বাংলাদেশি কয়েক শ কর্মীকে বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠিয়েছে লিবিয়া। দেশটি বলছে, জাল ভিসায় আসায় তাঁদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
ঢাকার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশিদের ভিসা দেয় ঢাকার লিবীয় দূতাবাস। কাজেই ভিসা জাল হলে সেখান থেকেই হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে আপাতত দেশটিতে লোক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, গত ২২ মে টার্কিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ১০৩ জন, তিউনিস এয়ারের একটি ফ্লাইটে ১০০ জন এবং ইত্তিহাদ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ১৫ জন বাংলাদেশি কর্মী লিবিয়ার ত্রিপোলি বিমানবন্দরে নামেন। তাঁদের মধ্যে ২০৩ জনকেই বিমানবন্দরে আটক রাখা হয়। খবর পেয়ে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কর্মকর্তা বিমানবন্দরে গিয়ে লিবিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানানো হয়, এসব কর্মী জাল ভিসায় এসেছেন। প্রাথমিকভাবে ৪৪ জনের ভিসা জাল বলে প্রমাণও দেখায়। পরে এসব বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ২৪ এপ্রিল বেনগাজি বিমানবন্দরে ভিসা জাল সন্দেহে ৭৬ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে মনসুর আলী ওভারসিজের ১৮ জনকে পরদিন এবং কনকর্ড এপেক্সের ৪৪ জনকে ২৮ এপ্রিল ছেড়ে দেওয়া হয়। আটকের কারণ বিশদ না জানিয়ে কেবল বলা হয়, ছয়জনের ভিসা জাল। একই ঘটনা প্রায় ঘটছে।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, লিবিয়া ইদানীং অনেক বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে।
এসব কর্মী বলেছেন, ভিসা জাল জানিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাঁদের ভিসা জাল নয়।
জানতে চাইলে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বারবার ভিসাগুলো ঢাকার লিবীয় দূতাবাস থেকে যাচাই করার অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু লিবিয়া বলছে, প্রাথমিকভাবে সব ভিসাই জাল। তাই তারা সবাইকে ফেরত পাঠাবে।
লিবিয়া বলছে বাংলাদেশি কর্মীরা এর আগেও জাল ভিসায় এসেছে। কাজেই এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ’
২০০৯ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশ থেকে জাল ভিসায় অনেক কর্মীকে লিবিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে দালাল চক্র। এসব কর্মীর অনেকে বিমানবন্দরে আটক হন। এসব কারণে ২০১০ সালে লিবিয়া বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়া বন্ধ করে দেয়।
২০১১ সালের মার্চে যুদ্ধাবস্থা শুরু হলে প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী লিবিয়া থেকে ফেরত আসেন। গাদ্দাফি সরকারের পতনের পর এ বছরের শুরু থেকে লিবিয়া আবার লোক নেওয়া শুরু করে। গত চার মাসে সেখানে সাড়ে সাত হাজার লোক গেছেন।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যাঁরা লিবিয়ায় যাচ্ছেন তাঁদের ভিসা দিচ্ছে ঢাকার লিবীয় দূতাবাস। কাজেই কোনো সমস্যা হলে দায় তাদেরই নিতে হবে।
লিবীয় দূতাবাসে এখন রাষ্ট্রদূত নেই। আমরা একজন রাষ্ট্রদূতের জন্য অপেক্ষা করছি। আর সমস্যা সমাধানে আমরা লিবিয়ায় আর লোক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি, শিগগিরই আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
লেখাটা শেয়ার করা।
লিনক.
http://www.prothom-alo.com/detail/news/262149 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।