মাদক এবং কিছু কথা
গল্পটা কারও কাছেই নতুন নয়। বাবা-মার আর্তনাদ আর আহাজারির গল্প। বুকফাটা চিৎকারে সবার কাছে প্রশ্ন সেই বাবা-মার-‘আমার সন্তান কি আর আলোর পথে ফিরে আসবে না? হতবিহবল বাবা-মার সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর বা সমাধান কী হতে পারে, তা বের করা রীতিমতো কষ্টসাধ্য একটি কাজ। কারণ তাদের সন্তানটি মাদকাসক্ত। নেশার মরণ ছোবলে সে হারিয়ে ফেলেছে তার সুন্দর বর্তমান আর সোনালী ভবিষ্যৎ।
এরকম অসংখ্য দিশেহারা প্রায় বাবা-মা প্রতিনিয়ত হন্যে হয়ে ঘুরছেন তার আদরের সন্তানটিকে মাদকের বিষাক্ত পথ থেকে সরিয়ে আনতে। কিন্তু কেনইবা এই সন্তানরা মাদকের মতো বিষাক্ত জিনিসকে শরীরে গ্রহণ করেছে, আর কারাইবা তাদের এই কুপথে চলতে উৎসাহ জোগাচ্ছে? বিগত বেশ কয়েক বছরের কয়েকটি কেস স্টাডি থেকে ব্যাপারটি আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে। কিছুদিন আগেই মাদকসেবী এক ছেলে টাকার জন্য খুন করেছে তার গর্ভধারিণী মাকে। আর মাদকের টাকা জোগাড়ের জন্য চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা তো এখন আমাদের কাছে নিতান্তই মামুলি ব্যাপার। সন্তানদের এই বখে যাওয়ার পেছনে সামাজিক এবং পারিবারিক- দুই অনুশাসনই সমান দায়ী।
আমাদের সমাজ মাদকের অবাধ অনুপ্রবেশকে রুখতে পারেনি। বরং বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হয়েছে মাদক চোরাচালানের অন্যতম রুট হিসেবে। মাদকের এই সহজলভ্যতা আমাদের সমাজের অনেককেই অন্ধকারের পথে ঠেলে দিয়েছে। আর পারিবারিক অনুশাসন কতটা দায়ী তা বোঝানোর জন্য কিছুদিন আগে গ্রেফতার হওয়া ইয়াবাসেবী তরুণরাই যথেষ্ট। বাব-মার নিয়ন্ত্রণহীন জীবনযাপনের প্রভাব পড়ে সেই সব সন্তানের ওপর।
অনেকটা অজান্তেই তারা জড়িয়ে পড়ে মাদকের শক্ত জালে। বর্তমানে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মাদকবিরোধী নানা প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়। সরকারি উদ্যোগেও মাঝে মাঝে কিছু পদক্ষেপ নেয়ার কথা শোনা যায়। কিন্তু আজ অবদি প্রত্যক্ষভাবেই আমাদের পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন স্পটে মাদকের ব্যবসা বহালতবিয়তে চলছে। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীরাও কোন এক অজানা কারণে নিশ্চুপ থাকছে।
তাহলে সেই সব মাদকসেবীর অস্পষ্ট ভবিষ্যতের পেছনে যারা জড়িত, তারা কি চিরকালই অধরা রয়ে যাবে? আমরা কি আমাদের আগামীর জন্য কিছুই অবশিষ্ট রেখে যেতে পারব না
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।