গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী কলগার্ল সাথীকে নিয়ে নিজ বাসায় ফুর্তিতে মত্ত ছিলেন ওসি মোকসেদুল মোমিন। এমন সময় সন্তানসহ বাসায় হাজির স্ত্রী। নক করতেই দরজা খোলেন ওসি মোমিন। এ সময় ঘরের ভেতরে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় ছিলেন তিনি ও সাথী। এ দৃশ্য দেখেই রেগে যান স্ত্রী।
তিনি চিৎকার করতেই স্ত্রীর মুখে টিপে ধরেন ওসি। নিয়ে যান ঘরের ভেতরে। এরপর কলগার্লের সামনেই স্ত্রীকে বেদম মারপিট করতে থাকেন। স্ত্রীর আর্তনাদে ছুটে আসেন থানার অন্য কর্মকর্তারা। ছুটে আসেন এলাকার মানুষও।
এদৃশ্য দেখে সাধারণ মানুষ ক্ষেপে উঠলে কলগার্লকে নিয়ে পালাতে থাকেন ওসি। আর শ’ শ’ মানুষ তার পিছু ধাওয়া করে প্রায় আধঘণ্টা কলগার্লসহ আটকে রাখে তাকে। সিলেটের গোয়াইনঘাট থানায় রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ওসি মোকসেদুল মোমিন রোববার সকালে থানা কম্পাউন্ডের পাশে তার বাসায় নিয়ে আসেন কলগার্ল সাথীকে। দিনভর তাকে নিয়ে আমোদ ফুর্তিতে মত্ত ছিলেন।
এ খবর পৌঁছে যায় ঢাকা থাকায় তার স্ত্রীর কাছে। তিনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া সন্তানকে নিয়ে ছুটে আসেন সিলেটে। রাত ৯টার দিকে গোয়াইনঘাটে গিয়ে পৌঁছেন। তারপর সন্তানকে নিয়ে হাজির হন বাসায়। রাতে ওসির স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তিনি মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করছেন এ খবর পেয়ে সিলেটে আসেন।
টোকা দিতেই দরজা খোলেন মোমিন। ওই সময় ঘরের ভেতরে সাথীকে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি এ দৃশ্য দেখে ক্ষেপে গেলে ওসি মোমিন তাকে মারধর শুরু করেন। পরে তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। এদিকে স্থানীয় লোকজন এ দৃশ্য দেখে ক্ষেপে যান।
তারা ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল শুরু করলে ওই কলগার্লসহ বাসা থেকে রাত পৌনে ১০টায় সিএনজি অটোরিকশাযোগে পালাতে থাকেন তিনি। রাত ১০টার দিকে উপজেলার বাঘের সড়ক এলাকায় জনতা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটক করে। ওখানে স্থানীয় লোকজনের হাতে প্রায় আধঘণ্টা আটক ছিলেন ওসি। পরে খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থেকে পুলিশ গিয়ে জনতার কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় সাথীকে নিয়ে সিলেট তামাবিল মহাসড়কে এসে অন্য একটি যাত্রীবাহী গাড়িতে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওসি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসির সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় পাওয়া কলগার্লের নাম খাদিজা আক্তার সাথী ওরফে সুখী। সে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার হাজারবিঘা গ্রামের ইসমাইল শিকদারের মেয়ে। বছর খানেক আগে জাফলং লাখেরপার গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পরে ডিভোর্সও হয় বলে স্থানীয় লোকজন জানান। এদিকে ওসি মোকসেদুল মোমিনের অপসারণ দাবিতে গোয়াইনঘাট বাজারে কয়েক শ’ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ সময় তারা থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা চালালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আজিজুর রহমান মাস্টার এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনে সুপারিশ করা হবে জানিয়ে জনগণকে আশস্ত করেন। ঘটনার খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানায় ছুটে যান উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন মাস্টার, নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। মধ্যরাতে সিলেটের এডিশনাল এসপি মো. ইব্রাহিম, এএসপি সার্কেল উত্তর বীণা রাণী দাশসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গোয়াইনঘাট থানা পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত সাড়ে ১২টায় সিলেটের এডিশনাল এসপি মো. ইব্রাহিম সাংবাদিকদের জানান, আপাতত তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। তদন্ত করে ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাঘের সড়ক এলাকায় জনতা কর্তৃক অবরুদ্ধকালে ওসি মোকসেদুল মোমিন গোয়াইনঘাটের সাংবাদিকদের জানান, সাথে থাকা মহিলা তার স্ত্রী। চার বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়েই যদি হয়েছে তবে রাতের বেলা পালিয়ে এলেন কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। এ ব্যাপারে তার স্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ওই কলগার্লসহ একাধিক নারী নিয়ে সে দীর্ঘদিন থেকে আমোদ ফুর্তি করে আসছে। রোববারের ঘটনা তারই একটি অংশ।
তিনি দাবি করেন, ঘটনার পর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীন আছেন। স্থানীয় লোকজন জানান, গত বছরের ২৮শে ডিসেম্বর গোয়াইনঘাটে তার যোগদানের পর হতে প্রায় প্রতি রাতেই তিনি থানা অভ্যন্তরের বাসভবনে তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে কলগার্লদের নিয়ে ফুর্তি আমোদ করে আসছিলেন। আর তাকে এসব অপকর্মে সার্বিক সহায়তা করতো গোয়াইনঘাট থানার কিছু দালাল। সমপ্রতি জাফলংয়ের হোটেল প্যারিস থেকে আটকৃত এক পতিতাকে নিয়েও ওসি মোকসেদুল বাসায় রাত কাটিয়েছেন বলে জানা যায়। ওসির এই অপকর্মের ব্যাপারে অন্য অফিসারদের জানা থাকলেও কেউ মুখ খুলে কখনও প্রতিবাদ করেননি।
ইতিপূর্বে হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার ওসি থাকাকালেও নারীঘটিত কারণে তিনি বদলি হন বলে জানা গেছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।