আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাজীর গরু কাগজে আছে গোয়ালে নাই। মশা মারার জন্য ১৭ কোটি টাকার ওষুধ কিনলেও কোথাও চোখে পড়ে না ওষুধ ছিটানোর দৃশ্য !! দুর্নীতি আজ চরমে, দেশটাকে যেন চুষে খাওয়া হচ্ছে!!

আল্লাহ তা'লা বলেন, "নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমাসমূহ এবং ভাগ্য নির্ধারক শরকসমূহ অপবিত্র ও শয়তানের কাজ ছাড়া কিছুই না। অতএব, এগুলো থেকে বিরত থাক যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। " সূরা আল মায়েদা - ৯০ রাজধানীতে মশা নিধনের পিছনে খরচ ঠিকই বাড়ছে। কিন্তু উত্পাত কমছে না। বরং দিন দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে।

আবদ্ধ ডোবানালা ও ড্রেনগুলোয় মশার বিস্তার বেড়েই চলেছে। অথচ ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিসিসি) বিপুল বাজেট থাকলেও মশা নিধনে নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়ের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে না। নগরীর কোথাও ঠিকমতো ছিটানো হচ্ছে না মশা মারার ওষুধ। ডিসিসি দুই ভাগ হওয়ায় নিধন কার্যক্রম এলোমেলো হয়ে গেছে বলে স্বীকার করেছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি বছর যে পরিমাণ বাজেট থাকে তার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না।

মশা নিধনের নামে চলছে লুটপাট। মশার ওষুধে পাওয়া যাচ্ছে ভেজাল। আবার যে পরিমাণ ওষুধ কেনা হয়, তার যত্সামান্যই ছিটানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন ইত্তেফাককে বলেন, ‘ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না—তা ঠিক নয়। মশা নিয়ন্ত্রণ করতে ডিসিসির কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে।

এসব ওষুধ প্রতিদিনই রুটিনমাফিক ছিটানো হচ্ছে। ’ এ বিষয়ে চেষ্টা করেও ডিসিসি উত্তরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূরুন্নবীর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, খাতা-কলমে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে মশা নিধক কার্যক্রমে। তার বিপরীতে ফলাফল একেবারেই শূন্য।

ডিসিসির হিসাব শাখা থেকে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থ বছরে রাজধানীর মশক নিধনে বাজেট ধরা হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। ২০১০-১১ অর্থ বছরে বাজেট ছিল ১৪ কোটি টাকা। ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ১৩ কোটি, ২০০৬-০৭ অর্থ বছরে ১৩ কোটি, ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে ১৩ কোটি, ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে ১২ কোটি, ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে ১৩ কোটি এবং ২০০০-২০০২ অর্থ বছরে বাজেট ছিল ১২ কোটি টাকার বেশি। ওষুধ কেনার ব্যয় বিবরণীতে উল্লেখ রয়েছে গত ২০১০-১১ এবং ২০০৯-১০ অর্থ বছরে মশার ওষুধ কেনার জন্য সিটি করপোরেশন মোট ব্যয় করেছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। গত দুই অর্থ বছরে উড়ন্ত বা বয়স্ক মশা নিধনের (অ্যাডাল্টিসাইড) ওষুধ কিনতে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) অতিরিক্ত ৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করে।

সিটি করপোরেশন দীর্ঘ সময় ধরে অ্যাডাল্টিসাইড কিনছে। এতে মূল কীটনাশকের সঙ্গে প্রয়োজন অনুসারে ডিজেল কিংবা কেরোসিন মেশানো থাকে। ডিজেল কিংবা কেরোসিন মেশানোসহ এ কীটনাশকের বাজারমূল্য ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। বর্তমানে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬১ টাকা। প্রতি লিটার মূল কীটনাশকের বাজারমূল্য ২ হাজার টাকা।

২০ লিটার ডিজেলের সঙ্গে ১ লিটার কীটনাশক মিশিয়ে ২১ লিটার ওষুধ তৈরি করলে প্রতি লিটারের মূল্য দাঁড়ায় ১ থেকে দেড়শ টাকা। অর্থাত্ দেড়শ টাকা দরে যে ওষুধ কেনা সম্ভব ঢাকা সিটি করপোরেশন ‘রেডি ফর ইউজ’ কীটনাশক ক্রয় করে প্রতি লিটার ৩৪৫ থেকে ৩৪৯ টাকা লিটার দরে। ফলে দুই বছরে মশার ওষুধ কিনতে ব্যয় হওয়ার কথা ৫ কোটি টাকা। সেখানে ঢাকা সিটি করপোরেশন ব্যয় করেছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এভাবে প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকা কীটনাশক ক্রয়ের নামে অপচয় করছে ডিসিসি।

বিশেষজ্ঞ কমিটি বরাবরই ‘সংরক্ষণের জটিলতা’ দেখিয়ে রেডি ফর ইউজ কেনার সুপারিশ করে আসছে। সেই সুযোগে সিটি করপোরেশনের ভাণ্ডার বিভাগ এই ব্যয়বহুল ওষুধ ক্রয় করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে কীটনাশকগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানো গেলে নগরবাসীকে মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব। এজন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ভাগের ফাঁদে মশক নিধন কার্যক্রম মশা নিধনে ক্রয় করা পুরনো ৫০ হাজার লিটার ওষুধ দুই সিটি করপোরেশনকে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।

তা দিয়ে বর্তমানে দুই ডিসিসির কাজ চলছে। ডিসিসি দক্ষিণের এক কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার মশার উত্পাত বেশি। কারণ সময়মত ওষুধ ছিটানো হয়নি। কারণ হিসেবে ডিসিসির দুই ভাগে ভাগ হওয়াকে উল্লেখ করেন তিনি। তার মতে বিভক্তির কারণে সবকিছু একটু এলোমেলো হয়ে গেছে।

মশার উত্পাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী মশার উত্পাতে রাজধানীবাসী অতিষ্ঠ। ঘিঞ্জি পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকার বাসাবাড়ি, অফিস, স্কুল-কলেজ, দোকানপাট সবখানে মশারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। যদিও ডিসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, নগরীতে উড়ন্ত মশা মারতে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। ধানমণ্ডি, গুলশান, বারিধারা, বনানী, সায়েদাবাদ, শাহজাহানপুর, আজিমপুর, লালবাগ ও বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা, যাত্রাবাড়ী, ওয়াপদা কলোনি, বিবির বাগিচা, জুরাইন, গেণ্ডারিয়ার ডিআইটি প্লট, ধুপখোলা, ধলপুর, মানিকনগর, বাসাবো, গোড়ান, রামপুরা, আফতাবনগর, আনন্দনগর, মধ্যবাড্ডা, মিরপুর, মিরপুর পাইকপাড়া, রূপনগর, গুলশান লেক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। পল্টন, মতিঝিল, গোপীবাগ, পুরান ঢাকা, লক্ষ্মীবাজার, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, সদরঘাট, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মশার উপদ্রব আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও উত্পাত ভিআইপি জোনখ্যাত হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও মশার একই রকম উপদ্রব চলছে। বিমানবন্দরের ভেতরে মশার উত্পাতের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার এ রকম উত্পাত কল্পনা করা যায় না। দাম বেড়েছে নিধন সামগ্রীর এদিকে মশার উত্পাত বেড়ে যাওয়ায় কয়েল, স্প্রে, মশক নিধন ইলেকট্রনিক র্যাকেটের দামও আগের তুলনায় বেড়েছে। ৫ টাকার কয়েল বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকায়।

২৫০ টাকার র্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। সূত্র: ইত্তেফাক ১‍২‍‍-১৩ বছর আগের কথা, চোখের সামনে দেখা যেত মশার ওষুধ ছিটাতে, আনাচে কানাচে ফট ফট করে মেশিনের শব্দ, মাঝে মাঝে ৫ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ঘরের মধ্যেও ছিটিয়ে নিতাম। আজ সেই দৃ্শ্য চোখে পড়ে না অথচ দুর্নীতি বাজদের পকেটে চলে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আমাদেরকি কিছু করার নাই!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.