আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্কার পুরস্কারের ইতিহাস

গল্পের রাজত্বে বসবাস করছি আপাতত শুধু চলচ্চিত্রের ইতিহাসেই নয়, বিশ্বের শিল্প সাহিত্যের ইতিহাসে অস্কার পুরস্কার সবচেয়ে আলোচিত, সম্মানজনক পুরস্কার। ১৯২৯ সালের ১৬ মে হলিউডের রুজভেল্ট হোটেলের ব্লজম রুমে প্রথম অস্কার পুরস্কার দেয়া হয়। চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রাচীনতম, জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী এই পুরস্কার দিয়ে থাকে একাডেমি অব মোশন পিকচার্স এণ্ড সাইন্স (এএমপিএএস) নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে ১৯৭২ সালে এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়। ১৯৩৫ সাল থেকে প্রিন্সওয়াটারহাউস (বর্তমানে প্রিন্সওয়াটার হাউস কর্পোরেশন) এই পুরস্কারের জন্য ভোট গ্রহণ করে আসছে।

১৯২৭ সালের ১ আগস্ট থেকে ১৯২৮ সালের ১ আগস্ট নাগাদ যে সব চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিলো তারমধ্য থেকেই এই পুরস্কার বিতরণ করা হয়। আমেরিকার আকাডেমি অব মোশন পিকচাস আর্টস এণ্ড সাইন্স নামের প্রতিষ্ঠান ১৯২৭ সালে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞানের সমন্বয় চলচ্চিত্র নামের যে মাধ্যম গড়ে উঠেছে তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রবর্তন করবে এবং সংশ্লিষ্টদের উৎসাহী করে তুলবে। এর ফলেই জন্ম হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র পুরস্কারের। এই পুরস্কারটির নাম আসলে একাডেমি এওয়ার্ড অব মেরিট আর পদকটির নাম অস্কার। আজ অস্কার নামেই পুরস্কার ও পদক দুটোই পরিচিত।

অস্কার নামটি কী করে এলো তা নিয়ে সুনিশ্চিত কোন ধারণা নেই। কেউ বলে থাকেন একাডেমি লাইব্রেরিয়ান মার্গারেট হারিক এই পুরস্কার দেখে বলেছিলেন এই পদকের মানুষটি দেখতে তার চাচা অস্কারের মতো, সেই থেকে এই নামকরণ। আরেকটি মত হলো, ১৯৩৪ সালে ৬ষ্ঠ অস্কার প্রদানের সময় হলিউডের কলাম লেখক সিডনি সোলস্কি ক্যাথারিন হেপবার্নের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারটিকে অস্কার বলে সম্বোধন করে ছিলেন। মত যাই হোক, ১৯৩৯ সাল থেকে একাডেমি এওয়ার্ড অব মেরিটকে অস্কার নামে ডাকা শুরু হয়ে যায়। বিখ্যাত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এমজিএম-এর শিল্প নির্দেশক সেডরিক গিবসন অস্কার পদকের নকশা করেন।

এই ট্রফিতে দেখা যায় একজন নাইট ফিল্ম রিলের উপর দাঁড়িয়ে আছেন আর তার ক্রুসেডের তরবারি। লস এঞ্জেলেসের ভাস্কর জর্জ স্ট্যানলি এই নকশা অবলম্বনে ত্রিমাত্রিক ট্রফি নির্মাণ করেন। ১৯২৯ সালে প্রথম প্রবর্তনের পর থেকে আজ পর্যন্ত মোট ২৮০৯টি পদক বিতরণ করা হয়েছে। সাড়ে ১৩ ইঞ্চি উচ্চতার এই পদকটির ওজন সাড়ে আট পাউন্ড। ব্রোঞ্জের এই পদকটি ২৪ ক্যারেটের সোনায় মোড়ানো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ধাতুর সরবরাহ কমে যাওয়াও তিন বছর অস্কার পদকটি রঙ করা প্লাস্টারে বানানো হয়। যুদ্ধ শেষে অবশ্য এই পদকগুলো ফেরত নিয়ে নতুন করে ধাতু ও সোনায় মোড়ানো পদক দেয়। গত ৮৩ বছর ধরে এই পুরস্কার বিশ্বের চলচ্চিত্র প্রেমী ও কর্মীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, লোভনীয় এবং বিতর্কিত পুরস্কার হিসাবে আলোচনার শীর্ষে রয়ে গেছে। মাত্র ২৭২ জন লোক নিয়ে ১৯২৯ সালের ১৬ মে রুজভেল্ট হোটেলে এ পুরস্কারের সূচনা হয়েছিলো। প্রথম বছরে পুরস্করপ্রাপ্তদের তিন মাস আগেই জানিয়ে দেয়া হয়েছিলো, ফলে মূল অনুষ্ঠানে কোন চমক ছিলো না, স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা ছিলো।

পরের বছর থেকে একাডেমি সিদ্ধান্ত নেয়, কোন পুরস্কার প্রাপ্তকে আগে থেকে জানানো হবে না, তবে ঐদিন সকালেই পত্রিকাগুলোকে জানিয়ে দেয়া হতো। ১৯৪০ সালে লস এঞ্জেলস টাইমস বিকালের সংস্করণে পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ছেপে দেয়। এর ফলে ১৯৪১ সাল থেকে আগেভাগে কাউকেই পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম আর জানানো হয় না। ১৯৪১ সাল থেকেই নিয়ম করা হয়, মূল অনুষ্ঠান চলাকালে খাম খুললেই কেবলমাত্র খাম খুললে জানানো যাবে কে পুরস্কার পেয়েছে। আজ পর্যন্ত সেই খাম খোলার চমক অটুট রয়েছে।

১৯২৯ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ১৫টি পদক দেয়া হয়েছিলো। সে বছর সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন জার্মান অভিনেতা এমিল জ্যানিংস, যাকে পুরস্কারের আগেই দেশে ফিরতে হয়েছিলো। তাই তার পুরস্কারটি সবার আগে নির্মাণ করে অনুষ্ঠানের আগেই দিয়ে দেয়া হয়। সেই বিবেচনায় প্রথম অস্কার পদক নির্মাণ করা হয় এমিল জ্যানিংসকে দেয়ার জন্য। প্রথম পুরস্কার অনুষ্ঠানটি খুব একটা নজর কাড়েনি।

কিন্তু পরের বছর থেকেই এটি পত্রিকা ও বেতার কেন্দ্রগুলোর কাছে আকর্ষণীয় একটি ইভেন্টে রূপান্তরিত হয়। লস এঞ্জেলস রেডিও দ্বিতীয় বছরের পুরস্কারটি এক ঘণ্টার লাইভ অনুষ্ঠান হিসাবে প্রচার করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অস্কার অনুষ্ঠান লাইভ প্রচার চলছে। ১৯৫৩ সাল থেকে টিভিতে অস্কার অনুষ্ঠান লাইভ প্রচার শুরু হয়। একটি রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে যে অনুষ্ঠানের লাইভ প্রচার শুরু হয়েছিলো আজ বিশ্বজুড়ে শ’খানেক দেশের টিভি চ্যানেলে এটি সরাসরি দেখানো হয়।

অস্কারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার হলো সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯২৭ ও ১৯২৮ সালের ছবিগুলোর মধ্য থেকে প্রথম অস্কারে কোন সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার ক্যাটাগরি ছিলো না। এর বদলে দুটো পুরস্কার ছিলো, একটি হলো সবচেয়ে অনন্য চলচ্চিত্র (গড়ংঃ ঙঁঃংঃধহফরহম চরপঃঁৎব) যা পায় উইংস, অন্যটি হলো সবচেয়ে শৈল্পিক মানসম্পন্ন প্রযোজনা (গড়ংঃ অৎঃরংঃরপ ছঁধষরঃু ড়ভ চৎড়ফঁপঃরড়হ) যা পায় সানরাইজ। দুটো পুরস্কারই সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। পরের বছর একাডেমি সেরা চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে একটিই পুরস্কার প্রবর্তন করে যাকে তারা অনন্য প্রযোজনা (ড়ঁঃংঃধহফরহম চৎড়ফঁপঃরড়হ) নাম দেয় এবং পূর্ববর্তী উইংসকে এই ক্যাটাগরিতে ঠাঁই দেয়।

এই বিবেচনায় প্রথম অস্কার প্রাপ্ত সেরা ছবি হলো উইংস। তবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে ডাকে হয়েছে। ১৯৪১ সালে সেরা ছবির ক্যাটাগরির নামকরণ আবার বদল হয়, এখন থেকে এ পুরস্কারের নাম হয় অনন্য গতিশীল চলচ্চিত্র (ঙঁঃংঃধহফরহম সড়ঃরড়হ চরপঃঁৎব)। ১৯৪৪ সালে এই পুরস্কারের নাম হয় শ্রেষ্ঠ গতিশীল চলচ্চিত্র (ইবংঃ গড়ঃরড়হ চরপঃঁৎব)। ১৯৬২ সাল থেকে এই পুরস্কারের নামকরণ হয় সেরা চলচ্চিত্র (ইবংঃ চরপঃঁৎব)।

প্রথম বছর সেরা চলচ্চিত্রের জন্যে তিনটি ছবি মনোনয়ন পেয়েছিলো। পরবর্তী তিন বছর পাঁচটি করে ছবি মনোনয়ন পায়। এটি বাড়তে বাড়তে ১৯৩৩ সালে আটটি, ১৯৩৪ সালে ১০টি এবং ১৯৩৫ সালে ১২টি চলচ্চিত্র মনোনয়ন পায়। ১৯৩৭ সাল থেকে ১০টি ছবিকে মনোনয়ন দেয়া শুরু হয় এবং ১৯৪৫ সাল থেকে ৫টি চলচ্চিত্রকে সেরা মনোনয়ন দেয়া শুরু হয়। ২০০৯ সাল থেকে সেরা চলচ্চিত্রের জন্যে আবার ১০টি করে চলচ্চিত্রকে মনোনয়ন দেয়া শুরু হয়েছে।

শুরুতে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারটি তুলে দেয়া হতো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের হাতে, ১৯৫১ সালে থেকে তা দেয়া হয় প্রযোজকের হাতে। বর্তমানে ২৪টি ক্যাগাগরিতে অস্কার পুরস্কার দেয়া হয়। মজার বিষয় হলো একাডেমি এওয়ার্ডের পাশাপাশি স্টুডেন্ট একাডেমি এওয়ার্ডও দেয়া হয়। এই ক্যাটাগরিগুলো হলো : কেন্দ্রীয় চরিত্রে সেরা অভিনেতা, পাশ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতা, কেন্দ্রীয় চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী, পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী, সেরা রূপান্তরিত চিত্রনাট্য, সেরা এনিমেশন চিত্র (২০০১ সালে প্রবর্তিত), সেরা এনিমেশন স্বল্পদৈর্ঘ চিত্র, সেরা শিল্প নির্দেশনা, সেরা চিত্রগ্রহণ, সেরা পোশাক পরিকল্পনা, সেরা পরিচালক, সেরা তথ্যচিত্র, সেরা স্বল্পদৈর্ঘ তথ্যচিত্র, সেরা ফিল্ম এডিটিং, সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র, সেরা মেকআপ, সেরা মৌলিক সুর, সেরা মৌলিক গান, সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য, সেরা মৌলিক কাহিনী, সেরা চলচ্চিত্র, সেরা শব্দ সম্পাদনা, সেরা শব্দমিশ্রণ এবং সেরা ভিজ্যুয়াল এফেক্ট। এবার প্রথম সেরা চলচ্চিত্র হিসাবে অস্কার পাওয়া উইংস নিয়ে কিছু তথ্য জানা যাক : উইংস ১৪১ মিনিটের সাদাকালো এই নির্বাক ছবিটির পরিচালনা করেছেন উইলিয়াম এ. উইলম্যান।

ক্লারা বো, চার্লেস ‘বাডি’ রজার্স, রিচার্ড আর্লেন, গ্যারি কুপার অভিনীত উইংস প্রথম এবং একমাত্র নির্বাক চলচ্চিত্র যা অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছে। ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেস এই চলচ্চিত্রকে ‘সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক অথবা নন্দনতাত্ত্বিক গুরত্বের কারণে’ সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়। একমাত্র চলচ্চিত্র যা অস্কারে ইঞ্জিনিয়ারিং এফেক্টের জন্য পুরস্কার পেয়েছে। সহস্র সহঅভিনেতা, ডজনে ডজনে এরোপ্ল্যান এবং অসংখ্য বিস্ফোরণে সমৃদ্ধ এই ছবি সময়ের বিবেচনায় অনেক অগ্রগামী ছিলো। এমনকি সামরিক বাহিনী থেকে সৈন্য নিয়েও এ ছবিতে কাজে লাগানো হয়েছিলো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং বোমারু বৈমানিকদের নিয়ে এ ছবির গল্প তৈরি হয়েছে। ছোট্ট এক মার্কিন শহরে সিলভিয়াকে পাওয়ার জন্যে ব্যাকুল জ্যাক পাওয়েল ও ডেভিড আমস্ট্রং। জ্যাক বুঝতেই পারে না, পাশের বাড়ির মেয়ে ম্যারি তাকে ভালবাসে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জ্যাক ও ডেভিড দুজনেই যুদ্ধ বিমানের বৈমানিক হয়। তাদের বিদায় নেয়ার আগে সিলভিয়া বুঝিয়ে দেয় যে সে ডেভিডকে ভালবাসে, কিন্তু জ্যাক মনে করে সিলভিয়া তাকেই ভালবাসে।

দীর্ঘ ও কষ্টকর ট্রেনিং চলাকালেই জ্যাক ও ডেভিডের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। ট্রেনিং শেষে একজন ফ্রান্সে আরেকজন জার্মানিতে চলে যায় যুদ্ধ করতে। এদিকে ম্যারি এম্বুলেন্সের ড্রাইভার হিসাবে যুদ্ধে যোগ দেয়। সে ক্রমেই জ্যাকের খ্যাতির খবর শোনে, এমনকি প্যারিসে তার সাথে দেখাও হয়। মদ্যপান অবস্থায় থাকায় জ্যাক তাকে চিনতে পারে না।

জ্যাককে বিছানায় শুইয়ে দিতে গেলে দুজন মিলিটারি অফিসার তাদেরকে দেখে ভুল বোঝে এবং ম্যারি তার কাজ হারিয়ে আমেরিকায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়। ব্যাটেল অব সেন্ট মিহিলে ডেভিডের প্লেন গুলিবিদ্ধ হয়। প্লেন ক্র্যাশ করলেও সে বেঁচে যায়। কিন্তু পালাতে গিয়ে সে গুলিবিদ্ধ হয় এবং দূর্ভাগ্যক্রমে তাকে গুলি করে জ্যাক। কাছে এসে সে বুঝতে পারে প্রিয় বন্ধুকেই ভুল করে গুলি করেছে সে।

অনুশোচনায় ভেঙে পড়ে সে। মৃত্যুর আগে ডেভিড তাকে ক্ষমা করে দেয়। যুদ্ধ শেষ হয়, জ্যাক বীরের বেশে ঘরে ফেরে। সে ডেভিডের শোকতপ্ত মা-বাবাকে সব বলে। ডেভিডের মা বলে, জ্যাক নয়, যুদ্ধই তার সন্তানের মৃত্যুর জন্যে দায়ী।

জ্যাক অবশেষে ম্যারির ভালবাসাকে অনুধাবন করে এবং মূল্যায়ন করে। বহু বছর ধরে ধারণা ছিলো এই মূল্যবান ছবিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পরে প্যারিসের এক ফিল্ম আর্কাইভ সিনেমাথ্যাক ফ্র্যান্সুইস-এ এর একটি নাইট্রেট ফিল্ম উদ্ধার করা হয়। তারপরই এই ছবিকে নতুন প্রিন্ট করে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করা হয়।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।