আওয়ামী লীগ তার জনসর্মথন শূন্যের কোঠায় নিয়ে যাবার জন্য উঠৈপড়ে লেগেছে। তার জন্য বেছে নেয়া হচ্ছে বিশিষ্ট নাগরিক ব্যক্তিত্বদের। আমাদের সাংসদ ও মন্ত্রীরা যে চোর-ডাকাত তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলার আগে কি কেউ জানতো না! সাসংদের এই চেহারা ভোটের আগে কোথায় থাকে?
প্রথম্ আলোতে প্রকাশিত নিচের সংবাদটি পড়ুন:
সংসদে সমালোচনা মর্মাহত আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সাংসদদের বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন করে বক্তব্য দিয়েছেন বলে সংসদে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ জন্য তাঁকে সংসদে এসে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল রোববার সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্বকালে সরকারি দলের সাংসদ আলী আশরাফসহ কয়েকজন সাংসদ এ জন্য সাংসদদের কাছ থেকে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ আহ্বান করেন।
তবে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ প্রথম আলোকে বলেছেন, সাংসদদের অধিকার ক্ষুণ্ন তো দূরের কথা, সেদিনের বক্তব্যে তিনি সাংসদ শব্দটি উচ্চারণই করেননি। তাঁর বক্তব্যকে সংসদে ভুলভাবে উপস্থাপন করায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত বলে জানিয়েছেন।
গতকাল সংসদে অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন স্বতন্ত্র সাংসদ ফজলুল আজিম। তিনি বলেন, শনিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) একটি অনুষ্ঠানে একজন বুদ্ধিজীবী সাংসদ ও মন্ত্রীদের চোর-ডাকাত বলে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। তাঁর এ বক্তব্য দুঃখজনক।
তিনি বলেন, ‘এসব বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য সুফল বয়ে আনবে না। আমরা এখানে জনগণের রায় নিয়ে এসেছি। অনেকেই আছি যারা বারবার নির্বাচিত হয়েছি। আমরা কেউ ধোয়া তুলসী পাতা নই। ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে।
সে জন্য আইন আছে। ভুল করলে জনগণ বিচার করবে। ’
এরপর জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হক বলেন, ‘এ মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। দেশের সকল অর্জনের পেছনে রাজনীতিবিদদের ভূমিকা রয়েছে। জনগণ ভোট দিয়ে সাংসদদের নির্বাচন করেছেন।
অধ্যাপক আবু সায়ীদকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ভোটারদের অবমাননা করেছেন। ’
এরপর শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, এই বক্তব্য গণতন্ত্র ও সংসদের ওপর আঘাত। বুদ্ধিজীবীরা জাতির বিবেক হয়েছেন। বিপদে তাঁদের টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যায় না।
কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, তবে প্রমাণসহ উপস্থাপন করেন। সেই মন্ত্রী পদত্যাগ করবেন। কিন্তু ঢালাও অভিযোগ করা যাবে না।
শেখ সেলিম অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘যেসব বুদ্ধিজীবী সরকারের সমালোচনা করেন, তাঁদের আয়ের উৎস কী, তা খতিয়ে দেখেন। এক-এগারোতে তাঁরা কী করেছেন, তা আমাদের জানা আছে।
একজন শিক্ষক এত দামি গাড়িতে কী করে চড়েন? নির্বাচিত সরকার থাকলে তাঁদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। অনির্বাচিত সরকার থাকলে তাঁরা পদ পান। এক-এগারোর পর ব্যবসায়ী, ছাত্র, শিক্ষকদের যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তো তাঁরা একটি কথাও বলেননি, বরং সেই সরকারের প্রশংসা করেছেন। ’
স্পিকারের দায়িত্ব পালনকারী আলী আশরাফ সাংসদদের বক্তব্যকে যথার্থ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের আকাশে কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে।
সংসদকে অবমাননার মাধ্যমে দেশের জনগণ ও সংবিধানকে অবমাননা করা হয়েছে। এতে সাংসদদের বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো বক্তব্য নয়। সে জন্য তাঁকে (আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ) বিশেষ অধিকার কমিটির মাধ্যমে নোটিশ করে আমরা এ সংসদে তলব করতে পারি। কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।
একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ, সংসদকে অবমাননা করার অধিকার কারও নেই। ’
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ যা বলেছিলেন: বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ গত শনিবার টিআইবির এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের শুরুতে দুর্নীতি কী, তা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘চোর যে চুরি করে, ডাকাত যে ডাকাতি করে, সেটি কি দুর্নীতি? আমার ধারণা, এটা দুর্নীতি নয়।
কারণ, দুর্নীতি শব্দের মধ্যে আরেকটি শব্দ লুকিয়ে আছে। শব্দটি হলো ‘নীতি’। চোর বা ডাকাতের কাজ ঠিক দুর্নীতি নয়। কারণ, তাদের কোনো নীতিই নেই। সুতরাং, দুর্নীতি সেই মানুষটি করে, যার নীতি আছে।
একটা উদাহরণ দিই। যেমন—যদি একজন মন্ত্রী এই বলে শপথ নেন যে তিনি শত্রু-মিত্র ভেদাভেদ না করে সবার প্রতি সমান বিচার করবেন, কিন্তু পরে তিনি সেটি না করেন, সেটা হবে দুর্নীতি। ’
তাঁর এই বক্তব্যের রেকর্ড প্রথম আলোর কাছে আছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।