যায়। আই.এস.ও হইলো ফ্লিম অথবা সেনসরের লাইট সেনসিটিভিটি। আই.এস.ও যত বেশি ফ্লিম তত তাড়াতাড়ি আলোর লগে বিক্রিয়া করবো।
আই.এস.ও নিয়া আগের পোস্টে আলোচনা করসি মনে লয়, তাই আর বেশি কিসু কইলাম না। ৩৫ মি.মি ফ্লিম ৪ ধরনের আই.এস.ও তে পাওন যায়: ১০০,২০০,৪০০ আর ৮০০। আমার মনে আসে দুকানে ফ্লিম কিনতে গেলে ব্যাটায় হেভি ভাব নিয়া যিগাইতো ১০০ পাওয়ারের টা নিবেন না ২০০ পাওয়ারেরটা? তহন ভাবতাম নিমু যহন কম নিমু ক্যা , ২০০টাই দেন
২) মিডিয়াম ফরমেট ফিল্ম: এইটা অনেকটা বড়লুকগো ফিল্ম, তাই আম জনতার মইদ্যে ব্যবহার কম। এইটার সাইজ হইলো গিয়া ৬ ইন্চি বাই ৬ ইন্চি। মিডিয়াম ফরমেট আমাগো দেশে বেশি প্রচলিত না কিন্তু ফ্লিকারে খুজলে এরুম অনেক ফটোগ্রাফার বাইবেন যারা খালি মিডিয়াম ফরমেটেই ফটুক তুলে।
বাংলাদেশে কিছু ফ্যশন স্টুডিও ফটোগ্রাফার এই ফর্মেটে তুলে বইলা শুনসি। এইটাতে ৩৫ মি.মি. এর চেয়ে ডিটেইল অনেক বেশি পাওন যায়
৩) লার্জ ফরমেট ফিল্ম: এইটা আরো বড়লুকগো ফ্লিম বিদেশের ব্ড় বড় ফ্যশন ম্যাগাজিনগুলান তাদের কাভার পেজে যে ফটু দেয় তার ৮০% ই এই ফরমেটে তুলা। এইটা সাইজ হইলো ৮ ইন্চি বাই ১০ ইন্চি আর এইগুলান ৩৫ মি.মি এর মতোন রোল অবস্থায় পাওন যায় না বরং একটা একটা কইরা ক্যামেরায় লাগায়া ফটু তুলা লাগে।
যারা অর্ডে হেপবার্নের ফানি ফেস সিনামাটা দেখসেন তারা হয়তো খেয়াল করসেন সিনামাটার নায়ক একটা ভুমা সাইজের ক্যামেরা দিয়া ফটু তুলে, ওইটাই হইসে লার্জ ফরমেট ফিল্ম ক্যামেরা। এই ফ্লিমে তোলা ছবির ডিটেইল দেখলে মাথা খারাপ হইয়া যায়।
নিচের ছবিটা লিজেন্ডারি ফটোগ্রাফার এনসেল অ্যাডামস তুলসিলেন ১৯৪২ সালে:
আরো কিছু স্পেশাল টাইপের ফ্লিম আসে তয় সেগুলা ঠিক তেমন প্রচলিত না তাই এইখানে আর বল্লাম না।
ফ্লিম যেহেতু তিন রকম তাই ক্যামেরাও তিন রকম:
১) স্মল ফরম্যাট ফ্লিম ক্যামেরা
২) মিডিয়াম ফরম্যাট ফ্লিম ক্যামেরা
৩) লার্জ ফরম্যাট ফ্লিম ক্যামেরা
ফ্লিম ক্যামেরায় ছবি তুলনের জন্য কি ধরনের টেকনলজি ব্যবহার করা হয় সেই ভিত্তিতে আবার ক্যামেরারে কয়েকটা ভাগ করন যায় ( এতো কষ্ট না কইরা ক্যামেরারে তুইলা আছার মাইরাও কয়েকটা ভাগ করন যায়..খিক খিক..কুবুদ্ধির জন্য কর্ত্রিপক্ষ দায়ি নন..খিক খিক):
ভিউফাইন্ডার আর রেন্জ ফাইন্ডার ক্যামেরা: এইটা ডিজিটাল ক্যামেরা আসনের আগে সবচেয়ে চাল্লু ক্যামেরা। খালি (ফ্লিম) ভরবেন, ফুটা (ভিউফাইন্ডার) দিয়া দেখবেন আর (শাটার রিলিজ বাটন) টিপ দিবেন (১৮+ হইয়া গেলো বোধহয়..খিকজ)। ঠিক এইরকম:
রেন্জ ফাইন্ডার ক্যামেরায় ভিউফাইন্ডারটা ঠিক লেন্সের উপর না হইয়া এট্টু সাইডে থাকে তাই ক্যামেরায় ভিউফাইন্ডারে যা দেহা যায় তার চেয়ে ফ্লিমে যা উঠবো তা এট্টু আলাদা। এইটারে কয় প্যারালাক্স ইরর:
এই ইরর দুর করনের উপায় রেন্জ ফাইন্ডারে থাকে।
তয় সেইটা আরেক প্যাচাল।
ফ্লিম সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স ক্যামেরা : সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স বা এস.এল.আর ক্যামেরায় দুইটা প্রধান উপাদান হইলো একটা আয়না আর একটা প্রিজম। আয়নাটা থাকে ঠিক লেন্সের পিছনে আর ফ্লিমের সামনে। এই আয়নাটা সাবজেক্ট থেইকা আসা আলোটারে রিফ্লেক্ট করে উপরে বসানো প্রিজমটার দিকে। প্রিজমটা এই রিফ্লেট হওয়া আলোটারে কেচকি মাইরা পাডায়া দেয় ভিউফাইন্ডারের দিকে আর হেরপর আমরা দেখতে পাই।
এখন শাটার রিলিজ বাটনে টিপ দিলে শাটারের লগে লগে আয়নাটাও লাফ দিয়া উপরে উইঠা যায় আর তহন ফ্লিমের উপরে আলো পরে আর ছবি উইঠা যায় (কি তামশা !) ।
ব্যাপারটা অনেকটা এইরকম:
একটি ফ্লিম এস.এল.আর ক্যামেরার ব্যবচ্ছেদ (বেশ আধুনিক কবিতাটা টাইপ নাম হইসে ) :
একটা ফ্লিম এস.এল.আর ক্যামেরায় নিচের হাড্ডি গুড্ডি গুলা থাকে:
ছবিটা তেমন জটিল না । দেখলে বুঝা যাওনের কথা কুনটা কি? তারপরও কিসু না বুঝলে জিগায়েন।
ফ্লিম টুইন লেন্স রিফ্লেক্স ক্যামেরা : টুইন লেন্স রিফ্লেক্স ক্যামেরা বা টি.এল.আর এক্কেরে এস.এল.আরের লাহানি কাজ করে তয় পার্থক্য হইলো এইটাতে লেন্স থাকে ২টা। একটা দিয়া ভিউফাইন্ডারে আলো যায় আর আরেকটা দিয়া ফিল্মে আলো যায়।
এইটাতেও প্যারালাক্স ইরর আসে।
টি.এল.আর দেখতে এইরম:
ভিউ ক্যামেরা: ভিউ ক্যামেরায় ভিউফাইন্ডারটা থাকে ঠিক ফিল্মের পিছনে। লেন্স দিয়া যেই আলোটা ক্যামেরার ভিতরে আসে সেইটা সরাসরি ভিউফাইন্ডারে দেখা যায় তবে উল্টা। ফোকাসিংএর পর ফ্লিমটা লেন্স আর ভিউফাইন্ডারের মাঝখানে নিয়া আসা হয়। এখনো খুজলে গুলিস্থানে এই ধরনের ক্যামেরা দেখা যায় যেইটার প্রচলিত নাম বক্স ক্যামরা।
ক্যামরাটার পিছনে একটা পর্দা লাগানো থাকে যাতে ওইদিক দিয়া আলো আইসা ফ্লিমে পরতে না পারে।
এউ হইলো গিয়া ফ্লিম ক্যামেরার প্যাচালি। ডিজিটাল ফটোগ্রাফি বুঝতে হইলে এইগুলা জানাটা জরুরি। আগামি পাঠে আশা রাখি ডিজিটাল ক্যামেরা আর লেন্স নিয়া কখা কইতে পারুম।
হ্যাপ্পি ফটোগ্রাফি
আগের পর্ব গুলার লিংক:
১) Click This Link
২) Click This Link
৩) Click This Link
৪) Click This Link
৫) Click This Link
৬) Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।