ঢাকা শহর নিয়ে আলাদা করে মায়া-মমতা বোধ করার আমার কোনো কারণ নেই। কারণ এখানে আমার গুষ্টির কেউ থাকে না। কখনো থাকেনি। এবং আগামীতে গুষ্টির পরিবর্ধিত কোনো অংশের থাকার সম্ভাবনাও খুবই ক্ষীণ। ঢাকায় বেড়াতে আসার উত্তেজনা এই গুষ্টির জন্য প্রায় নোবেল প্রাইজ পাবার মতো।
এবং সেটা ছাদঅলা যে কোনো একটা ঘরে রাত কাটানোর ব্যবস্থাতেই সাধিত হয়েছে। ফলে এক হিসেবে ধরে নেয়া যায় যে ঢাকা শহর কিংবা এর কোনো উপাদান নিয়ে আমার চাইতে "সম্ভ্রান্ত বংশীয়" কারো চিন্তা করাই অধিক সঙ্গত।
এহেন ব্যাকগ্রাউন্ড সত্ত্বেও গত অনেকদিন ধরে ঢাকা শহরে প্রবহমান গু-য়ের বিষয়ে আমার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল। এই বিপুল পরিমাণ ফ্ল্যাট বাড়ির অগণ্য লোকের বিষ্ঠাসম্ভার নিয়ে স্যুয়েরেজ সিস্টেম যে কুলিয়ে উঠতে পারছিল না সেটা আমি বিশেষজ্ঞ না হয়েও টের পাচ্ছিলাম। অবশ্য টের পেতে বিশেষ বেগ পোহাতে হয় না।
প্রায়শই রাস্তা ঘাটে চলতে ফিরতে গিয়ে দেখেছি রাস্তার অন্দর মহলের প্রবহমান সারবস্তু কৈশোরের অন্দরমহলীয় উচ্ছ্বাস আর কৌতূহল সমেত রাস্তার উপরে উদ্ভাসিত। তাদের এই উদ্ভাস জনমানসে প্রসন্নতা আনে না। মানুষজন আতঙ্কিত এবং কুণ্ঠিতভাবে এসব অবলোকন করে এবং কামনা করে ম্যাজিকের মতো এগুলো অন্তর্হিত হোক। কিন্তু বাস্তবে এই কৌতূহলী উদ্ভিন্ন বিষ্ঠাপ্রবাহ নিজে নিজে আবার ভূ-গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে না। এটা একটা জটিল ব্যবস্থাপনার বিষয়।
অনেক গু-শ্রমিক কিংবা মেথরের কাজ এগুলো।
ফলে গু-ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আমি, নগর বিশেষজ্ঞ না-হওয়া সত্ত্বেও, খানিক ভাবিত হবার অবকাশ পাই। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, খানিক ভাবনা আমাকে অচিরেই দুর্ভাবনায় নিপতিত করে। এটা তো আর মিথ্যা নয় যে, মানুষজন সেধে সেধে গু-শিল্পের শ্রমিক হতে চান না।
সাম্প্রতিক দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি এ বিষয়ে আমার দুর্ভাবনাকে, পরিশেষে, নিবৃত্ত করে।
উন্নয়নের জোয়ারের কাল শেষ হলে শেষ দফা আমরা মার্শাল তত্ত্বাবধানে থাকি, এখনো রয়ে গেছি। সাম্প্রতিক কালের উন্মাতাল মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশে আরও অনেক সম্মত/উইলিং গু-শ্রমিকের জন্ম দিয়েছে বলে আমার উপলব্ধি। এবং আশা করা যায় নগর রাস্তার এই বিষ্ঠাপ্রবাহের নিষ্পত্তি ঘটাতে যে কোনো শ্রমমূল্যে এই নবাগত গোষ্ঠী রাজি হবে। ফলে ফাংশনাল দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে, যে কেউই বর্তমান কালের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবেন।
ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এই উদীয়মান গু-শ্রমিকদের অবদান বাংলাদেশ চিরকাল স্মরণ রাখবে।
একই সঙ্গে এই দ্রব্যমূল্যকার স্থপতিদেরকেও।
.
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।