আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তোকে খুব মিস করব

আমরা শুধু আপন মানুষ খুঁজি, আপন মানুষদের খুঁজতে হয় না, তারা পাশেই থাকে !! ক্যাম্পাসের খুব সিনিয়রদের খুব ভাব সাব থাকে। মাটিতে যেন পা পড়েই না, উড়ে উড়ে বেড়ায়। আমিও মাঝে মাঝে একটু পাখা মেলি আর কি ! এ বছর নতুন পোলাপান যখন ভর্তী হয় আমরা কয়েকজন বসেছিলাম ত্রৈমাসিক ধুমকেতু নিয়ে। একটা পুচকে ছেলে আসল-"এক্সকিউজ মী ভাইয়া, এখানে ফয়সাল ভাইয়া কে জানতে পারি?" আমার কাছে আমার সন্ধান, বিব্রতকর। "আমি ফয়সাল।

বল কি দরকার। " "আসলে ভাইয়া আমি নটরডেম কলেজ থেকে এসেছি, ভাল গান জানি, গীটার বাজাতে জানি, এখানে ফিসারীজের মেহেদি আমার মামা হন। আমাকে কিন্তু আপনার দলে নিতে হবে। আমি ষ্টেইজে গান গাইতে চাই"। নতুন জুনিয়র ক্যাম্পাসে আসলে সিনিয়রদের ভাব আরেকটু বেড়ে যায়।

অতোটা উৎসাহীত না করে বললাম "ঠিক আছে সেটা পড়ে দেখা যাবে, আগে ভর্তীতো হও। কি ডাকবো তোমাকে ভাই না ভাগীনা?" স্মীত হেসে-"আপনাকে আমি ভাইয়া ডাকবো"। ছেলেটার নাম ই জানা হল না ! সিলেটের কৃষকদের জন্য আমরা প্রতিমাসের শেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬.০৫ মিনিটে ৮৮.৮ এফএমএ আমরা "মৃত্তিকা" নামে একটা অনুষ্ঠান করি। ফেব্রুয়ারী মাসে সেদিন গানের রেকর্ডিং ছিল। হঠাৎ করেই এক শিল্পী না করে দিল।

একজন অর্গানাইজারের জন্য ১০নম্বর মহাবিপদ সংকেত। পল্লব নোটন আরিফকে দিলাম ধমক। বেচারারা কাচু মাচু হয়ে বলল। " ভাইয়া একটা ছেলে আছে। নতুন আসছে, গীটার বাজাইয়া ভাল গান গায়।

" পাইছি। তারাতারি বললাম-"ধরে নিয়ে আসো। " গাড়িতে উঠে বসল আমার পেছনে। -গান পার? -একটু একটু পারি ভাইয়া। -কি নাম? -নাদিম।

-নাদিম, ভাল। দেখি গাওতো এ লাইন দুটো। হয়েছে মোটামুটি, কোন মতে কাজ চালানো যাবে। জীবনে প্রথমবারের মতো নাদিম অনএয়ারে গাইল। বাউল শাহ আব্দুল করিমের-"কেন পিরীতি বারাইলারে বন্ধু, ছেড়ে যাইবা যদি"।

গান জঘন্য রকমের খারাপ হয়েছে। জুনিয়র এবং প্রথমবারের মতো তাই কিছু বললাম না। শুরু হল আমার রূমে আসা যাওয়া। আমার টেবিলের পাশে একটা ষ্টোর খাট আছে, এখানে এসে বসে থাকে নাদিম। "কি ব্যাপার নাদিম, তুমি নাকি গীটার জান?" কথা শেষ হওয়ার আগেই বলে উঠে,-"ভাইয়া কাল সারা রাত আপনাকে গীটার বাজিয়ে গান শুনাবো" পরদিন রাতে আমাদের রৌদ্রের গীটার হাতে নিয়ে হাজির।

একটার পর একটা গান। সাথে ছিল আমাদের মৌসুম। দুজনের গীটারের সুরে আমি মন্ত্রমুগ্ধ। মেরিতা...মেরী, বিন্দু আমি, এই বৃষ্টি ভেজা রাতে....আমার সব প্রিয় গান গুলো। রাতে আমি একটু দেরী করে খাই।

সেদিন ছিল টমেটো আর ছোট মাছের তরকারি। "রাতে খেয়ে এসেছ?" "না ভাইয়া" "চল খাই"। সেদিন রাতে আমার খাবার নাদিম আর আমি ভাগাভাগি করে খেয়েছিলাম। রাত গভীর হয়ে গিয়েছিল বলে ও কে আর আমার রুম থেকে যেতে দিই নাই। আমার সাথেই ঘুমিয়েছে।

সকাল বেলা ঘটল তাজ্জব ঘটনা। ঐদিন সকালে সিলেটে বড় ভূমিকম্প হয়। সবাই ঘুম ছেড়ে হল থেকে নেমে যায়। আর আমরা গাধার মতো টানা দশটা পর্যন্ত ঘুমিয়েছি। তারপর থেকে প্রায় রাতেই আমাকে গান শুনানোর জন্য আমার কাছে আসতো।

কথায় কথায় সময় যায়। রাত হয়, ভোর হয়। সকাল পেড়িয়ে বিকাল হয়। নতুনদের পদচারনায় মুখরিত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। নাদিমদের আমরাও হাসি, আড্ডা দিই।

একদিন হঠাৎ বলে-"ভাইয়া আমি কিন্তু ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাব। " "কেন রে?" " আমি ফ্যামিলির বড় ছেলে। বাসায় খুব সমস্যা। আমার যাওয়া দরকার। " আমি সেদিন কিছু বলিনি ।

কৃষ্ণচূড়া থেকে আমরা ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগীতা করেছিলাম। নিয়মের খাতিরে ও কে আমরা গীটার তুলতে দিই নাই। ষ্টেইজে উঠেই বেচারা ঘাবরে গেল। ওর ছোট মুখটার দিকে তাকিয়ে আমারই মায়া লাগছিল। নিয়ম তো নিয়ম-ই , কিছু করার ছিল না।

তারপর "হো ওয়ান্টস টু মি মিস্টার এন্ড মিস এগ্রিকালচার"। প্রানবন্ত পারফর্মেন্স। এখন পর্যন্ত আমরা রেজাল্ট দিইনি। জানি না কে হবে এবারের মিস্টার এন্ড মিস এগ্রিকালচার। তবে কৃষি অনুষদের প্রতিভা দেখে আমরা বিমহিত।

নাইম, রিতা, নু, নাইম, সৌমিক-কাকে ছেড়ে কাকে বলব। এদিকে ১৭তারিখ ক্যাম্পাসে আমরা লোকজ আসরের আয়োজন করি। নাদিম গাইবে রবি বাবুর গান-আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়েছিলে। সৌমিকের খাচার ভিতর অচিন পাখির সাথে হবে নাদিমের গীটার। সৌমিক নাদিম একজন আরেক জন কে বেবী-ডার্লিং বলে।

রিহার্সেলে ঢুকলে আমার মাথা ঠিক থাকে না। নিজেও খাটি, অন্যদেরও খাটিয়ে মারি। সারাদিন না খেয়ে সবাই ক্লান্ত, "একটু ছুটি চাই"-বলছিল সবাই। বেলা সারে তিনটায় ছুটি দিলাম । হলে এসে দেখি পানি নাই।

নাদিম সৌমিক আমার মতো ক্ষুধার্থ। কি আর করা ওদের নিয়ে আসলাম আমার রুমে । নিজের খাবার, তিন জন মিলে কোন মতে খেলাম। সেদিনের অনুষ্ঠানে শর্ত ছিল ছেলেদের লুঙ্গি আর মেয়েদের শাড়ি পড়ে আসতে হবে । নাদিম গানের পাশাপাশি গম্ভিরায় কন্ঠ দেয়, ২৬জনের রেকর্ডধারী কোরিওগ্রাফিতে স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করে।

লোকজ আসর সুপার ডুপার হিট। দর্শকদের প্রশংসায় সিক্ত আমরা। সকলের মুখে একই কথা- ভিন্ন ধর্মী ফ্লেভার। রাতে খাবার কিছু নাই। কি আর করা সকলে মিলে গেলাম বালুচর।

ভাতের নাম গন্ধ নাই। সিএনজির অভাবে পাঁচ-ভাই যেতে পারলাম না। অঙ্কুর দাদার দোকানে পেপসি, কেক আর আম দুধ। সাথে ছিল সিনিয়র জুনিয়র একাত্ম হয়ে যাওয়া কিছু অনুভূতি। এডাল্ট জোকস, হাসি, মারামারি, গান ইত্যাদি।

নাদিম শাহাদাতের লাল পাঞ্জাবীটা পড়ে ছিল। সবার সামনে লাল পাঞ্জাবিওয়ালা নাদিম সবার সামনে বলে উঠল- "ফয়সাল ভাই আমার আপণ ভাই। আমার কোন বড় ভাই নাই। আপনি আমার বড় ভাই। " আর কিছু না বলে জড়িয়ে ধরল আমাকে আমার ছোট ভাই।

ঘামে ভেজা শরীরটাকে ধরে আমার মনে হলো-এতো কাছের মানুষের ভীরে আরেকটা ছোট ভাই পেলাম। আমার কাছে এক একটা সম্পর্ক এক একটা বস্তা-বইতে পারি না, মেনটেইন করতে পারি না। রাত একটায় নাদিম একটা আখ নিয়ে আমার রুমে হাজির। "ভাইয়া বলেছিলাম না আসব? এটা আপনার জন্য এনেছি। " শক্ত আখ কামর দিয়ে দাত ভেঙ্গে ফেলেছি, আখের চামড়া তুলতে পারিনি।

নাদিম হাসে। আমি আর কথা বাড়াই না। ক্লান্ত দেহ, চোখ জুড়িয়ে আসছে। নাদিমকে বিদায় দিয়ে কোন মতে বিছানায়। পরদিন বায়না ধরেছে নাদিম।

"ভাইয়া মিতা আপুকে গান শোনাব, ব্যবস্থা করতে হবে। " মিতাকে বলাতে এক কথায় রাজী। নাদিম আরো বায়না ধরল-বিরিয়ানি খাওয়াতে হবে, চকোলেট খাওয়াতে হবে, কোক খাওয়াতে হবে, মিষ্টি খাওয়াতে হবে। " বিরিয়ানি বাদে সব কিছুর ব্যবাস্থা করা হলো। আমি মিতা, শাহাদাৎ-সৌমিক-শুভ, নাদিম-সৌমিক চলে এলাম ক্যাম্পাসের সামনের বন্ধু টিলায়।

শিউলি আর আরিফের মান অভিমানে শেষ পর্যন্ত ওরা আসতে পারে নাই। জম্পেশ আড্ডা আর খাওয়া দাওয়া। গীটার-গান-শেয়ালের হুক্কা হুয়া। সারা জীবন মনে রাখার মতো সন্ধ্যা। রাতে আমি আর নাদিন সারা ক্যাম্পাস হাটলাম।

পরদিন আবার বায়না, ওদের সাথে ঘুরতে যেতে হবে, ছবি তুলতে হবে। শাওনকে নিলাম সাথে। নাদিম ও কৃষি অনুষদ ষষ্ঠ ব্যাচ বের হালম ঘুরতে। কফিহাউজ পেরিয়ে, ইকো পার্ক, অক্সিডেন্টালের মাঝের ছরার পার, চা বাগান, কাশ ফুল। ফ্ল্যাশ-ফ্ল্যাশ।

প্রত্যেকটি আনন্দের মুহুর্ত ক্যামেরায় বন্দি। কেউ মুখ ভেঙ্গচিয়ে, কেউ দাত কেলিয়ে। আরেকটি মজার দিন, নাদিমের সাথে। নাদিম চলে যাবে বৃহস্পতিবার। বুধবার সারারাত আমার সাথে থাকার কথা ।

জিনিয়রটা চলে যাবে। আমাকে সবার সামনে ভাই ডাকল, এভাবে ও কে যেতে দেয়া যায় না। আমার রুমে বিশাল আয়োজন। হাতে ওতো টাকা ছিল না, তবু এর ওর কাছ থেকে ধার নিয়ে ওর জন্য কিছু গিফট কিনলাম। সব কাজ বাদ।

রাত ১১টায় ফোন দিলাম ও কে-"কি ব্যাপার ভাইয়া কই তুমি?" "ভাইয়া আমি তো আজ আসতে পারবো না, কাল চলে যাব, রুমমেটদের আজ রাতটা দিতে চাই। তাছাড়া ১২টার দিকে আরিফ ভাইয়ের সাথে বের হবো। " মেজাজ টা চট করে খারাপ হয়ে গেল। কিছু বললাম না। যা আয়োজন করেছিলাম-সব নষ্ট করলাম।

সারে বারটার দিকে ও এসে স্যরি বলে গেল। আমি চুপচাপ বিদায় দিলাম। বৃহস্পতিবার। আমি জানি আজ নাদিম চলে যাবে। ক্যাম্পাসে বের হওয়ার সময় সাবধানে, নাদিম যেদিকে আমি উল্টা দিকে।

ওর সাথে দেখা করা যাবে না। সন্ধ্যায় কয়েকবার কল দিল। আমি বললাম-"তুমি চলে যাও, আমার দেরী হবে। " আমি জানি সে ৮টায় ক্যাম্পাস ছাড়বে। ইচ্ছা করে সারে আটটায় হলে ফিরলাম।

একটু পরে সামনে এসে দাড়াঁল। -কি ব্যাপার, তুমি যাও নাই? -না ভাইয়া, আপনার সাথে দেখা না করে কিভাবে যাই? -আমি জানি আপনি আমার উপর রেগে আছেন। আমি ও কে নরমাল করার চেষ্টা করলাম। কাঁধে হাত রাখলাম। ও পকেট থেকে একটা পিক (গীটার বাজানোর যন্ত্র) আমার দিকে এগিয়ে দিল।

নীল রঙের পুরানো পিকটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল-"এটা আমার সাধের জিনিস, এই পিকটা দিয়ে আমি প্রথম গীটার বাজানো শিখেছি। এটা কাউকে আমি ধরতে দিইনা। আপনাকে দিয়ে গেলাম। " আমি কিছু বলতে পারছিলাম না। খুব কষ্ট পেলে আমি কথা বলতে পারি না।

আগে চোখ দিয়ে পানি পড়ত, এখন শরীর কাঁপে। নাদিম তার চোখের কয়েক ফোঁটা অশ্রু....কি লিখব.....লিখাই আটকে যাচ্ছে। হলের বারান্দায় টিউব লাইটের নীচে আমার দুটি ভাই কাঁধে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। একজন পাথর, কেউ কথা বলছে না। অনেক্ষন পরে আমিই কথা বললাম।

-খেয়েছ? -না -তোমাকে এগিয়ে দিতে কে যাচ্ছে? -কেউ না। -ব্যাগ নিয়ে বালুচরে যাও, আমি আসছি। যাওয়ার সময় আরিফকে কল করা হল আমার মোবাইল থেকে "আরিফ ভাই আমি যাচ্ছি, যাওয়ার সময় দেখা করতে পারলাম না। " অতি অভিমানেই মনে হয় আরিফ বলে উঠল "যা ভাগ" তখন আরিফের মনে কি তুফান বইছিল আমি বুঝতে পেরেছি। গনজাগরণ মঞ্চের সাথে জড়িত থাকার কারনে আমাকে প্রান নাশের হুমকি দেয়া হয়েছে।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, শুভাকাঙ্খিদের কড়া নিষেধ-একা বাইরে যাওয়া যাবে না। রাতের বেলা তো হারাম। তবু নাদিমটাকে এগিয়ে দিতে সিলেট রেলষ্টেশনে যেতে মন চাইছে। শুভ সাথে যেতে চেয়েছিল। ও কে নিই নাই।

শেষবেলায় নাদিমকে একটু একা সময় দিতে চাই। সিএনজিতে উঠে আমি কথা বলার পরপরই ভেউ ভেউ করে কেঁদে উঠল নাদিম। নিজেকে সামলানো মুশকিল। ওর কাঁধ ধরে, মাথার চুল গুলোতে বিলি করে ইজি করার চেষ্টা করলাম। নিজেকেই সান্তনা দিতে পারছি না।

ওর গলা ধরে আমারও কাঁদতে মন চাইছে। সৈকত , রাহিম, রেহানের মতো আরেকটা ভাই পেলাম। হাসানোর চেষ্টা করলাম নাদিমকে। "ছেলে মানুষ এরকম করে কাঁদে নাকি? গাধা !!!" মৌসুম সুদিপ্ত, মুন্নাকে কিভাবে ঘায়েল করেছিল সে কথা উঠল। মৌসুমের সাথে বাজি ধরেছিল-কে বেশি খেতে পারে, সুস্মিতা ও কে নুডুলস রান্না করে খাইয়েছে, প্রজ্ঞা ওর কাছে একটা মেমরীকার্ড চেয়েছিল, সুনন্দা যে পাতাটিতে লিখে কবিতা পরেছিল ঔটা আসার সময় নাদিম কে দিয়ে দিয়েছে....আরো কতো কথা ! এই হাসি এই কান্না !! ট্রেন ছাড়বে রাত ১০টায়।

শ্টেশন থেকে খাওয়ার কিছু কিনে দিলাম। একটু পড়েই ট্রেন ছাড়বে। প্ল্যাটফর্মে দাড়িয়ে আছি। হঠাৎ করেই ঝুম বৃষ্টি নামল। ছল ছল চোখে নাদিম বলে উঠে-"দেখলেন ভাইয়া, আমি চলে যাচ্ছি, সিলেটের প্রকৃতিও কেঁদে উঠল" কোন মতে আমি চোখের পানি আটকাই।

"কবে আসবা আবার?" "যেদিন ভাল একটা সাবজেক্টে চাণ্স পাব, সেদিন রাতেই সিলেটের ট্রেন ধরব। আপনাদের সারপ্রাইজ দেব। আমাকে কিন্তু ২টা টি-শার্ট কিনে দিতে হবে। আমরা সারা রাত গান গাইব। মিতা আপুকে নিয়ে ঘুরতে যাব হামহাম, আপনি কিন্তু বাধা দিতে পারবেন না।

" ট্রেনের হুইসেল পড়ে। ঘুড়তে থাকে চাকাগুলো। নাদিম আমাকে জাপটে ধরে। এ বাঁধন ছেড়ার নয়। আমি জোড় করে ওকে ট্রেনের দরজার দিকে ঠেলে দিই।

ওর হাতটা ধরে পিচ্ছিল প্ল্যাট ফর্মে ট্রেনের সাথে পাল্লা দিয়ে দৌড়াই। এক সময় ছেড়ে দিই। চিৎকার করে কেঁদে নাদিম বলে উঠে-"আপনাকে খুব মিস করব ভাইয়া" আমি আর পারি না। চোখ দিয়ে দরদর করে পানি পড়ে যায়-"তোকেও অনেক মিস করবরে পাগলা" সামনের ১৯ এপ্রিল কৃষি অনুষদের জন্মদিন। আমরা ছিলাম প্রথম ব্যাচ।

অনুষদটাকে আমরা পরিবার বলতাম। কতো মানুষ, কতো সুখ স্মৃতি। একদম যে ঝামেলা নেই তা বলব না। ছোটভাইয়ের পাতে মাছ গেলে বড় ভাই যেমন রাগ করে কিংবা আপুর জন্য ঈদের জামা না আনলে যেমন রাগ হয় অথবা দাদা-দাদীর যেমন মান অভিমান তেমন আরকি। সময়ের সাথে সে ঝামেলা গুলো মিটে যায়।

পরিবার আবার আনন্দ মুখর হয়ে উঠে। কৃষি অনুষদ পরিবার তথা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিল আমাদের নাদিম। নাদিম চলে যাওয়াতে খুব কষ্ট লাগছে। ভাল থাকিস ভাই আমার । আমরা তোকে খুব মিস করব।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।