আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুড্ডির পাইলটের টয়লেটনামা !!!

আমি কিন্তু আমার গল্পের চাইতেও বদ ! ঘাড়া ঘাড়ির অভ্যাস ছোটকাল থিকা। ক্যাচালের ধান্দায় কেউ আমার ব্লগে প্রবেশ করলে , তারে খুইজা বাইর কইরা ঘাড়ানি দিতে বেশি টাইম নিমুনা। মনে রাখবেন সামুর সবচাইতে বদ মানুষের ব্লগে আপ্নি প্রবেশ করেছেন। কেমুন আছেন সবাই ? অনেক দিন গিয়া বরিশালে থাকলাম । অইনের নেট, দুনিয়ার সবজায়গার নেটের চাইতে ছুপার স্লো ।

যখনই কুনু পেইজ ব্রাউজ করতে যাই আমার মডেমডায় কান্না কাটি করে , বলে " ঘুড্ডি ভাই আমারে মাফ করেন , আফনে দেশের বাড়িত আইছেন, খেজুর রস খান , শীতের পিডা খান , অখন নেটফেট চালান বাদ দেন আর আমারেও একটু শান্তি দেন । " তারপরও সবার লগে কানেকটেড থাকনের জইন্য মাঠের মইদ্যে বইসা নেট চালাইতাম , ব্লগে কাওরে ঠিক মতো কমেন্ট দিতারি নাই , দুইটা পোষ্ট দিছিলাম কুনুমতে । বরিশালে গিয়া খাওয়া বাইরা গেছিলো , যার কারনে যখন তখন " ন্যাচারাল এছ. এম. এছ " (প্রকৃতির ডাক) চলে আসে । একদিন রাইতে শীতের মইদ্যে মাডে বইসা নেট চালাইতাছিলাম , হঠাৎ অনাকাংকিত ন্যাচারাল এচ. এম. এছ চলে আসলো , আশে পাশে টয়লেটও নাই , একবার ভাবলাম রাইতের অন্ধকারে "এছ এম এছ " টা পইড়া দেখি , পরে চিন্তা বাদ দিলাম কারন গিরামের লুক জুন খুবই অসভ্য, মানুষের পিরাইভেসি বুঝে না সন্ধ্যা হইলেই প্রত্যেকে একটা কইরা টর্চ নিয়া ঘুরে আর চিপায় চাপায় লাইট মারে , কেউ দেইখা ফালাইলে ইজ্জতের আনকমন প্রশ্নপত্র তৈয়ার হয়া যাইবো । ( প্রশ্নের উপ্রে লেখা থাকবো ইজ্জতের প্রশ্ন পুর্নমান ১০০ ) আমার বাড়ির সামনের মাডের পাশে আবার কয়টা দুকান আছে ! অইখানে একখানা পাব্লিক টয়লেটও আছে বহু পুরাতন ( সেই ভাস্কো-দাগামার আমলের ) এদিকে আমার পেটের মইদ্যে "এছ এম এছ" এর রিংটোন বাইজাই যাইতাছে, যে কোন ভাবে "এছ এম এছটা " খালাস করতে হইবো , ছুইটা গেলাম সেই টয়লেটে ।

গিয়া দেখি সেখানে বহু পুরানা দিনের এন্টিক টাইপের তালা ঝুলতাছে , ( মনে হয় এইটাও ভাস্কো-দাগামা ভুলে ফালায়া রাইখা গেছিলো পরে কেউ টোকায়া পাইয়া টয়লেটে মাইরা থুইছে ) চাবি এর প্রয়োজনে এক দুকান্দাররে ডাক দিলাম সে দেখি দুই হাতে কালি কুলি ভরাইয়া কিসব রংয়ের কাম কর্তাছে ! কইলো মিয়া ভাই আমার পকেটে আছে লয়া লন ! আমি অর পকেটে হাত ঢুকাইয়া টাস্কিত হইলাম ! হারাম জাদার পকেট ছিড়া ! কইলাম কিরে ? পকেট তো ছিড়া ! আরে মিয়া ভাই পাশের পকেডে হাত ঢুকান চাবি পাশের পকেডে । পাশের পকেট থিকা চাবি হস্তগত করনের পরে কইলাম সাবান দে , টয়লেটে যাওনের আগেই সাবান দিয়া হাত ধুয়া শুরু করলাম ! হারাম জাদায় পরছে ছিড়া পকেট অলা প্যান্ট তার উপ্রে খালি প্যান্টঐ পরছে আর কিছু পরে নাই ! এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মইদ্যে আমি আপ্নাদের সুন্দর সুন্দর পোষ্ট সমুহে বিচরন করতে পারি নাই বলে মোনটা খারাপ । সেইসময় ফেসবুকে কোন মতে ঢুকতারছি , আশা করি এখন হইতে ব্লগে আবার নিয়মিত হবো আর আপ্নাদের পোষ্ট সমুহ পাঠকরিয়া, শুইয়া বইসা কমেন্টাবো । শেষ করার আগে আরেকখান ঘটুনা বলি সেটাও টয়লেট সম্পর্কিত ! ( সবই টয়লেট গল্প ! আমার হইলোটা কি ! ) দেশ যখন শাহাবাগ আন্দলনে উত্তাল আর তার হাওয়া যখন সারা দেশে প্রবাহিত হইতাছে , তখন আমার গিরামেও তার কিছুটা দমকা হাওয়া প্রবাহিত হইছে ! আবার কতিপয় খারাপ লুক গিরামের শান্তি শৃংখলা নষ্ট করতে হিন্দুদের বাড়ি ঘর আক্রমন করতে পারে বলে থানা থেকে গ্রাম বাসির সমন্বয়ে টহল কর্মসুচীর আয়োজন করেছে । একদিন রাইতে আমিও গেলাম সেই টহল কর্মসুচীতে অংশ নিতে ! অইদিন দুপুরে আবার একটা বিয়ার দাওয়াত খাইয়া আমার পেটের অবস্তা কাহিল , আসলে হইছে কি , ঢাকায় সবসময় ফরমালিন যুক্ত খাবার খাইতে খাইতে হঠাৎ অফরমালিন খাদ্র আমার পেটে ঢুকার সাথে সাথে বেদ্দপ পাকস্থলীডা এমন আচরন শুরু করলো যেমন আমিরিকায় কেউ বীনা পাসপোর্ট ভিসায় ধরা খাইলে হেই দেশের পুলিশে করে ! টহল কার্জক্রম চলতাছে এমন সময় হঠাৎ পেটের ভিতরে গুর গুর আওয়াজ হইতে শুরু করলো , মনে হইলো পেটের মইদ্যে অফরমালিন খাদ্র দ্রব্য সমুহকে অবৈধ অধিবাসির ন্যায় যে কোন মুহুর্তে ঘেডি ধইরা বাইর কইরা দিতে আমার পাকস্থলী সোচ্চার ! অবস্তা বেগতিক দেইখা আমি একখানা গ্রাম্য টয়লেটে প্রবেশ করিলাম ! গ্রামের টয়লেট গুলা খুব ভয়াবহ হয় ! বাসস্থান থেকে কিছু দুরে জংগলের পাশে একটা গর্ত থাকে চারপাশ কলাগাছের শুকনা পাতা দিয়া প্রাইভেসি মেইনটেইন করা হয় ।

রাতের অন্ধকারে কুপি বাতি নিয়া ওখানে যেতে হয় । আর গর্তের মাঝখানে দুইটা বাশ ঠিক সাকোর মতো কইরা বসানো হয় ! বাশ দুইটার এক্সপেরি ডেট শেষ হইছে বোঝা যায় তখন , যখন কেউ অই গর্তে পইরা যায় ! তাছারা অনেকে ভালো এথলেট না হওয়াতেও পইরা যায় ! প্রায়ই গ্রামের মইদ্যে হইচই শোনা যায় , অমুকে টয়লেটে পইরা গেছে ! তারে আবার উঠানের পদ্দতিডাও ভালো, রশি দিয়া টাইনা উঠানো হয় , ( হাত দিয়া ধরার উপায় থাকে না ) আমি ভালো এথলেট তার পরেও সমস্যা হইলো ! না পইরা যাই নাই !!! ওখানে কুপি বাত্তি লইয়া ঢুকছিলাম ! কুপি বাত্তির আগুন গিয়া লাগছে শুকনা কলা পাতার মইদ্যে , দাউ দাউ কইরা আগুন জলতাছে ! সাথের বদনায় যথেস্ট পানি ছিলো আগুন নেভাবার জইন্য ! কিন্তু সেই পানি তো অন্য কাজের জইন্য সংরক্ষিত ! এদিকে কলাপাতার প্রাইভেসি, আগুনে পুইরা যাইতাছে ! আর প্রাইভেট প্লেসটা আনপ্রাইভেট হয়া যাইতাছে ! এখন কি করি ! আর আমার সাথের লোকেরা আগুন দেইখা আমারে সেইপ করতে ছুইটা আসতাছে ! এই অবস্তায় অরা আমারে দেখুক এটা আমি চাই না ! বিশাল সাসপেন্স ! হলিউড মুভি ফেইল ! অগত্যা সাথে থাকা পানি দিয়া আগুন না নিভাইয়া যথোপযুক্ত কাজে ব্যাবহার করিয়া মধ্যপথে কর্মসুচী বিরতী দিয়া দ্রুত টয়লেট হইতে বাহির হইলাম আর একখানা গ্রাম্য টয়লেট এর ধংস হয়ে যাওয়া তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম ! রাতের টহল দল হতে অইদিন রাতের মতো বিরতি নিয়ে বাসায় আসলাম ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.