গভীরে যাও, আরো গভীরে যাও, এই বুঝি তল পেলে, ফের হারালে, প্রয়োজনে ডুবে যাও। বাউন্ডুলে,
কাটছে কেমন তোর দিনগুলো?
অনেক দিন তোর কোন খবর জানিনা, তোকে লিখব বলে কিনে নিয়ে আসা হলুদ খাম আর সুদৃশ্য চিঠি লেখার কাগজ গুলোতে বহুদিনের অযত্ন আর
অব্যবহারে ধুলো জমেছে। ধুলো কি আমাদের স্মৃতিতেও জমেছ বাউন্ডুলে?
ভাবছিলাম কেন আমি আজো তোকেই লেখার কথা ভাবি! কত কিছু ভেবে রাখি তোকে লিখব বলে।
একদিন খুব ভোরে ইচ্ছে হয়েছিল তোকে শালিক দম্পতির কথা গুলো লিখে পাঠাই, আজকাল ওদের কিচিরমিচির শব্দে আমার রাত পোহায়!
আমার জানালার কার্নিশ ঘেঁসে বহু বছর আগে শখ করে লাগান বাগানবিলাসের সেই ছোট্র চারা গাছটাই আজ তার ডালপালা ছড়িয়ে ছাঁদে গিয়ে পৌঁছেছে। শালিক দম্পতি ঐ গাছেই সংসার পেতেছে।
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই জোড়া শালিখের কিচিরমিচির শব্দ আমাকে আর চোখ বুজে থাকতে দেয়না।
ভেবেছিলাম তোকে দুষ্টু- মিষ্টি কাঠবিড়ালি গুলোর দস্যিপনার কথা লিখে পাঠাব। কাঠবিড়ালির দস্যিপনায় গাছের পাকা ফলের স্বাদ চেখে দেখাটা অসম্ভব হয়ে উঠছে ইদানিং।
তোকে জানান যেত আমার লোলোর (কুকুর) কথা। গত বর্ষায় এক বৃষ্টির
রাতে কোথা থেকে যেন এলো লোলো।
বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডায়
কাঁপছিল। দেখে ভিষণ মায়া হয়েছিল। খেতে দিয়ে খুব যত্ন করেছিলাম। সেই রাতের পর থেকে লোলো আজো আমার কাছেই আছে। ভিষণ ন্যাওটা হয়েছে আমার।
গত শীতে অনেকদিন পর গ্রামে গিয়েছিলাম। সেই অনুভুতিগুলো তোকে জানাতে ইচ্ছে করে। জানিস গ্রাম গুলো আর গ্রাম নেই। আকাশ সংস্কৃতির তথাকথিত আধুনিকতা গ্রামের সহজসরল মানুষগুলোকেও গিলে খেয়েছে। ছোট ছোট বাচ্চার নির্ভুল উচ্চারনে একদম ঠিকঠাক সুরে গেয়ে যায়, 'মাই নেইম ইজ শিলা' কিংবা 'রোমিও আমি হলাম রোমিও' তবে সকালে উঠে জ্বাল দেয়া খেজুরের রসে মুড়ি ভিজিয়ে খাওয়া, খালি পায়ে ধানের আইল দিয়ে হেঁটে হেঁটে অনেক দূর চলে যাওয়া, হলুদ শর্ষে ফুল,
সাদা মুলো ফুলের ঘ্রাণ বুক ভরে নেয়া, এসব উপভোগ করেছি প্রাণ ভরে।
কত কথা ভাবছি দেখ তোকে জানাব বলে। অথচ কোন কথাই চিঠি হয়ে তোর কাছে উড়ে যায়না।
ব্যস্ততার বাস্তবতায় এ মন মাঝে মাঝে খুব আড়াল খোঁজে একটু লুকোবার,
তোর স্মৃতি নিয়ে কানামাছি খেলতে খেলতে ক্লান্ত এই মনটাকে একটু
বিশ্রাম দেয়া দরকার।
নিজের যত্ন নিস। আর ধুমকাঠি একটু কম কম খাবি।
কিংবা তুই না হয় এবার ছেড়েই দে ধুমকাঠি! কিরে দিবি ছেড়ে? দে না ছেড়ে! তুই বল কি লাভ টাকাগুলোকে অহেতুক ধোঁয়ায় উড়িয়ে দেয়ার! ভাল থাকিস নিজের মত করে
. . . . . . . . .অন্তু!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।