আমি কিন্তু আমার গল্পের চাইতেও বদ ! ঘাড়া ঘাড়ির অভ্যাস ছোটকাল থিকা। ক্যাচালের ধান্দায় কেউ আমার ব্লগে প্রবেশ করলে , তারে খুইজা বাইর কইরা ঘাড়ানি দিতে বেশি টাইম নিমুনা। মনে রাখবেন সামুর সবচাইতে বদ মানুষের ব্লগে আপ্নি প্রবেশ করেছেন। ঘটনা অথবা দুর্ঘটনা নং ১
তখন আমি অনার্স এ (সম্মান) পড়ি , মেসে থাকতাম তাই আমার উপ্রে সার্বক্ষনিক নজরদারি করনের জইন্য আমার আব্বাজান নোকিয়া কোম্পানির সাহায্য লইলেন, তিনি আমাকে একখানা নোকিয়া মোবাইল কিনা দিলেন ।
এই মোবাইলটার একটা বিশেষত্ব (বিশেষত্ব বানান ঠিকাছে তো ? ) ছিলো এইটাতে সেভ করা নামের নম্বর থিকা ফুন আসলে নাম উচ্চারন করতো ! মানে যে নামে সেভ করা হইছে সেই নাম উচ্চারন হইতো রিং টোনের সাথে সাথে ।
আর নামখান উচ্চারনের সময় রিং টোনের সাউন্ট কইমা যাইতো আর চিল্লায়া চিল্লায়া কলারের নাম বলতো ! তবে বাংলা নাম সমুহ ইংরেজি এলফাবেটে লেখার কারনে উচ্চারনটা পারফেক্ট হইতো না !
আমার ডিপার্টমেন্ট এর চেয়ারম্যানের নাম ছিলো “ নজরুল শাজাহান “ সে থাকতো ও খিলগাও শাজাহানপুরে ! তাই তার নাম সেভ করছি নজরুল শাজাহান পুর লেইখা , একদিন কলেজে ক্লাসের মইদ্যে চেয়ারম্যান স্যার তার নিজের মোবাইল নম্বর ছাত্র ছাত্রিদের মইদ্যে বিতরন করতাছিলেন , আমিও তারে কইলাম স্যার আপ্নের নম্বর আগেই সেভ করা আছে , স্যার কইলেন কোই দেখি বইলা আমার নম্বরে দিলেন ফোন অমনি আমার বজ্জাত নোকিয়া মোবাইলটা চিল্লানি শুরু করলো “ নজরুল শাজাহান চুর “ “ নজরুল শাজাহান চুর “ , মারাত্বক রাগি স্যারের রক্ত চক্কু হইতে বাচতে এক দৌড়ে ক্লাসের বাইরে চইলা গেলাম !
ঘটনা অথবা দুর্ঘটনা নং ২
তখন আমি ইসকুলে পড়ি , আমার একটা খুব সুন্দর টিপ কলম ছিলো , লেখার জইন্য এই কলমের মাথায় টিফি দিয়া কলম এর শিষ বের করতে হয় , লেখা শেষ হয়া গেলে পুনরায় টিফি দিয়া শিষ ভেতরে ঢুকাইতে হয় , কিন্তু এই কলমটার একটা বিশেষ দিক ছিলো ! কলমের মাথায় টিফি দিলে কারেন্ট শক লাগতো , সমস্ত শইল নইরা চাইরা উটতো ! (এই ধরনের কলম বর্তমানে গিফ্ট শপে পাওন যায় )
একদিন ক্লাস কর্তাছি হঠাত আমার পেডে চিপ মার্লো , বুজলাম পেডে এই মুহুর্তে যা আছে তা সব সুনামির আকারে যে কুন মুহুর্তে বাইর হইয়া যাইতে পারে। আর সেলাইন ওষুধ না খাইলে থামবো না। তারা তারি সহকারি প্রধান শিক্ষক এর কাছে গিয়া জানাইলাম, পেটের মইদ্যে রায়ট শুরু হইয়া গেছে , পেডের মইদ্যে গুরগুর গুরগুর সাউন্ড হইতাছে। হেতে কইলো দরখাস্ত লেহো জমা দিয়া বাড়িত যাও। আমি পর্ছি মুশকিলে হালার পরিক্ষার খাতায় ই তো দরখাস্ত লেকতে পারি নাই কুন দিন, অহন দরখাস্ত লেহুম কেমতে? যাই হোক ক্লাসের সেকেন্ডবয় এর হেল্প লইয়া দরখাস্ত লেখলাম।
দরখাস্ত জমা দিতে স্যারের রুমে গেলাম , দেহি ছারে এক পাও চেয়ারের উপ্রে উডাইয়া আয়েস কইরা বইসা চা খাইতাছে , এক হাতে চায়ের কাপ। তার টেবিলে দরখাস্তডা দিয়া পাশে খারাইয়া রইলাম। ছারে কর্ছে কি দরখাস্ত মঞ্জুর কর্তে গিয়া আমার পকেডের ঐ কলমডা আমার পকেট থিকা লইয়া লইলো। আমি হেতেরে কিছু কওনের আগেই হেতে টিফি মাইরা বইছে, লগে লগে ছারে চেয়ার শুদ্দা কাইপ্পা উটলো , হাতের গরম চা অতিরিক্ত কম্পনে হেতের শইলের উপ্রে পর্লো। আমি ভোদাইর মতোন চাইয়া রইলাম।
ছারে দুই সেকেন্ড আমার দিকে চাইয়া রইলো। হের পর নগদে একটা বন চটকানা বসাইয়া দিলো আমার কানসার উপ্রে। লগে লগে আমার কানসা গরম ! এক তো পেট খারাপ অনেকক্ষন ধইরা আটকাইয়া রাকছি, তার উপ্রে সেকেন্ড বয় হালায় দরখাস্ত লেকতে কর্ছে দেড়ি, আমার আর ধৈর্যে কুলাইলো না , পুরা ডায়রেক্ট হইয়া গেলাম। ছারের সামনে ঐহানেই পুরা কাম সাইরা ফালাইলাম, একবারে পুরা কোর্স কমপ্লিট।
পরে অবশ্য ছুটি পাইছি।
তয় ছারের একটা নাম ফাইটা গেলো পুরা ইসকুলে। থাব্রা দিয়া হাগায়া দিছে।
ঘটনা অথবা দুর্ঘটনা নং ৩
ছোট বেলায় বৃষ্টির দিনে ইসকুলে যাইতে চাইতাম না ! বিশেষ কইরা যেই দিন ক্লাসের পড়া না হইতো সেদিন ইসকুল ফাকি দেওনের জন্য রাস্তায় আছার খাওয়ার ভান ধইরা কান্তে কান্তে বাড়ি ফেরত আসতাম, আর রাস্তার কাদা মাডি গায়ে লাগাইয়া আছার খাওয়ার নাটক টা পোক্ত কর্তাম।
একবার ইসকুলের অংক টিচার ইসকুলের চাকরি ছাইরা চইলা গেলেন, আমি তো মহা খুশি কারন অংকডারে আমি খুবই অপছন্দ কর্তাম , ফাউল একটা বান্দরের বাঁশ বাইয়া উঠনের টেরাই , আর ফুটা চৌবাচ্চা , আর বাপ পুতের বয়সের তুলনা শিখা জীবনে কি যে উফুকার হইবো বুঝতাম না !
আমি তখন প্রতিদিন কেলাস করি কারন অংক টিচার না ই , মজাক ই মজাক , এইসব দুর্গম এলাকায় কোন টিচার সাধারনত আসতে চায় না। কিন্তু আমার আনন্দটারে নিরানন্দে পরিনত করলো ইসকুলের হেডু (হেড স্যার)।
সে একদিন ঘোষনা দিলো একজন অংকের টিচার পরশু দিন আসতাছে , এইটা একটা কথা হইলো ? আরে বাবা কি দরকার এই বৃস্টি কাদার দিনে একটা ভদ্র লোকরে কস্ট কইরা ডাইকা আননের? যাই হোক আমার তো ফর্মুলা রেডিই আছে, যেই দিনই অংকের পড়া না হইবো , গায়ে কাদা মাইখা কান্তে কান্তে বাড়িত যামু । যেই দিন অংকের টিচার আসনের কথা ঐ দিন আবার অইন্য একটা সাবজেক্টের পড়া হয় নাই ! তাই ইসকুল যাওন যাইতো না !
ইসকুলের কাছা কাছি গিয়া দেখলাম একটা যায়গায় অনেক কাদা পানি , আর আসে পাসে লোকজনও নাই, দিলাম ঝাপ , কাদা পানিতে আমি পুরা সয়লাব, আমারে তহন মোটা মুটি একখান বন মানুষের মতো লাগতাছিলো, চেহারা বুঝা যায়না। এরই মইদ্যে দেহি একটা বেডায় ঐখান দিয়া যাওন ধরছে , বেডায় আমারে কয় , এই ছেলে তুমি ইচ্ছা করে নোংরা পানিতে ঝাপ দিলে কেন ? নিশ্চই তুমি ক্লাস ফাকি দিতে এটা করেছো । আমি মনে মনে চিন্তা করি, আরে এই হালায় তো আমার ফর্মুলা ধইরা ফালাইছে ! বেডারে এই এলাকার লোক বইলা মনে হয় না, কখনো এই গ্রামে দেখি নাই । আমি করছি কি আস্তে আস্তে কাদা পানি থিকা উইঠা বেডারে জরাই ধরলাম , আর আমার শইলের সব কাদা পানি বেডার জামা কাপরে লাইগা বেডায় পুরা কাদায় মাখা মাখি , হের পর দৌর দিয়া ভাগছি
রেগুলার তো আছার খাওনের নাটক করা যায় না , এর পরদিন ইসকুলে গেলাম , গিয়া শুনি অংকের টিচার নাকি কাইলকা আসে নাই , আইজকা আসবো, ইস :কেন যে ফর্মুলাডা ফাও ইউজ করলাম, যাই হোক অংকের ক্লাসে হেডু ঢুকলো লগে সেই অংকের টিচারও ঢুকলো ,
আরে খাইছে এইডা দেহি হেই বেডায় , যারে আমি কাদা লাগাইয়া কাইলকা ভাগছিলাম , এইবার বুজলাম কাইলকা কেন হেতে আসতে পারে নাই, আসলে আইছিলো মাগার আমার এটাকে পইরা সে আবার ফিরত চইলা গেছে।
ভাগ্য ভালো আমার চেহারা অংক টিচারে চিনতে পারে নাই কারন কাদায় আমার চেহারা বুঝা যাইতাছিলো না , কিন্তু তারপরও টিচার মাঝে মাঝে আমার নাম ধইরা ডাকলে মনের মইদ্যে চিপ খাইতাম , বুজেনই তো চুরের মন পুলিশ পুলিশ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।