মুহসিন আব্দুল্লাহ কিছুদিন আগেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের বন্ধুদের কাছ থেকে খবরটা পেয়েছিলাম । কিন্তু তারা এর পেছনের বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারছিল না । নতুন মেডিকেল কলেজের নাম নিজ নামে না করে কেন ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি মেডিকেল কলেজের নাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে করা হচ্ছে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না । এখন বুঝলাম, এগুলো হলো ‘চাটুকার বাহিনী’র কাজ !!!
নিচের খবরটা পড়ুন । প্রথম আলো থেকে ।
প্রস্তাব পাঠিয়েই মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন!
ফরিদপুর অফিস |
« আগের সংবাদ পরের সংবাদ»
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’ রাখার প্রস্তাবটি এখনো মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদনের আগেই গত ২৬ এপ্রিল ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেতা-কর্মীরা নতুন নামসংবলিত ফলকটি টাঙিয়ে দিয়েছেন মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকে।
মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় ‘ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’ রাখার প্রস্তাব করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলে প্রস্তাবটি অনুমোদন করে ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে গত ১১ মার্চ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
১৯৯২ সালে স্থাপিত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১৩-১৫ এপ্রিল কলেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৩ এপ্রিল রাতে কলেজ ক্যাম্পাসে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন ফরিদপুর সদর আসনের সাংসদ (ফরিদপুর-৩) শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
অনুষ্ঠানের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানমঞ্চের সামনে একটি ব্যানার ঢাকা অবস্থায় ছিল। শ্রমমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ব্যানারটি উন্মোচন করেন। ব্যানারে লেখা ছিল ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’।
ব্যানারটি উম্মোচন করে মন্ত্রী ঘোষণা দেন, ‘আজ থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ’ হিসেবে যাত্রা শুরু করল। পরবর্তী সময়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা ওই ব্যানারটি কলেজের গ্যারেজের বারান্দায় স্থাপন করেন। গত বৃহস্পতিবার সেটি কলেজের মূল ফটকে স্থাপন করা হয়। এ কাজে নেতৃত্ব দেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাইদুল ইসলাম।
মাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নামকরণের বিষয়টি প্রস্তাবিত।
শ্রমমন্ত্রীর নির্দেশে আমি মূল ফটকে ব্যানারটি স্থাপন করেছি। ’ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, ‘নতুন নামকরণের যে ব্যানারটি মন্ত্রী মহোদয় উন্মোচন করেছেন, ছাত্ররা সেটি কলেজের মূল ফটকে টানিয়েছে। নতুন নামকরণের বিষয়টি এখনো মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রদের এই ব্যানার টানানোর বিষয়টি আইনসংগত হয়েছে কি না, তা বিচার্য কোনো ব্যাপার নয়। ‘তবে নাম ফলকটি ওঠানোর ব্যাপারে আমার ক্ষমতা যেমন সীমিত, তেমনি নামানোর ব্যাপারেও আমার ক্ষমতা সীমিত। ’
মেডিকেল কলেজের নতুন নামকরণের প্রস্তাবের সঙ্গে তিনি একমত দাবি করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জানিয়েছি।
তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, এ নামকরণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। প্রশাসনিক লোক হিসেবে এ ব্যাপারে তোমার করণীয় কিছু নেই। ’
স্পষ্টতই বোঝা যায়, এ কাজের মাধ্যমে তারা প্রধানমন্ত্রীর সম্মান বাড়াননি বরং বিতর্ক সৃষ্টি করে তাঁকে অসম্মানিত করেছেন । অন্যান্য সেক্টরের মত মেডিক্যাল সেক্টরেও ‘জ্বী হুজুর’ প্রকৃতির লোক অনেক আছে । তারা ‘মেরুদন্ড দুর্বল’ টাইপের লোক কিংবা সুবিধাভোগী বলা যায় ।
কিন্তু চাটুকার তেমন নয় । কিন্তু হায়, এই ঘটনার মাধ্যমে মেডিকেল সেক্টরেও চাটুকার বাহিনীর উত্থান লক্ষ করা গেল । তারা মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন করে প্রধানমন্ত্রীর ‘কাছের লোক’ সাজার চেষ্টা করছে । উদ্দেশ্য স্পষ্ট, ‘ যদি কিছু ফায়দা হাছিল করা যায় !’
আমরা প্রত্যাশা করবো, প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাব বাতিল করে চাটুকারদের চপেটাঘাত করবেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।