আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহারার লক্ষ্মীমন্তর ক্রাউন সারস

http://farm5.staticflickr.com/4084/5106907209_d4c9a50a8b_z.jpg শাপলা বড়ুয়া গ্রীষ্মের দাবদাহে কেমন খটখটে হয়ে আছে আফ্রিকার সাহারার দক্ষিণের গ্রামগুলো। এক আধটু বৃষ্টির দেখা পেতে সেই কখন থেকে আশায় বুক বেঁধেছে সবাই। এদিকে পানি না পেয়ে এই ক’দিনেই পাংশুটে হয়ে পড়েছে সবুজ ক্ষেতগুলো। যদিও কালেভদ্রে এদিক-ওদিক কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে কিন্তু তাও আবার সাগরে গোষ্পদের ন্যায় সেই পানিটুকু জমিন আর এর ওপরের ধুলোমাটি টেনে নেয়ায় ফের ঠনঠনে কাষ্ঠং-শুষ্কং হয়ে পড়েছে চারপাশ। এরই মধ্যে কেউ কেউ আগুপিছু না ভেবে ছুট দিয়েছে ফের ঈশ্বরের বাড়ি।

অর্থাৎ বৃষ্টি না ঝড়িয়েই মেঘের ভেলা ভেসে চলে গেছে আরও ওপরে, দূরে। তবে, যদি ঈশ^র সহায় হন তাহলে হয়তো দীঘল গলার সারসদের পা পড়বে এখানে। ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে আকসার ভরে উঠবে মাঠ-ঘাট-নদী-নালা সব। এমনই আশা নিয়ে প্রকৃতির করুণাকামী হয়ে অপেক্ষায় নিরন্ন চাষীরা। হঠাৎ গাঁক গাঁক করতে করতে আকাশে পাক খেয়ে গেল লম্বাই ঠ্যাংয়ের এক ঝাঁক সারস।

গ্রামবাসীদের নিরব আর্তি শুনতে পেয়েই বুঝি ছড়ানো পাখায় ভর করে বর্ষা আসার খবর জানিয়ে দিয়ে গেল ওরা। আর এমনি করেই সোনার বরণ রাজমুকুট মাথা চড়িয়ে সকলের ভালো-মন্দ দেখতে বেড়িয়ে পড়ে রাজকীয় সারসের দল। কেবল তাই-ই নয় বাচ্চা পাড়ার সময় এলেও নানান কায়দা নিয়ে নাচে মজে উঠে ক্রাউন দম্পত্তিরা। কখনও ঠোঁট উঁচিয়ে বিকট ডাক ছেড়েছি কী অমনি কথা বলার ঢঙে নীচে নামিয়ে আনছে মুখটিকে। পরমূহুর্তেই আবার লাফ দিয়ে নিজেদের মত করে নিয়ে নিচ্ছে বাঁক।

এ নিয়ে খুশীর জোয়ারেও ভাসতে থাকে গ্রামবাসীরা। কেননা ক্রাউনরা যে বরাবরই লক্ষ্মীমন্তর হয়ে দেখা দেয় ওদের কাছে। যদিও বিল-ঝিল ও ঝোপ-ঝাড়ের বাসিন্দা এরা এরপরও বেশ আয়েশী মেজাজেই ঘুরে বেড়ায় গ্রামের পথে-প্রান্তরে। বিশেষ করে ছাইরঙা ক্রাউনরা তো সুযোগ পেলেই ক্ষেতে ঢুকে চিবুতে থাকে ভূট্টা, বজরা ও চীনেবাদামের মত নানান সব দানাপানি। তাই বলে গ্রামবাসীরাও তেমন ঝুটঝামেলার মনে করে না ওদের।

বিশেষত পশ্চিম জায়ার, কেনিয়া, তানজানিয়া ও উগান্ডার বাসিন্দাদের কাছে সাচ্চা পয়মন্ত রাজসিক এই সারসেরা। আর উগান্ডায় ছাইরঙা ক্রাউনদের সমাদর এমনই উঁচুতে যে শুধু ওখানকার জাতীয় পাখীই নয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এদের জাঁকালো ঠমক। এমনকি জাতীয় পাতাকার গায়েও জায়গা করে নিয়েছে এরা। অবশ্য সময়ের ফেরে পরিবেশ ধ্বংসসহ অন্যান্য কারণে কমে যাচ্ছে ওদের সংখ্যা। এরপরও ঢ্যাঙ্গা পায়ের দৃষ্টিনন্দন ক্রাউনরা আফ্রিকানদের কাছে পয়মন্ত পাখি হওয়ায় তারা অন্যান্য হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিগুলোর তালিকায় ঠাঁই নেবে না- এটাই প্রত্যাশা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.