আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানুষ আর মাদক

হরবর করে কথা বলি, মনে যা আসে, পরে ভাবি কেন বললাম . . .

প্রথমআলোর এই খবরটা পড়ে Click This Link অনেক খারাপ লাগছিলো, অনেক। দু’টা অবুঝ বাচ্চার বাজে ধরনের মৃত্যু, কি নিদারুন কষ্ট পেয়েছে ওরা। কথাপ্রসঙ্গে ঐ এলাকার কাছে থাকা একজন জানালো পত্রিকায় যা এসেছে তার চেয়ে আরো আরো বিভৎষ ছিলো ওদের লাশ। তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মেরেও মৃতদেহগুলোকেও আশ্চর্য প্রতিহিংসার শিকার করে কেটেকুটে একসার করেছিলো হত্যাকারী মানুষদু’জন। কথাটা যে জানিয়েছে সে নিজে দেখেনি শোনা কথা, কানকথা।

কানকথায় যে কখনোই বিশ্বাস করিনি তা নয়, কিন্তু এই কানকথাটা সত্যি হলেও বিশ্বাস করতে চাই না। বিশ্বাস করতে চাই না, যে শুধুমাত্র বিকৃত আনন্দের জন্যেই অবুঝ শিশুদু’টি বলি হলো। মন আর হুশ’এর অধিকারী মানুষ, তার আনন্দ কেন বিকৃত হবে? আর বিকৃত কোন কিছুই আনন্দের বিষয়বস্তু হওয়ার যোগ্য? যখন হয়, তাতে মন আর হুশ কিছুর’ই উপস্হিতি থাকেনা। কেউ কেউ বলছে - “আরে, কশাই বলেই পেরেছে ওমন জঘন্যভাবে কাজ করতে”। কিন্তু সব কশাই কি ওমন জঘন্য মানসিকতার? অবশ্যই না।

লক্ষনীয় বিষয় এটাই যে হত্যাকারী লোকগুলি মাদকসক্ত ছিলো, ঘটনারকাল ছিলো তাদের মাদক নেবার সময়। মাদক যা মানুষের স্বত্তাটাকেই বিনষ্ট করে দেয়। কোথাকার মানুষকে কোথায় নামায়। আমরা জানি, পাপকে ঘৃনা করুন পাপী নয়। তেমনি বলা হচ্ছে মাদককে দূরে রাখুন, মাদকাসক্তকে সারিয়ে তুলুন ভালবাসা দিয়ে, পরিচর্যা দিয়ে।

বলা সহজ কিন্তু যারা তেমন কারো সাথে প্রতিনিয়ত থাকছে ওমন কারো অবস্হা আমরা বুঝবো না। শারীরিক কষ্ট কি ভীষন তুচ্ছ হয়ে মানসিক আতংকটাই প্রকট হয়ে উঠে তাদের কাছে। ৪/৫ বছর আগে ভালোবেসে মাদকাসক্ত জেনেও বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলো ছেলেটিকে। মেয়েটা ভেবেছিলো, ওদের গানের প্রতি, একের প্রতি অপরের ভালোবাসা সব ঠিক করে ফেলবে, নেশার অতল আহবানের আর কিইবা জোর। সময় গড়ায়, লেখাপড়া শেষ হতে মেয়েটা নামলো চাকরির পথে আর ছেলেটা নামলো মাদকাসক্তির আরো আরো গভীরে।

ব্যান্ডের যে ক্যারিয়ার ছিলো তাও নেশার টানে নষ্টের পথের, পূর্নবাসন কেন্দ্রে যায় কিছুদিন ভালো থাকে, তবে আবার যেই কে সেই। ফ্যামিলি থেকে দূরে, করো সাহায্য ছাড়াই ছেলেটাকে ভালো করে তোলার চেষ্টায় পথচলা মেয়েটার। মেয়েরা টাকা জমায় শখের জিনিষ কেনার জন্য আর ও জমায় স্বামীকে আরো উন্নত কোন পূর্নবাসনকেন্দ্রে পাঠানোর ইচ্ছাপূরনের জন্যে। কিন্তু আর পারছেনা ও। শারীরিক কষ্টগুলো নিজের নিয়তি মেনেছে ও, ওকে কষ্ট দেবার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি ছেলেটার নির্বিকারভাবে ব্লেড দিয়ে নিজের গা ফালাফালা করে ফেলা আর এসব মোকাবেলা করার মতো মন কিবা সার্মথ্য দু’টোই হারিয়েছে মেয়েটা।

গতমাসে আলমারির কাপড়ের ভাজেঁ লুকানো চেকবইটার ৩টা পাতা খোয়া যাওয়া দেখেই বুকটা ছ্যাতঁ করে উঠেছে ওর। ব্যাংকে খোজঁ নিতেই জানলো, ও কপর্দকশূন্য। কয়েকধাপে তোলা হয়েছে টাকাগুলো। ব্যাগে থাকা ক’টা টাকা আর এমাসের আসন্ন বেতন ওর সম্বল। সব মানুষের পরম শান্তির আধার মা।

সেই “মা”শব্দটা দিয়ে শুরু হওয়া মাদকই হয়ে উঠে মারনাস্ত্র মানুষের জন্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.