যেমন কর্ম তেমন ফল।
রাজধানীর আজিমপুর গর্ভমেন্ট এমপ্লয়ীজ অ্যাসোসিয়েশন কমিউনিটি সেন্টারসহ সংলগ্ন প্রায় ৬ কাঠা জমি দখল করে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন শাসক দলের নেতাকর্মিরা। ৬২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান জামালের নেতৃত্বে এই জায়গা দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইডেন কলেজের বিপরীতে সচিব কলোনীর জজ কোয়াটার সংলগ্ন কমিউনিটি সেন্টারের একটি অংশসহ বিশালাকার জমি দখল করে ‘মেসার্স জামাল ডেইরী’ নামে একটি গরু খামার গড়ে তোলা হয়েছে। এই ফার্মে বর্তমান ৩০টি গাভী রয়েছে।
এখানে গরু পালনের জন্য পাকা দেওয়াল ও টিনশেডের ঘর উঠানো হয়েছে। এছাড়াও প্রায় দুই কাঠা জমির উপর বহুতল বিশিষ্ট পাকা ভবন তৈরির কাজ চলছে। ভিত তৈরির পর এখন দেওয়ালর কাজ চলছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খামারটি পরিচালনার দায়িত্বে জৈনক লম্বু সোহেল থাকলেও নেপথ্যে রয়েছেন মতিউর রহমান জামাল। কমিউনিটি সেন্টারের নিচতলায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ডেকোরেটরের ব্যবসা করছিল থ্রী-স্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
এই জায়গা তারা কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনা পরিষদের কাছে থেকে মাসিক ভিত্তিতে ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালাতো। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা এই প্রতিষ্ঠানটিকে উচ্ছেদ করে স্বদেশ নামে নিজে ডেকোরেটর ব্যবসা শুরু করেছেন। কমিউনিটি সেন্টারের যাবতীয় কাজ এখন বাধ্যতামূলক স্বদেশ ডেকোরটরকে দিয়েই করাতে হয় বলে জানাগেছে।
সচিব কলোনীতে এ ধরণের দখলযজ্ঞ চললেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় হতবাক এলাকার মানুষ। তবে কেউই জামালগ্রুপের ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি।
এলাকাবাসীর বক্তব্য, জামাল ক্যাডার নিয়ে চলাফেরা করেন। তাই এব্যাপারে কিছু বললে জীবননাশের আশংকা রয়েছে। পেশাগত পরিচয় গোপন রেখে এই প্রতিবেদকের জামাল ডেইরী ফার্মের ম্যানেজার সুমনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, জায়গা ভাড়া নিয়ে মতিউর রহমান জামাল খামার করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্তসচিব ও গর্ভমেন্ট এমপ্লয়ী কমিউনিটি সেন্টারের সভাপতি ড. খন্দকার শওকাত হোসাইন জানান, ‘এই জায়গা কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি।
এখানে অবৈধভাবে খামার ও স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। ’
গণপূর্তের আজিমপুর ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী উত্পল কুমার দে জানান, ‘জায়গাটি কিভাবে বেদখল হলো কমিউনিটি পরিচালনা পরিষদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তাদের জবাব পাওয়ার পর আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষকে জানাবো। নির্দেশ পেলে আধাঘন্টার মধ্যে দখলদারদের উচ্ছেদ করে দেব।
’
এ বিষয়ে মতিউর রহমান জামাল বলেন ‘কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনা পরিষদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে খামার করেছি। মাসে মাসে ভাড়াও পরিশোধ করছি। ’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্ভাব্য এক কাউন্সিলর প্রার্থী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি-বেসরকারি জমি, দোকান পাট দখলে বেপরোয়া ্হয়ে উঠেছেন মতিউর রহমান জামাল। তার ভয়ে কেউই প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। ’
জানা যায়, তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জালাল ভারতে পালিয়ে ছিলেন।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর দেশে ফিরে আসেন। এখন নিজেকে আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সম্ভাব্যপ্রার্থী বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।