বুদ্ধিজীবী হতে ডিগ্রী লাগেনা। লালনের সাথে পরিচয় অনেক আগেই। বিটিভিতে লালনগীতির অনুষ্ঠান হতে দেখতাম। সেই হতে লালন কে এই বিষয়ে মোটামুটি একটা ধারণা ছিল মাথায়। লালনকে বুঝতে শিখেছি যখন কুষ্টিয়ায় থাকতাম।
লালনেত গানে খুঁজে পেয়েছিলাম দার্শনিক সত্য যা শুনলে মনে হত আরে সত্যি তো। আমারি মনের কিছু অব্যক্ত কথা লালন সাঁই বলে গেছেন কয়েক যুগ আগে। “অবোধ মন তোরে আর কি বলি, পেয়ে ধন সে ধন হারালী”। লালন কে নিয়ে অনেক আলোচনা করা যেতে পারে। বিরুদ্ধবাদীরা লালন সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক কথা বলেন।
আমি তাদের সাথে একমত হতে পারি না। লালন কোথাও পদ রচনা করে যান নাই, হিন্দু আর মুসলমান, একসাথে বসিয়া গাঁজা খান।
কিন্তু লালন মেলার সময় দেখা যায় লালন শিষ্যরা গাঁজায় ধোঁয়ায় আকাশ বাতাস আঁধার করে ফেলেছেন। মাইজ ভান্ডারীরা দেখি আল্লাহ’র নামে নবীজীর নামে গান করে ঢোল বাজিয়ে। তাতে কিন্তু কেউ ইসলামের দোষ খুঁজে বেড়ায় না।
তাহলে বর্তমান যুগের কিছু তথাকথিত শিষ্যের নামে লালনকে অপবাদ দেয়া যাবে। কেউ আবার বলবেন না আমি ইসলামের সাথে লালনকে তুলনা করেছি। এটা শুধুমাত্র যুক্তি হতে পারে। প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে বাতাসা আকারের সাদা গম্বুজ।
লালন সাইয়ের মাজার।
এখানে লালন সাই শিষ্য পরিবিষ্ট হয়ে ঘুমিয়ে আছেন। লালনের পাশে ঘুমিয়ে আছেন তার পালিতা মা মতিজান ফকিরানী। নিচে লালন শাহ কমপ্লেক্সে প্রবেশদ্বার।
বছরে দুইবার মেলা বসে মাজার প্রাঙ্গনে। মূল মেলার আয়োজন করা হয় পাশে মৃতপ্রায় নদী কালী নদীর তীরে।
ভক্ত ও ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণার মুখর মাজার প্রাঙ্গণ।
লাল ও হলুদ সালুতে আচ্ছাদিত লালনের শিষ্যদের মাজার।
খাঁচার ভিতর অচিন পাখি ক্যামনে আসে যায়, আমি ধরতে পারলে মন-বেড়ী দিতাম পাখির পায়।
কালী নদীর তীরে লালন মেলায় সাপুড়ে সাপ খেলা দেখাচ্ছেন।
লালন মেলায় কাঠের খেলনা নিয়ে বসেছে এক বিক্রেতা।
সাধু গোঁসাইদের দোকান।
মুড়ি মড়কি বাতাসার দোকান।
ছোটকালে এই রকম একটা কাঠের চাকা লাগানো গাড়ী ছি আরাধ্য বস্তু।
সন্ধ্যা যত বাড়ে, মানুষের ভীড় তত বাড়ে। গাঁজা পিপাসুরা এই সময়েই আসা সুরু করে।
আকাশে মেঘের খেলা। এলাহী আলম সাঁই গো আল্লা বাদশা আলমপনা ........................
আমি অপার হয়ে বসে আছি, পার করো দয়াময়। পার হওয়ার আশায় আমরা পথ খুঁজে মরি। হিন্দু লালন ভক্তদের আচার তরিকা।
বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্ত রা এসে এভাবেই আস্তানা গেড়ে থাকে তিন দিন।
এত ভক্তি তারা কোথায় পায় আমি আজো বুঝতে পারি না।
আর আমারে মারিস নে, বলি মা তোর চরন ধরে , ননি চুরি আর করবো না……………… পরে মারে পরের ছেলে , কেঁদে গিয়ে মাকে বলে, মা জননী নিষ্ঠুর হলে , কে বোঝে শিশুর বেদনা, মাগো কে বোঝে শিশুর বেদনা। শ্যামা সঙ্গীত হলে গানটিতে লুকিয়ে আছে অপত্য প্রেমের এক মহান সত্য।
আমি অপার হয়ে বসে আছি, পার করো দয়াময়।
লালনের পুরো নাম লালন চন্দ্র কর।
সে কখনো ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন নি। তাই তার কাছে ইসলামের রীতি নীতি আশা করা বাতুলতা মাত্র। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।