১১•১১•১১ তারিখ ছিল প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে ভোট দেয়ার শেষ দিন। ওইদিন রাতেই জানানো হয় তালিকাতে কোন সাতটি স্থান পেয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এদের নাম ঘোষণা হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে। প্রথম সাতে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়েছে সুন্দরবন। প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যে শীর্ষে থাকা সাতটি স্থান নিয়ে আমার ধারাবাহিক সাতটি পর্বের ৪থ’ পর্ব আজ।
৪থ’ পর্বে থাকছে তালিকায় ৪নং এ স্থান করে নেওয়া জেজু দ্বীপ । প্রতি সপ্তাহে থাকবে এক একটি পর্ব যাতে থাকবে ঐ স্থান সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ও ছবি।
প্রথমেই আমরা জেনে নেই প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের ইতিবৃত্ত।
সুইস বংশোদ্ভুত কানাডার নাগরিক বার্নার্ড ওয়েভার প্রতিষ্ঠা করেন ‘দ্যা নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন’। বার্নার্ড ওয়েবার নতুন সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলেও এর সঙ্গে সুইস সরকারের কোন সম্পর্ক নেই।
২০০১ সালে পৃথিবীর মানবসৃষ্ট নতুন সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের জন্য সংগঠনটি নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে প্রতিযোগিতার আহ্বান করে। ফল ঘোষণা হয় ২০০৭ সালে। এ সময় সংগঠনটি দাবী করে তারা প্রায় ১০ কোটি এসএমএস ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভোট পেয়েছে। এবার প্রতিষ্ঠানটি প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়।
পৃথিবীর ২২০টি দেশ থেকে ৪৪০টি স্থান প্রাথমিকভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
কিন্তু এ দৌড়ে শেষ পর্যন্ত শীর্ষে টিকে থাকে ৭৭টি স্থান। এরপর সেখান থেকে ২৮টি স্থান অংশ নেয় চূড়ান্ত পর্বে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ভোট চূড়ান্ত করে তালিকাটি করা হয়। তবে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারীর মধ্যে। তবে এ নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়েই সমালোচনার মুখে পড়েছে কর্তৃপক্ষ।
জেজু দ্বীপ:
দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় দ্বীপের নাম হচ্ছে জেজু দ্বীপ। প্রায় ২০ লাখ বছর আগে আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাতের ফলে দ্বীপটির সৃষ্টি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। ১৯১০ সালের আগে দ্বীপটিকে অন্য নামে ডাকা হত। পরে ১৯৪৮ সালে এটি ‘জেজু’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
জেজু দ্বীপের আয়তন প্রায় ১৮৪৮ বর্গ কিলোমিটার।
এখানে রয়েছে ২টি শহর ও ৫টি গ্রাম। এখানে একটি লেক রয়েছে। যা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
জেজু দ্বীপ “বিধাতার দ্বীপ” নামেও পরিচিত। এটি কোরিয়ান ও জাপানীদের ছুটি কাটানোর একটি অতি জনপ্রিয় স্থান।
কোরিয়ার নবদম্পতিদের মধুচন্দ্রিমা উদযাপনের অন্যতম স্থান হচ্ছে জেজু দ্বীপ। দ্বীপটি বিভিন্ন আগ্নেয় শিলা ঘন বৃষ্টি এবং শীত প্রধান জলবায়ু দ্বীপের সংমিশ্রণ যা দ্বীপটিকে আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপের সাথে সমতুল্য করেছে।
জেজু দ্বীপ ভ্রমণকারীদের জন্য একটি অতি আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভ্রমণকারীরা একসাথে অনেক কিছু একসাথে উপভোগ করতে পারেন। জেজু দ্বীপের দক্ষিন কোরিয়ার সর্বোচ্চ উচ্চতায় হাইকিং করা যায়।
জেজু নামে একটি স্টেডিয়াম আছে যেখানে ২০০২ সালে বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্টিত হয়েছিল। মাঠটি দেখতে অনেক মনোরম।
এখান থেকে একসাথে সমূদ্রে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। জেজু দ্বীপে রয়েছে সৌম্য জলপ্রপাত যা যে কোন পর্যটককে মোহিত করে তুলবে।
এখানে ঘোড়ায় চড়ে সম্পূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা যায়।
বালুকাময় তীরে শুয়ে রোমান্টিক সময় উপভোগ করা যায়।
জেজু দ্বীপের বাষি’ক গড় তাপমাত্রা হচ্ছে ১৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গ্রীষ্মকালে সবো’চ্ছ তাপমাত্রা দাড়ায় ৩৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস আর সব’নিম্ন জানুয়ারির দিকে তখন প্রায় ১ ডিগ্রীতে নেমে আসে।
প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য-১ :প্রকৃতির এক অপরিসীম সৌন্দয আমাজন নদী ও বন
প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য-২ : সৃষ্টির বিস্ময় হা লং বে উপসাগর
প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য-৩ : প্রকৃতির সত্যিকার বিস্ময় ইগুয়াজু জলপ্রপাত
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।