আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুজিব ও হাসিনার স্বপ্ন দিয়েই পদ্মা নদী পার হবে, ব্রীজের কি দরকারঃ মালয়শিয়ার উচ্চ হারে টোলের প্রস্তাব!

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়ার প্রস্তাব নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়ার প্রস্তাব নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে সরকার। মালয়েশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কারণ এই প্রক্রিয়ায় সেতুটি নির্মাণ করা হলে সেটি সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযোগী হবে না। মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মা সেতু নির্মাণের পর এর ওপর দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের টোল কত হবে তার একটি পরিসংখ্যান বাংলাাদেশের কাছে প্রদান করা হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, ২০২৩ সালে পদ্মা সেতু দিয়ে একটি ট্রাক চলাচলে টোল দিতে হবে ২৩ দশমিক ৪০ ডলার (ডলারের সাথে টাকার বিনিময়হার বর্তমান হিসাবে ধরলে তা হবে তিন হাজার টাকা)।

২০৩০ সালে এই টোল বেড়ে হবে ২৬ ডলার। একইভাবে এবং একই সময়ে বাসের টোল হবে যথাক্রমে ১৯ ডলার ৯০ সেন্ট ও ২২ ডলার ১০ সেন্ট। গাড়ির টোল ১০ ডলার। এ ছাড়া মোটরসাইকেলে টোল প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭৫ সেন্ট ও ৮৩ সেন্ট। এভাবে টোল আদায় করা হলে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচলের ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

আর এতে করে বৃদ্ধি পাবে পণ্যসামগ্রীর দামও। তাই পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা। মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করা যেতে পারে বলে তারা মত প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, এই কারিগরি কমিটি গঠন করা হলে মালয়েশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী আদৌ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। একই সাথে মালয়েশিয়া সরকার পদ্মা সেতুর বিষয়ে যে টোল আদায়প্রক্রিয়া ও শর্ত দিয়েছে তা বিশ্লেষণ করে সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট প্রদানও করতে পারবে এই কমিটি।

মালয়েশিয়ার পদ্মা সেতু নির্মাণে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছে। বিনিয়োগের এই অর্থ তুলে নেয়া হবে ৫০ বছর সেতু দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের টোল আদায় থেকে। এই সময় সেতুর পুরো মালিকানাই থাকবে মালয়েশিয়া সরকারের। টোলও নির্ধারণ করে দেবে তারা। যে দেশ বা সংস্থা থেকে মালয়েশিয়া অর্থ ধার নেবে তাদেরকে সুদ প্রদান করতে হবে শতকরা তিন ভাগ হারে।

সেতুটি নির্মাণের জন্য মালয়েশিয়া সরকার কর অবকাশ সুবিধাও দাবি করেছে। একই সাথে সেতুটি তৈরির জন্য সব যন্ত্রপাতি আমদানি করার নিশ্চয়তা দিতে হবে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্তভাবে। সেতু থেকে রাজস্ব আদায় ব্যাহত করতে পারে এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। তার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে গ্যারান্টিও দিতে হবে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পেশ করা মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া একটি ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘একম’-এর (এইসিওএম) হিসাব অনুযায়ী পদ্মা সেতুটি নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ২৮৯ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার।

এর মধ্যে সেতুর মূল অংশ নির্মাণে ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি ২০ লাখ ডলার, নদীশাসনে ৬৩ কোটি ৫৯ লাখ ডলার, শ্রমিকদের রিসেটেলমেন্ট ২৪ কোটি তিন লাখ ডলার, তত্ত্বাবধানের জন্য পরামর্শক খাতে পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ ডলার, পিএমসিটিএ, প্রশিক্ষণে দুই কোটি ৪০ লাখ ডলার, বেইজ কোস্ট ২৩৮ কেটি ৭৯ লাখ ডলার, ভৌত কনটেনজেন্সি আট কোটি ৭১ লাখ ডলার, প্রাইস কনটেনজেন্সি ২১ কোটি ২৬ লাখ ডলার এবং ফি ও আডিসি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ১৪ লাখ ডলার। অন্য দিকে সেতু নির্মাণের পর ৫০ বছর পর মালয়েশিয়া সরকার মোট এক হাজার ১৯৯ কোটি চার লাখ ডলার লাভসহ তুলে নেবে। ২০৫০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন যানবাহন থেকে টোল আদায় করে এই পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করা হবে। সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের একটি প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে ২০১৬ সালে যদি সেতুটি যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া হয় এবং যমুনা সেতুর বর্তমান টোল আদায়প্রক্রিয়া যদি অনুসরণ করা হয় তবে প্রথম বছর অর্থ পাওয়া যাবে তিন কোটি ৪৩ হাজার মার্কিন ডলার।

তবে সেই সময় যদি টোল আদায়ের হার এখন থেকে দ্বিগুণ করা হয় (সেটাই স্বাভাবিক) তবে সে ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে টোল পাওয়া যাবে ছয় কোটি ১৮ লাখ ডলার। এভাবে ২০২০ সালে রাজস্ব আদায় হবে ৮০ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, ২০২৫ সালে ১৮৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, ২০৩০ সালে ৩২৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, ২০৩৫ সালে ৪৯৮ কোটি ৬১ লাখ ডলার, ২০৪০ সালে ৭০০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, ২০৪৫ সালে ৯৩৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার এবং ২০৫০ সালে এই রাজস্ব গিয়ে দাঁড়াবে এক হাজার ১৯৯ কোটি চার লাখ ডলার। পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৭ দফা নীতি ও কর সুবিধাও চেয়েছে। উল্লেখযোগ্য সহায়তাগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ বিওওটি (নির্মাণ, মালিকানা, পরিচালনা ও হস্তান্তর) প্রক্রিয়া মালয়েশিয়ার সরকার এই সেতুর মালিকানা ভোগ করবে ৫০ বছর। সেতু নির্মাণে রাজস্ব ভর্তুকি দিতে হবে, রাজস্ব আয়ের ওপর কর অবকাশ এবং সেতুটি নির্মাণে প্রয়োজনীয় যাবতীয় পণ্যের শুল্ক সুবিধা দিতে হবে।

হঠাৎ করে সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন কোনো শুল্কারোপ না করার নিশ্চয়তা প্রদান। একই ধরনের অন্য কোনো অবকাঠামো এটির প্রতিযোগী হবে না, তারও নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ ছাড়া পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ে গ্যারান্টি দিতে হবে, যাতে এসব কারণে সেতু নির্মাণপ্রক্রিয়া ধীর না হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক প্রতিবেদক http://www.dailynayadiganta.com/details/45211 http://www.mediafire.com/?be7mzt201ets8fe ************************ কানাডার পুলিশ যখন এসললভিন কোম্পানীতে রেইড করে ফাইলপত্র জব্দ ও তাদের কয়েকজন কর্মচারীকে আটক করলে আমরা জানলাম যে তারা পদ্মা সেতুর নির্মাণে র্দূনীতির সাথে জড়িত! সাবেক যোগাযোগ ও বর্তমান টেলমন্ত্রী আবুল হোসেনের সাকো ইন্টারন্যাশনাল নাকি এসললভিন হতে ১৭ মিলিয়ন ডলার ঘুষ চেয়েছে। এই ঘটনার পরে হাসিনার মিষ্টি মিষ্টি রাজনৈতিক কথা ও মুচকি হাসি যে আবুল র্দূনীতি করেছে কিনা তা দুদক খতিয়ে দেখবে।

হাসিনার ভাব খানা এমন দুদক যেন একটি স্বাধীন ও রাজনৈতিক প্রভাব মূক্ত প্রতিষ্ঠান। অথচ জনগণ জানে যে প্রশাসন তো বটেই বিচার বিভাগেও হাসিনার রাজনৈতিক প্রভাব আছে সেখানে দুদকে আরো বেশী প্রভাব। ফলে কি দেখা গেল যে আবুল হোসেন কোন র্দূনীতিই নাকি করেনি। কিন্তু বিশ্বব্যাংক বেকে বসেছে। তারা বলছে যে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যাবস্থা না নিলে তারা পদ্মা সেতুর জন্য ঋণ মঞ্জুর করবে না।

এর সুদের পরিমাণ ০.৭৫%। কিন্তু তারপরেও হাসিনাকে থামায় কে! আওয়ামী নেত্রী বলছেন যে লাগবে না বিশ্বব্যাংকের ঋণ পাব্লিক মিউচুয়্যাল ফান্ড দিয়ে সেতু হবে তা যদি ২০ বছর লাগে লাগুক। আর এরই মধ্যে আলীগ ও মহাজোট সরকারের একাংশ মালয়শিয়ার সাথে যোগাযোগ করে। মালয়শিয়াও তাদের আগ্রহ দেখায়। তারা বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি কেন পুরো অর্থ তথা ৩০০ কোটি ডলারই বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।

ব্যাস আর যায় কই নতুন যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও আওয়ামী অন্ধ সমর্থক-চামচারা আনন্দে আত্নহারা। যে ডঃ ইউনুসের তথাকথিত চক্রান্ত ব্যার্থ করে এবার পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে। তবে আওয়ামী বাটপারদের এই রকম আত্নহারা হলেও একজন বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ তথা অর্থমন্ত্রী মুহিত শুরুতেই বুঝেছেন যে আসল অবস্থা কি দাড়াবে! একেতো বিশ্বব্যাংকের সুদের চেয়ে আট গুণ বেশী সুদ তথা ৬% তার উপর ব্রীজ নির্মাণের শুরু হতেই সুদ গুণতে হবে। যেখানে বিশ্বব্যাংক আরো ১০ বছর পর হতে সুদ গুণবে। আর এই পদ্মা সেতুর বাইরেও বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য খাতে বিশ্বব্যাংকের আরো ৫০০ কোটি ডলারেরও বেশী ঋণ প্রস্তাব আছে।

পদ্মা সেতুর প্রকল্প হতে বিশ্বব্যাংককে সরিয়ে দিলেও বাকী প্রকল্প গুলো কে এবং কম সুদে বিনিয়োগ করবে? এর প্রমাণ এই যে ঢাকার মেট্ররেলের প্রকল্পে জাপানী ঋণও সহজে মঞ্জুর হচ্ছে না। তাই মুহিত মালয়শিয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না! বস্তুত মুহিতের অবস্থানই সঠিক। কিন্তু হাসিনা ও আলীগের রাজনৈতিক এজেন্ডা বলে কথা। যদিও মুহিত বলছেন যে ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে পদ্মা সেতুর কথা নাকি ছিল না কিন্তু হাসিনা ওবয়াদুলকে দিয়ে পদ্মা সেতুর বিষয়ে মালয়শিয়ার সাথে চুক্তি করতে পাঠান। ফলে ওবায়দুল মালয়শিয়ার কলালামপুরে যেয়ে গত মাসের ১০ই এপ্রিল চুক্তি করেন; http://www.thesundaily.my/news/344939 তাই এখন মালয়শিয়ার সাথে চুক্তির চূড়ান্ত বাস্তবায়নের সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে খুটিনাটি বিষয় বিবেচনা হচ্ছে।

তাতে যে অবস্থা দাড়াচ্ছে যে যানবাহনের টোলের হার অত্যাধিক চড়া। তাতে মানুষের পারাপার ও পণ্যের উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। যে বিশ্বব্যাংক ও জাপানের কল্যাণে যমুনা সেতুর সুফল আমরা ভোগ করছি পদ্মা সেতুতে মালয়শিয়ার বিনিয়োগ হলে তার তো সহজ সুফল ভোগ করতে পারবই না উপরন্ত আমাদের জন্য দু্ঃস্বপ্নে পরিণত হবে। হাসিনার বর্তমান সরকারের চরম অনিয়ম-উদাসীনতা, র্দূনীতি-লুটপাটের জন্য বিগত ৩ বছরের বেশী সময়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও যোগাগের কোন উল্লেখযোগ্য উন্নতিই হয়নি। তাই পদ্মা সেতু আদৌ এই মহাজোটের মেয়াদে নির্মাণ কাজ শুরু হবে কিনা তার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।

দেশ ও জনগণের উন্নতি না হউক যতই কষ্টে থাকুক অতীতে মুজিবের স্মৃতিচারণ এবং বর্তমানে হাসিনার একের পর এক চটকদার টাস্কিপূর্ণ কথা ও স্বপ্ন দেখতে দেখতে আরো বছরের পর বছর পার হয়ে যাবে। আলীগ ও হাসিনা স্রেফ মিথ্যা আবেগপূর্ণ স্বপ্ন ও আশ্বাস দিতে পারদর্শী বাস্তবের সাথে যা আকাশ-পাতাল তফাৎ! চামচাদের কথায় মনে হবে যে হাসিনা বিশাল কিছু করে ফেলেছেন আর অন্যরা অপপ্রচার করে। এখানেই বাংলাদেশের র্দূভাগ্য!  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.