মনের কথা ব্লগে বলে ফেলুন,নয়তো মনে কথার বদহজম হবে আমি পাকিস্তান সফর নিয়ে আসলে কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু পত্র-পত্রিকা পড়ে যা জানতে পেরেছি তিনি (বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল এমপি) পাকিস্তানের সহযোগিতা নিয়েই আইসিসির সহ-সভাপতি পদে বসতে যাচ্ছেন। এ জন্য তার উৎসাহ থাকা স্বাভাবিক। পাকিস্তান শর্ত দিয়েছে খেলতে যেতেই হবে। ওই রকম ব্যক্তিগত কোন এজেন্ডা থাকলেও থাকতে পারে।
কিন্তু নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এখানে দুইটা দিক আছে। একটা দিক হলো, ক্রিকেটের দিক ও নিজেদের লাভ-লোকসানের দিক। আরেকটা দিক হলো, পাকিস্তানে ক্রিকেট ফেরানোর দিক ও তাদের সহযোগিতা করার লক্ষ্যের দিক।
এটা ‘হলিডে’ বা ‘হানিমুন’ও নয়।
এখানে আমাদের ক্রিকেটের উৎকর্ষতা সাধনের বিষয় আছে। এটা কোন সিরিজও নয়। আমি যদি একটা ওয়ানডে এবং একটা টি২০ খেলার জন্য পাকিস্তানে যাই, আড়াই ঘণ্টা করে বিমান যাত্রা করলাম। দুইদিন বন্দী জীবনে আবদ্ধ থাকলাম। দুইটা ম্যাচ খেলে চলে আসলাম।
তারপর আবার তামিম (ইকবাল) ও শাকিব (আল হাসান) নেই। এখানে গিয়ে কী লাভ পাব আমরা?
এখানে আমাদের খেলোয়াড়রা খেলার মধ্যে নেই। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ নেই। জাতীয় ক্রিকেট নেই। আমি আদৌ বুঝছি না, এখানে আমাদের ক্রিকেটের কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না।
পাকিস্তান যে করেই হোক বাংলাদেশকে নিতে চাইছে। কারণ, তারা প্রমাণ করতে চাচ্ছে তাদের নিরাপত্তা ঠিক আছে। বিদেশী দল আসা উচিত। ব্যক্তিগতভাবে আমিও চাই পাকিস্তানের মতো একটা ক্রিকেটীয় শক্তির দেশের নিরাপত্তা ঠিক থাকুক, সে দেশে ক্রিকেট খেলা হোক। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টা পাকিস্তানকে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
আমাদের এখান থেকে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক টিম গিয়েছিল? তারা দেশে এসে কী রিপোর্ট দিয়েছে আমরা কেউ জানি না। ধরে নিলাম প্রেসিডেন্টের কথায় সফরের বিষয়ে আমাদের ক্লিয়ারেন্স আছে। তাহলেও কি যাওয়া উচিত?
যদি তাই থাকে, এখানে ক্রিকেটারদের মনোভাব জানাও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মতামত নেয়া উচিত। গণতান্ত্রিক একটি দেশে সবারই স্বাধীন মতামত দেয়ার অধিকার আছে।
ক্রিকেটারদেরও মতামত নেয়া জরুরী। জোর করে কাউকে বিপদে ফেলা যাবে না। এখন পাকিস্তান বলছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক আছে। সবই সঠিক ধরে নিলাম। কিন্তু রবিবার পাকিস্তানে কী ঘটল? ৪০০ কয়েদিকে লোকজন গোলাগুলি করে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেল।
সোমবার আফগানিস্তানের কাবুলে কী হলো? ৩৫ তালেবান গুলি খেয়ে মরল। এ্যাটাক করল। ৮ আফগান সেনা মারা গেল। তালেবান, আফগানরাই পাকিস্তানে নেতৃত্ব দেয়। এই পরিস্থিতিতে আমাদের পাকিস্তানে যাওয়ার বিষয় অনেক চিন্তা, ভাবনা করেই নেয়া উচিত।
বাংলাদেশ একটা কথা বলেছে। আইসিসি নিরপেক্ষ আম্পায়ার দিলে বাংলাদেশ যাবে। আইসিসি এখনও কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে। যতটা বেশি ঝুঁকি নেব, আমার মনে হয় না খুব বেশি লাভবান হব।
আমরা আরও অপেক্ষা করতে পারি। পাকিস্তানকে সহযোগিতা অবশ্যই করব। কিন্তু সেটি পরিচ্ছন্ন সময়ে। এমন অনিরাপদ অবস্থায় নয়।
আবুধাবী, দুবাইয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজই খেলতে পারে বাংলাদেশ-পাকিস্তান।
অনেক দলের সঙ্গেই খেলেছে পাকিস্তান। তাহলে আমাদের নিয়ে কেন খেলায় না? ভাল অবস্থা হলে পরে যাব আমরা। তাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে যাওয়াটা আসলে কতটা যুক্তিযুক্ত তা নীতিনির্ধারকরাই ভাল বলতে পারবেন।
The Daily Janakantha ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।