একসময় দেখলাম, সবই কল্পনা, বাস্তবতায় শূন্য পৃথিবী। অস্থির হয়ে উঠেছে মন। কিছুতেই আর ঘুম আসতে চায় না। তাকে আমার চাই-ই চাই! কে সে? কোন এক রমনী, সুন্দরী, সুনয়না, সুদর্শনা। সবই ঠিক আছে।
নাম জানি না। কোথায় থাকে জানি না। শুধু একপলক রিক্সায় চোখাচোখি!
আচ্ছা সে কি প্রতিদিন ঐ রাস্তা দিয়েই ঐ সময়েই রিক্সা দিয়ে যায়? যদি যায়, তাহলে আমি এরপর থেকে ঠিক ঐদিন, ঐ রাস্তায় ঐ সময় দাঁড়িয়ে থাকব! হুম সেটাই করব। কিন্তু না, অস্থিরতা তো আর কাটে না। এক গাছি লম্বা চুল ওর কোমড় পর্যন্ত পড়েছিল।
ওর হাতটা রিক্সার হুড একভাবে ধরেছিল। ওর মুখে মিষ্ট হাসি ছিল। ওর চোখে তীক্ষ্ম চাহনি ছিল। চোখে কাজল আঁকা ছিল।
এতকিছু এক মুহুর্তের দেখায় কেমনে খেয়াল হলো? হায়রে মানব হৃদয়।
তা ভালো, এখন হৃদয়ের ঠিক মধ্যখানটায় একরকম ভালো লাগা কাজ করছে। ঠিক ঐ গানটার মত,
"আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, সুধাইলো না কেহ"
রাতটা ভালোয় ভালোয় কেটে যাক। কাল সকালেই খুজতে বের হবো তাকে। ঐ গলির আসেপাশে ঘুর ঘুর করব, যখন তখন রিক্সার দিকে তাকাবো! তাকে যে আমার চাই-ই চাই!
পরের দিন আর আসবে কেমন করে। ঘুম আসলে তো পরের দিন হবে।
কিন্তু ঘুমই তো আর আসছে না। মনে মনে তাকে নিয়ে ঘর সাজিয়ে ফেলেছি। সে ঘরের এক কোণে একটা ওয়াল পেন্টিং, তার নিচে দু'টা সোফা। দিনের শেষে দু'জন বসে গল্প করছি। আমি ওর হাতের দিকে তাকিয়ে আছি।
মেহেদি পরা হাত! কি সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে!
এইতো সব পাওয়া হলো, সংসার সাজিয়ে ফেললাম, ঘর বানিয়ে ফেললাম, এইবার তো ঘুম আয়! না আসে না। ধীরে ধীরে ওকে নিয়ে বারান্দায় পায়চারি করলাম, ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলের মধ্যে ডুবে থাকলাম, আকাশের চাঁদ দেখলাম...কত কি!
তবুও ঘুম আসছে না। বিছানায় এপাশ আর ওপাশ! ওপাশ থেকে এপাশ! সাগরের অতলে হারিয়ে গেলে নাবিক যেমন পাড়ের খোজে অস্থির হয়, আমিও হয়ত সেরকমই হারিয়ে গেলাম! পাড়ের খোজে আছি, তবু পাচ্ছি না!
এসমেত অদম্য, অনর্থক চিন্তা পরিশেষে ঘুমাইতে গিয়ে দেখলাম সকাল হয়ে গেছে। এখন তো আর ঘুমের কোন অর্থ নাই। এবার কলেজের জন্য তৈরী হতে হবে।
সকাল সাড়ে সাতটায় ক্লাস! ঘুম ঘুম করে করে, তৈরী হলাম, কাপড় পড়লাম, গেলাম কলেজে!
ক্লাসরুমে ঢুকতে গিয়ে খেলাম এক ধাক্কার মত। কি ব্যাপার? ক্লাস চলে কেন? এখনও তো শুরু হবার কথা নয়। হাতে ঘড়ি নাই। পকেটে মোবাইল আছে, তাও চোরা পকেটে। বের করা বিপদজনক।
কলেজে এসব নিষেধ। তাও অগোত্যা বের করলাম। দেখি সাড়ে আটটা বাজে!
চুপি চুপি পেছনের দরজা দিয়ে ক্লাসরুমে ঢুকলাম! কিন্তু ম্যাডাম দেখে ফেললেন। হাসতে হাসতে বললেন, এই দেখো সবাই, উনি এখনও ঘুমাচ্ছে! কি অপমান! ক্লাসের সবগুলো ছেলে আমার দিকে মাছের মত তাকিয়ে রইল খানিকক্ষণ!
তারপর...সারাদিন কেমনে কেটেছে, টের পাই নাই। কখনও ব্যাক বেঞ্চে ঘুমিয়ে, কখনও বা হেড ডাউন করে...আর একটা ক্লাসে কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো পুরো ৩০ মিনিট!
বাসায় এসে আর না সে রূপসীর কথা ভাবা! ঢের হইছে, এখন ঘুমাবো! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।