আমি অতি সাধারন.... উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ও প্রাচীন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-জামিয়াতুল আহ্লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহ্ফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন শুক্রবার মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। লক্ষাধিক মুসল্লী আখেরী মুনাজাতে অংশ গ্রহন করেন। সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে জামিয়ার মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, পীরে কামেল আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী (দা.বা.) বলেন, তাক্বওয়া তথা খোদা ভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অপরদিকে আল্লাহ্র ভয় মানুষের অন্তরে না থাকার ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কারো পক্ষে শরীয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা কিছুতেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, খোদাভীতির অপর নাম তাক্বওয়া, আর এই তাক্বওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মুসলমানগণ নানাভাবে অপদস্ত ও নির্যাতিত হচ্ছে। মুসলমানদেরকে এই দুর্দশা থেকে রেহাই পেতে পূর্ণাঙ্গ তাক্বওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানী শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। তিনি সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলমানদেরকে এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী অভিযোগ করে বলেন, আজ সর্বত্র ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। আমাদের অনৈক্য আর নিজ ধর্মের মধ্যে কতিপয় গোমরাহ ও ধর্মবিরোধীর কারণেই বিধর্মীরা সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে।
বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যেভাবে একের পর এক ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার মূলক আঘাত হানার প্রয়াস এবং মসজিদে হামলা চালানোর মত দুঃসাহস দেখাচ্ছে, তাতে আমরা হতবাক ও বিস্মিত।
আল্লামা শাহ্ আহ্্মদ শফী আরো বলেন, ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোন স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোন হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না। আর ইসলামী শিক্ষায়ও কোন প্রকার সন্ত্রাসের স্থান নেই।
অথচ দেশে বিদেশে আজ ইসলাম ও মুসলমানদেরকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ag©vej¤^xiv নিজ নিজ ধর্ম পালন করলে, ধর্মীয় তৎপরতা চালালে এবং তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কেউ অংশ নিলে কেউ মৌলবাদী ও প্রগতি বিরোধী হয় না। অথচ নামায আদায় ও দাড়ি-টুপী পরলে অথবা ইসলাম ধর্মীয় কোন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিলেই প্রগতি বিরোধী ও মৌলবাদীর রং লাগানো হয়।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত হাটহাজারী মাদ্রাসার দস্তারবন্দী ও বার্ষিক ইসলামী সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা তফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, মাওলানা মোস্তফা আল হোসাইনী, মুফতী নূর আহমদ, মুফতী আব্দুচ্ছালাম চাটগামী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ্্ বাবুনগরী, মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুরী, মাওলানা নূরুল ইসলাম, ড. আ.ফ.ম. খালেদ হোসেন, মাওলানা আব্দুল মালেক হালিম, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম, মাওলানা নজিরুল ইসলাম, মুফতী জসীম উদ্দীন, মাওলানা সৈয়দ আলম আরমানী প্রমুখ।
আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত শুরু হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সরকার ইসলাম বিরোধী সব জানালা খুলে দিয়েছে।
কাদিয়ানী, এনজিও, নাস্তিক-মুরতাদদের দরজা খোলা, শুধু ইসলামের দরজা বন্ধ। আজ সর্বত্র ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। আমাদের অনৈক্য আর নিজ ধর্মের মধ্যে কতিপয় গোমরাহ ও ধর্মবিরোধীর কারণেই বিধর্মীরা সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোন স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম।
ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোন হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না।
উল্লেখ্য সম্মেলন শেষে বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জামিয়ার বিগত বৎসরের প্রায় ২ সহস্রাধিক দাওরায়ে হাদীস (টাইটেল) উত্তীর্ণ তরুণ আলেমকে বিশেষ সম্মান সূচক পাগড়ী প্রদান করা হয়। বিশেষ সমাবর্তনে জামিয়া প্রধান হযরত আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী তরুণ আলেমদের উদ্দেশ্যে উপদেশমূলক দীর্ঘ বক্তব্য রেখে বলেন, তোমরা ইসলামের আদর্শ ও শান্তির বাণী প্রচার করার জন্য দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়। সম্মেলনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার উলামায়ে কিরাম ছাড়াও লক্ষাধিক মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন। আখেরী মুনাজাতে জামিয়া প্রধান দেশের ও বিশ্বের সকল মুসলমানের শান্তি, ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
এ সময় সমগ্র ক্যাম্পাস জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।