ভালবাস সবাই ভালবাসাকে অনেকেরই অজানা বিশ্বে বাংলাদেশেই প্রথম ধূমপান ও নেশা বিরোধী তারুণ্য শক্তির আবির্ভাব ঘটেছে। ১৯৮৬ সালের মহান ২১ শে ফেব্র�য়ারি থেকে। এদিনই প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বে প্রথম ধূমপান ও নেশা বিরোধি ছাত্র সংগঠন-সাস্ক:৮৬ প্রতিষ্ঠিত হয়। সাস্ক অর্থাৎ স্টুডেন্টস্ এ্যান্টি স্মোকিং কমিটি। প্রতিষ্ঠার শুরুতেই সাস্ক জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতিলাভ করে ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে।
সাস্ক একই বছর �ধূমপানে বিষপান� শীর্ষক আন্তর্জাতিক রচনা প্রতিযোগিতা আহ্বান করে। এতেকরে গোটা বিশ্বের স্বাস্থ্য সচেতন সরকার ও ধূমপান বিরোধি নেতা-কর্মীরা জেগে ওঠেন। আশি দশকের শরুতে ধূমপান ও নেশা বিরোধি কার্যক্রম তরুণদের মধ্যে যেখানে ছিল একেবারেই নিষিদ্ধ, সেক্ষেত্রে সাস্ক:৮৬ এর আত্ম প্রকাশ ছিল একটি সময় উপযোগি বিপ্লবী পদক্ষেপ ও যুগান্তকারী ঘটনা। �সাস্ক� এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৮৭ সালে জাতীয় ধূমপান বিরোধি সংস্থা-আধূনিক প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯৮৬ সাল থেকেই জাতিসংঘ পৃথিবী জুড়ে প্রতিবছর ৩১ মে �বিশ্ব ধূমপান মুক্ত দিবস� পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
তাই এ বছর সাস্ক:৮৬ এবং বিশ্ব ধূমপান মুক্ত দিবস ও সাস্ক:৮৬ এর ২৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী (১৯৮৬-২০১২)।
১৯৯৮ সালের ২৫ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গণচীনের রাজধানী বেইজিং-এ ১০ম বিশ্ব ধূমপান বিরোধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাস্ক:৮৬ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আধূনিক: ৮৭ এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সংগঠক, সাংবাদিক আলী নিয়ামত সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হন। বাংলাদেশ সরকার ও ডেনমার্ক সরকারের যৌথ পৃষ্ঠপোষকতায় একটি ফেলোশীপ নিয়ে সেসময় আলী নিয়ামত বিশ্ব ধূমপান বিরোধি ১০ম সম্মেলনে যোগ দেন এবং �ধূমপান ও দারিদ্র্য:দুইই বিশ্বের মহা শত্র�� শীর্ষক প্রতিবেদন বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় উপস্থাপন করেন। একই সাথে গণচীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, ভূটান, নেপাল ও বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুলে ধূমপান ও নেশা বিরোধি বক্তৃতা দেন।
�সাস্ক�র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে এবং আধূনিকের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সংগঠক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। এজন্য তিনি �সাস্ক-স্বর্ণ পদক� সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক সম্মাননা পদক লাভ করেন। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ধূমপান ও নেশা বিরোধি বক্তৃতা ছাড়াও আলী নিয়ামত বিভিন্ন মিডিয়া এবং সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। এতেকরে সেসময় নোবেল বিজয়ী ড মুহাম্মদ ইউনূস এবং ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গেও তিনি পরবর্তীতে কাজ করার সুযোগ পান। এই দুই বিশ্ব ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে এসে আলী নিয়ামত ধূমপান ও নেশা বিরোধি কার্যক্রমকে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নাটকের মাধ্যমে ধূমপান ও নেশা বিরোধি কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। ব্র্যাকের গ্রাম পর্যায়ে হাজার হাজার স্বাস্থ্য সচেতনমূলক নাটকের মধ্যে তিনি ধূমপান বিরোধি, যক্ষা বিরোধি, নেশা বিরোধি বক্তব্য তুলে ধরেন। বিশেষ করে কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র ও তারুণ্য সমাজ এতে ভীষণভাবে আকৃষ্ট হয় এবং ধূমপান ও নেশা বিরোধি কাজে স্বেচ্ছায় জড়িয়ে পড়ে। যা এখনও সক্রিয় আছে। বাংলাদেশ ও গোটা বিশ্বের তরুনদের মধ্যে।
১৯৯৭ সালের ১৮ মে সাস্ক:৮৬ এবং বন্ধন: স্বেচ্ছায় রক্তদান সংস্থার সক্রিয় কর্মী, সদস্য এষা খান মাত্র ২৭ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান। এষা খান ঢাবি ইংরেজি বিভাগের সাবেক মেধাবি শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে �সাস্ক: বন্ধন এষা খান স্মৃতি পদক প্রদান কমিটি� ১৯৯৮ সালে গঠিত হয়। বাংলাদেশের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা এই কমিটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান উপদেষ্টা। প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হলেন আলী নিয়ামত।
এই কমিটি এবং সাস্ক:৮৬ তারুণ্য সমাজের জন্য একটি সাহস হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তারুণ্য শক্তিকে ধূমপান ও নেশা বিরোধি কাজে উৎসাহ যোগাতে প্রেরণা দিচ্ছে। সাস্ক:৮৬ এর চেতনায় কালের যাত্রায় বিশ্বজুড়ে তারুণ্য আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধূমপান ও নেশা বিরোধি কার্যক্রম শুরু করেছে। নিজ নিজ দেশের সরকার ও জাতিসংঘের সহযোগিতায় তরুণরা তাই ধূমপান ও নেশা বিরোধি কাজে এগিয়ে আসছে। অবদান রাখছে।
তরুণরাই পারে পরিবর্তন আনতে এবং ধূমপান ও নেশা মুক্ত সমাজ গড়তে। বিষমুক্ত পৃথিবী তৈরি করতে। এ প্রত্যাশা আজ বড়দেরও। যারা ধূমপান ও নেশামুক্ত পৃথিবী গড়ার পৃষ্ঠপোষক হতে পারেন। হতে পারেন পরামর্শক এবং সহযোদ্ধা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।