চোখে যা দেখি, কানে যা শুনি, তা নিয়ে কথা বলবোই ! অতি সম্প্রতি সিলেটের অনেক রাস্তার দুই ধারের ফুটপাত বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে । এ জন্যে সিটি করপোরেশনসহ তাদের দল প্রশংসার দাবীদার । কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, নির্মিত ফুটপাত দিয়ে সাধারন লোকজনের চলাচল করতে পারেনা । খানা-খন্দ, পীচঢালা পথ মাড়িয়ে শকটের সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলা ফেরা করতে হয় । আর নব নির্মিত ফুটপাতটি প্রভাবশালী দোকানদারের দখলে ।
আগে জানতাম ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে নিম্নআয়ের লোকজন জীবিকার তাগিদে বসতো এবং পুলিশের তাড়া খেয়ে মালামাল নিয়ে যা পারতো তাই নিয়ে পালাতো । পরে পুলিশ ফেলে যাওয়া মালামাল কুড়িয়ে রিক্সায় করে থানায় নিয়ে যেতো । বর্তমানে চিত্র ভিন্ন, কয়েকটি রাস্তার ফুটপাতের বর্ণনা দিলেই পাঠক বা ভোক্তভোগীরা সহজেই বুঝতে পারবেন । যেমন- জেল পয়েন্ট হয়ে সোজা কিশোরী মোহন বালিকা বিদ্যালয়ের আগে শাহচান্দগাজীর মোড় পর্যন্ত সদ্য নির্মিত ফুটপাতটি প্রভাবশালী রেস্টুরেন্টের মালিক, মোটর সাইকেল মেরামতকারী দোকারের মালিক এবং মসল্লা মিল মালিকদের দখলে । চেরীর মোড় হতে ইডেন গাডেন স্কুল এন্ড কলেজের মোড় পর্যন্ত ফুটপাতটি এক প্রভাবশালী জিআই পাইপের মালিকের দখলে ।
যে কোন সময় স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রী বা অভিভাবকের গায়ে লেগে এক অনাকাংঙিত ঘটনা ঘটতে পারে। স্টিলের ফার্ণিচারের মালিকেরা পুরো ফুটপাত দখল করে আছে, দেখে মনে হয় ফুটপাতে তাদের মালামাল রাখলে বিক্রি বাড়বে । আনন্দ টাওয়ার পার হলে অবস্থা আরো খারাপ । ফুটপাতের চিহৃ পর্যন্ত নেই । আবার চেম্বার বিল্ডিং এর ফুটপাত ধরে সোজা বারুতখানা গলি পর্যন্ত খুবই কস্ট ।
চেম্বার বিল্ডিং পার হয়েই গ্রিলের ওর্য়াকশপ, ওয়েলডিংএর কাজ চলছে ফুটপাতের উপর আপনি ভয়েও ফুটপাতে উঠবেন না । তারপর স্টিলের শীট কেটে পেটি, ট্যাংকসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ফুটপাতে পেটাচ্ছে। জেলের সামনে অসংখ্য দর্শনার্থী তাদের বসার জায়গা না থাকায় ফুটপাত দখল করে আছে । এই দর্শনার্থীদের দিয়ে রীতিমত বাজার বসিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ ব্যবসা করে নিচ্ছে তাদের পোষ্যদেরকে দিয়ে । চেম্বার বিল্ডিং এর ফুটপাত ধরে পূর্ব দিকে গেলে দেখবেন, ফুলের দোকানীর আর্বজনার স্তুপ ।
এই গেল শহরের এক পয়েন্টের বিবরণ । এ চিত্র শেষ হবার নয় ।
ফুটপাত হতে এ প্রভাবশালীদের মালামাল সরানোর কি কোন আইন করপোরেশনের নেই ? আপনার সাধারন জনগন লক্ষ লক্ষ আর প্রভাবশালী দোকানদার শত শত, কার ভোটের পাল্লা ভারী ? অনেকের ধারনা, সিটি কর্পোরেশনের এক শ্রেনীর অসাধু কর্মচারী মাসোয়ারা নিয়ে ফুটপাতের এই কর্মটি করছে বেশ ভালো করেই। ফুটপাত হতে প্রভাবশালীদের উচ্ছেদ করা না গেলে তাদেরকে আইন সম্মত ভাবে ফুটপাতটি লিজ দেয়া যেতে পারে। তাতে কর্পোরেশনের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং জনগন পানির বিল, ট্যাক্স হতে একটু রেয়াত পাবে।
এবারের কর্পোরেশন বাজেট প্রণয়নে ফুটপাত ইজারা দেওয়ার ব্যাপারটি চিন্তা ভাবনা করা যেতে পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।