জাফর ইকবালের “তোমরা যারা শিবির করো” বনাম এক যুবকের “তোমরা যারা জাফর ইকবালকে পছন্দ করো”। ---Tanvir Ahmad Arjel
বিসমিল্লাহহির রাহমানির রাহিম
স্যার আমি জানি আমার এই লেখা হয়তো আপনার কাছে পৌঁছবেনা, পৌঁছলেও হয়তো পড়ে দেখার সময় আপনার হবে না। তারপরেও লিখলাম যেন আপনার অন্ধ অনুসারীরা আপনাকে অনুসরণ করার আগে,আপনার কথাগুলো, আপনার চিন্তাগুলো মেনে নেয়ার আগে একটু চিন্তা করেন।
স্যার প্রথমেই বলে রাখি আমি কোন শিবির কর্মী না বা জামাতের কেউ না। তারপরেও আপনার তোমরা যারা শিবির করো লেখাটির উত্তর দিতে বসলাম কারণ আপনার এই লেখার কিছু কিছু বিষয় এতই নিচু মানের মূর্খের মতো মনে হয়েছে যে একজন রিক্সাওয়ালাও আপনার চেয়ে এই বিষয়গুলোতে ভালো বুঝে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আপনি ছাত্র শিবিরের ছেলেদের নিয়ে অনেক হতাশার কথা প্রকাশ করেছেন অনেকটা লোক দেখানো কপট ভালোবাসার মত। হয়তো অনেকেই আপনার এই কপট চরিত্রটি বুঝে উঠতে পারবেনা কারণ আপনি হচ্ছেন বাংলাদেশের অন্যতম একজন শ্রেষ্ঠ ধূর্ত অমানুষ (অমানুষ বললাম কারণ যে তার সৃষ্টিকর্তাকে চিনেনা আমি তাঁকে অমানুষই বলি)। ছাত্র শিবিরের ছেলেদের নিয়ে আপনার যে হতাশা তা কিন্তু এই জন্যে নয় যে তারা যুদ্ধাপরাধী জামাতের আনুগত্য মেনে নিয়েছে বরং তারা যে ইসলামকে পছন্দ করে বা ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে চায় এই জন্যেই আপনার এত হতাশা। কারণ আমি কোনদিন আপনাকে ছাত্রলীগ আর ছাত্রদলের ছেলেদের নিয়ে আক্ষেপ করতে দেখিনাই কারণ তারা সন্ত্রাসী করুক,চাঁদাবাজি করুক আর ধর্ষণের সেঞ্চুরি করুক বা আর যাই করুক না কেন অন্তত তারা মৌলবাদী না, তারা ইসলাম মানেনা। তারা ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহরা আর মেয়েদের ওড়না টেনে নিয়ে গেলেও আপনি তাঁদের নিয়ে অনেক আশাবাদী ,আপনি তাঁদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেন কারণ তারা আর যাই করুক না কেন তারা অন্তত ইসলামের ধার ধারেনা, নৈতিকতার ধার ধারেনা।
আমি ভালো করেই জানি আপনার কাছে ছাত্র শিবির, হিযবুত তাহরীর বা তাবলীগ, এমনকি কোন দল না করা ইসলামপন্থী ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ইসলামপন্থী সবাই আপনার কাছে মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, সেকেলে এবং উগ্রবাদী। আপনার যত হতাশা সকল ইসলামপন্তী ছেলেমেয়েদের নিয়েই। আপনার এই চরিত্রটা এখন আর কোন সচেতন মানুষের অজানা নয়। আপনি নিজেকে খুব মুক্তমনা দাবী করেন করেন কিন্তু আপনি নিজেকে নিয়ে কখনো একবার ভেবে দেখেননি যে আপনি কত বড় সঙ্কীর্নমনা, কত বড় সেকেলে।
আপনার মতো বুদ্ধিজীবিদের(?) উদ্দেশ্য করেই ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সত্যই বলেছিলেনঃ-
“তোমাদের যত বড় বড় পিএইচডি ডিগ্রি আর সার্টিফিকেট থাকুক না কেন, যদি আল্লাহ্ ও তার রাসুলের(সাঃ) সাথে সম্পর্ক না থাকে তাহলে তোমরা মূর্খ,গণ্ড মূর্খ।
আপনি আপনার লেখায় লিখেছেন যে ছেলেমেয়েরা যেন এই তরুণ বয়সে এইসব ধর্ম কর্ম বাদ দিয়ে মুক্তমনা হয়, অসাপ্রদায়িক হয়, রবীন্দ্রসংগীত শোনে আরও কত কি? তবে সবচেয়ে ভয়াবহ যেটা বলছেন সেটা হল আপনি চান এই বয়সে তরুণ ও যুবক ছেলেরা মেয়েদের সাথে প্রেম করবে!! ঘুরে বেড়াবে!!আড্ডা দিবে এবং মাঝে মাঝে সইতে না পেরে লিটনের ফ্লাটে যাবে। স্যার এবার আপনাকে কিছু কড়া কথা বলবো। স্যার আপনি যেমন মুক্তিযুদ্ধের সকল হত্যাকাণ্ডের জন্যে জামাত ও ছাত্রসংগকে দায়ী করেন ঠিক এমনিভাবে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী বাংলাদেশে যতগুলো ধর্ষণ হয়েছে, বয়ফ্রেন্ডের দ্বারা যতগুলো মেয়ের সেক্স ভিডিও বের হয়েছে, যতগুলো ছেলেমেয়ে প্রেমঘটিত বিষয়ে আত্মহত্যা করেছে, এসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছে তার সবগুলোর জন্যে দায়ী হচ্ছেন আপনি, আপনার মত পরগাছা বুদ্ধিজীবিরা আর আপনার এবং অশ্লীলতার প্রচারক প্রথম আলো গংরা। কারণ আপনি, আপনার মত কুবুদ্ধিজীবিরা এবং প্রথম আলো গংরা এইসব মতবাদ ও অশ্লীলতার ধারক, বাহক এবং প্রচারক।
স্যার আমার খুব জানতে মন চায় আপনার মেয়ে যদি কোন ছেলের সাথে প্রেম করে সেক্স করে তারপর ছেলেটি সেই সেক্স ভিডিও বাজারে ছেড়ে দেয় তখন আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে? আমি জানি আপনি বলবেন প্রেম করাটা, প্রেম করে সেক্স করাটা কোন অপরাধ নয় কিন্তু ভিডিও করাটা, তারপর প্রেম ভেঙ্গে গেলেই সেই ভিডিও বাজারজাত করাটা অন্যায়, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা। এমনকি আপনি তখন আপনার মেয়ের সাফাই গাইতেও ভুলবেন না, বলবেন আপনার মেয়ে কোন ভুল করেনি, আপনার মেয়ে ছেলেটিকে বিশ্বাস করেছে, বিশ্বাস করে ভালোবেসে বিছানায় গিয়েছে। স্যার আপনাদের মত জাফর ইকবালদের কারণেই আজকের এই পৃথিবীতে এত অশান্তি, এত সন্ত্রাস, এত চাঁদাবাজি, এত নোংরামি। আপনাদের মতো জাফর ইকবালদের কারণেই এই পৃথিবীটা সুস্থ মানুষদের জন্যে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আপনাদের মত জাফর ইকাবালদের কারণেই পৃথিবীটা অনৈতিকতায় ভরে গেছে, আপনাদের মত জাফর ইকবালদের কারণেই একজন মা তার মেয়েকে বাহিরে পাঠিয়ে শঙ্কিত থাকে কখন না জানি তার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয় কারণ আপনাদের মত জাফর ইকবালরা ধর্ষণ মতবাদের প্রচারক, নৈতিকতাহীন মতবাদের প্রচারক।
স্যার মনে করিয়েন না আপনাদের এইসব কর্মের জন্যে কোন হিসেব বা জবাবদিহিতা করতে হবে না। ক্ষমতা আর প্রতিপত্তি দিয়ে এই পৃথিবীর কাঠগড়া পাড়ি দিতে পারলেও আখিরাতের কাঠগড়া কখনোই পাড়ি দিতে পারবেন না যতদিন না বেঁচে থাকতে এইসব কাজের জন্যে তওবা করে পরম করুণাময়ের পথে ফিরে আসেন। স্যার শেষ করার আগে আপনার সাথে সুর মিলিয়ে আমিও কিছু কথা বলতে চাই-
“কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করে এই ছোট্ট জীবনে সবচেয়ে বিচিত্র, সবচেয়ে অবিশ্বাস কি দেখেছ আমি অবশ্যই বলবো জাফর ইকাবালদের দেখেছি, দেখেছি তাঁদের অনুসারীদের। তার কারণ, যে জীবনটি হচ্ছে একটা পরীক্ষা ক্ষেত্র, রবের ইবাদত করে কাটানোর সময় সেই সময়ে তারা কি করে সেই রবের অকৃতজ্ঞতায় কাটায়, ইসলাম বিরোধিতায় কাটায়। যে সময়টাতে তাঁদের হাতে থাকার কথা আল কোরআন, আল হাদিস, আল্লাহ্ রাসুলের জীবনী সেই সময়টাতে কি করে তারা রাসেল, আরজ আলী মাতাব্বর আর নৈতিকতাহীন প্রেমের উপন্যাস পড়ে কাটায়।
আমি স্বপ্ন দেখি একদিন জাফর ইকবালদের হাতে, তাঁদের অনুসারীদের হাতে এইসব বইয়ের পরিবর্তে থাকবে আল কোরআন, আল হাদিস আর আল্লাহ্ রাসুলের জীবনী। আমার সেই স্বপ্ন যেন আল্লাহ্ তায়ালা বাস্তবে পরিণত করেন এই দোয়া রেখেই আমার এই লেখা শেষ করছি। ” তবে শেষ করার আগে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতের উদৃতি দিয়ে শেষ করতে চাই। আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ-
“আর যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে সে বলবেঃ হায়! আমাকে যদি আমার আমলনামা আদৌ দেয়াই না হতো এবং আমার হিসেব যদি আমি আদৌ না জানতাম তাহলে কতই না ভালো হতো। হায়! আমার মৃত্যুই যদি আমার শেষ হতো! আজ আমার অর্থ সম্পদও কোন কাজে আসলো না।
আমার সকল ক্ষমতা ও প্রতিপত্তিও বরবাদ হয়ে গেল। ”– সুরা আল হাক্কাহঃ ২৫-২৯
বিঃদ্রঃ আমার ইসলাম প্রিয় ভাইদেরকে বলবো যদি খুব বেশী সমস্যা না হয় তাহলে এই লেখাটি শেয়ার করতে ভুলবেন না কারণ আমি চাই সকল জাফর ইকবাল প্রেমীদের কাছে যেন এই লেখাটা পৌঁছে, তারা যেন একটু নতুনভাবে চিন্তা করার প্রয়াস পায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।