বাংলাদেশি পোশাকের নতুন সম্ভাবনার দ্বার মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক শিল্পের নতুন বাজার হিসেবে দেখা হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশি পণ্য ও সেবার মেলা 'শোকেজ বাংলাদেশ-২০১২' আয়োজন সম্পর্কিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, সে দেশের সরকার ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকসহ ৩০০টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মালয়েশিয়ায় বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রফতানি করা যাবে। এ ছাড়া হোম টেক্সটাইল, পাট ও পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প, চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, হারবাল পণ্য, রাবার, প্লাস্টিক, সিরামিক, টেবিল ওয়্যার, হালাল খাদ্য রফতানির সুযোগ রয়েছে।
ডিসিসিআইয়ের সহায়তায় বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। ডিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট আসিফ ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও মেলা আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়, এমসিসিআইর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নূরুল ইসলাম, মহাসচিব আলমগীর জলিল, মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নূরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বাংলাদেশের শিল্প খাতে বিদ্যমান সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, দেশের ইমেজ ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য মালয়েশিয়ায় এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এতে বাংলাদেশের আবহমানকালের কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্প উদ্যোগ তুলে ধরা হবে। এ মেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে সুসংহত পর্যটন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, কৃষিভিত্তিক শিল্প খাত গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। অতীতে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে নীতির পরিবর্তন হওয়ায় শিল্পায়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শিল্পনীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় এ মেলা আয়োজনের মাধ্যমে সে দেশে বাংলাদেশি পণ্যের ভোক্তা শ্রেণী তৈরি হবে। ফলে মালয়েশিয়ার উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের উৎসাহ পাবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে উদীয়মান শিল্প খাতে মালয়েশিয়ার উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বক্তারা বলেন, বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর সুযোগ করে দিলে মালয়েশিয়া থেকে বছরে দেড় বিলিয়ন ইউএস ডলার বাংলাদেশে আসবে। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রায় ৫ লাখ বৈধ বাংলাদেশি শ্রম শক্তির জন্য দেশে সহজে রেমিটেন্স পাঠাতে আসন্ন শোকেজ বাংলাদেশ-২০১২ তে ব্যাংক ও রেমিটেন্স সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ অবারিত করা হবে।
Click This Link
রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৮ শতাংশ
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭০ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। এটি মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। অবশিষ্ট দুই মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ২২ হাজার ৭৭ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।
রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোঃ নাসির উদ্দীন আহমেদ সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বছর শেষে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
এনবিআর সূত্র জানায়, সাধারণত অর্থবছরের শেষ সময় মে এবং জুনে আদায় আগের মাসগুলোর তুলনায় দেড় থেকে দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সে হিসাবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছে রাজস্ব বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ হারে আদায় বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের আদায় বাড়লেও প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। কেননা, গত অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২৮ শতাংশের বেশি।
মূলত আমদানি পর্যায়ে আদায় কম হওয়ায় প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে। যোগাযোগ করা হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সমকালকে বলেন, যে হারে রাজস্ব আদায় বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে। যে কারণে সরকারের আয়-ব্যয়ের মধ্যে বড় ধরনের অসমতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার মতে, এখন মূল্যস্ফীতির হার ১১ শতাংশ এবং গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার ৬ শতাংশ। এই দুই সূচক বিবেচনায় ধরলে প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ১৭ শতাংশ।
আর রাজস্ব আদায় বেড়েছে ১৮ শতাংশ। সে হিসাবে নিট বা প্রকৃত প্রবৃদ্ধি হবে ১ শতাংশ। অন্যদিকে, সরকারের ব্যয় বেড়েই চলেছে। কাজেই আগামী দিনে রাজস্ব আদায় বাড়ানোই হবে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা।
পরবর্তীতে এটি সংশোধন করে লক্ষ্যমাত্রা আরও ৫০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৯২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে খাতভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, আয়কর আদায়ে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আয়কর আদায় হয়েছে ১৯ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। এ খাতে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে আমদানি শুল্ক খাতে প্রত্যাশিত সাফল্য আসেনি।
জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ২৪ হাজার ৪৫৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় বেড়েছে ১১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অথচ গত বছরের একই সময়ে এই খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ২১ শতাংশের বেশি। মূলত মূলধনী যন্ত্রাংশের আমদানি কমে যাওয়া আমদানি শুল্ক আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
বিনিয়োগের প্রতিকূল পরিবেশ বিশেষ করে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা নতুন শিল্প স্থাপনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
সে কারণে মূলধনী যন্ত্রাংশ আমদানি কমে গেছে।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।