আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেস্টটিউব বেবির জনক নোবেলজয়ী স্যার রবার্ট এডওয়ার্ডস আর নেই । বিশ্ব হারাল একজন ক্ষণজন্মা প্রতিভাধর বৈজ্ঞানিককে

জ্ঞানার্জনকে ব্রত করাই শ্রেয় । টেস্ট টিউবের পথিকৃৎ নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী স্যার রবার্ট এডওয়ার্ডস গতকাল মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে তার পরিবারের জানিয়েছে, অধ্যাপক স্যার রবার্ট এডওয়ার্ডস, নোবেল পুরস্কারজয়ী বিজ্ঞানী, টেস্ট টিউবের পথিকৃৎ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বুধবার ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেছেন। স্যার রবার্ট জিওফ্রে এডওয়ার্ডস ১৯২৫ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের ব্যাটলে শহরে জন্মগ্রহন করেন ।

তার স্ত্রীর নাম রুথ ফাউলার এডওয়ার্ডস । তিনি পদার্থবিদ আরনেস্ট রাদারফোর্ডের নাতনী এবং পদার্থবিদ র‍্যালফ ফাউলারের কন্যা । মৃত্যুকালে তিনি পাঁচ কন্যা এবং বারজন নাতি নাতনী রেখে গেছেন । স্যার এডওয়ার্ডসের প্রথমদিকের ছাত্র অধ্যাপক মার্টিন জনসন বলেন, ‘বব এডওয়ার্ডস একজন অসাধারণ মানুষ। তিনি বহু মানুষের জীবন বদলে দিয়েছেন।

’ অধ্যাপক স্যার এডওয়ার্ডস ২০১০ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ইন-ভিটরো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্যই তাকে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তিনি প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম দিতে সক্ষম হন। এরপর ২০১১ সালে স্যার এডওয়ার্ডস নাইট উপাধি লাভ করেন। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যার এডওয়ার্ডস পঞ্চাশের দশকে বন্ধ্যাত্ব নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

প্রায় তিন দশক গবেষণার পর আইভিএফ প্রযুক্তির মাধ্যমে টেস্টটিউব শিশুর জন্ম দিতে সক্ষম হন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পদ্ধতিতে ডিম্বাণু শরীরের বাইরে নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়ায় টেস্টটিউবে শিশুর জন্ম দেওয়া হয়। ১৯৭৮ সালের ২৫ জুলাই এডওয়ার্ডসের হাতেই জন্ম হয় বিশ্বের প্রথম টেস্টটিউব শিশু লুইস ব্রাউনের। তার এই সফলতায় বর্তমানে বিশ্বের লাখ লাখ বন্ধ্যা দম্পতি আইভিএফ প্রযুক্তির মাধ্যমে সন্তান লাভ করছে। উল্লেখ্য, বিশ্বের শতকরা ১০ ভাগেরও বেশি দম্পতি বন্ধ্যা থাকেন।

আগে এই দম্পতিরা সারা জীবন অস্বাভাবিক মানসিক হতাশায় ভুগত। তাদের জন্য তেমন কার্যকর ওষুধও ছিল না। কিন্তু আইভিএফ প্রযুক্তি সফল হওয়ার পর সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সন্তান নেওয়া একটি প্রতিষ্ঠিত ও কার্যকর পদ্ধতি বলে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৪০ লাখ টেস্টটিউব শিশু রয়েছে।

অধ্যাপক রবার্ট জি এডওয়ার্ডস বাঙ্গোরে ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি ১৯৫৫ সালে অ্যানিম্যাল জেনেটিক্সে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে লন্ডনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল রিসার্চে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। সেখানে তিনি মানুষের সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে প্রথমে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও পরে বিশ্বের প্রথম আইভিএফ সেন্টার বায়র্ন হল ক্লিনিকে কাজ শুরু করেন স্যার এডওয়ার্ডস।

এছাড়াও তিনি রয়্যাল সোসাইটির গবেষণা ফেলো ছিলেন । তথ্যসূত্র - বাংলামেইল২৪ডটকম - তিনি ১৯৮৪ সালে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন । - ১৯৯৪ সালে তিনি স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Doctor Honoris Causa সম্মাননা পান । - ২০০১ সালে তিনি আলবার্ট লস্কর ক্লিনিক্যাল মেডিক্যাল রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড পান । - ২০০৭ সালে তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার জীবন্ত প্রতিভাবান ব্যাক্তিদের তালিকায় ২৬ তম হন ।

- ২০০৭ সালে তিনি হাডার্সফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মাননা পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন । - ২০১০ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার পান । - ২০১১ সালে তিনি নাইট উপাধিতে ভূষিত হন । তথ্যসূত্র - উইকিপিডিয়া তার মত ক্ষণজন্মা বৈজ্ঞানিককে প্রয়ানে পৃথিবীর আকাশ থেকে একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র হারিয়ে গেল । তার বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করছি ।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.