হট নিউজ
বর্তমানে বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা নববর্ষ পালিত হচ্ছে। খ্রিষ্টীয় হিসাব মোতাবেক তারিখটি ১৪ এপ্রিল। ডক্টর শহীদুল্লাহ কমিটির সুপারিশ মোতাবেক ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সরকারিভাবে এই রীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এর আগে কখনো ১২ এপ্রিল, কখনো ১৩ বা ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ পালিত হতো। পশ্চিমবঙ্গে এখনো ১৫ এপ্রিল থেকে বাংলা নববর্ষ শুরু হয়।
ইতিহাসের অস্পষ্টতার কারণে অতীতে বাংলা অঞ্চলে কখন বাংলা সন বা বাংলা নববর্ষ চালু হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা যায় না। অধিকাংশ লেখক-গবেষক পণ্ডিতরাই বাংলা সন চালুর কৃতিত্ব দিতে চান মুঘল সম্রাট আকবর তার সভাপণ্ডিত ফতেহ উল্লাহ সিরাজী ও রাজস্বমন্ত্রী রাজা টোডরমলকে। আবুল ফজলের ‘আইন-ই-আকবরী’ মতে সুবে বাংলায় খাজনা আদায়ের স্বার্থে মুঘলরা ‘ফসলি সন’ চালু করেছিল। এই সন চালু হয়েছিল ইলাহি সনের অনুসরণে। ‘ইলাহি সন’ আবার চালু হয়েছিল হিজরি সনের (৯৬৩) অনুসরণে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ‘ফসলি সন’ই কি ‘বাংলা সন’? ‘আইন-ই-আকবরী’ মতে ‘ফসলি সন’ বঙ্গদেশে চালু হয়েছিল ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ থেকে। তবে ঘোষণাটি দেয়া হয়েছিল ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ মার্চ। ১৫৫৬ ছিল সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের বছর। পরে অবস্থা ভেদে ফসলি সন বা নববর্ষ কখনো ১০ মার্চ, কখনো ১২ মার্চ, কখনো ১৯, ২০ বা ২১ মার্চ থেকে গণনা করা হতো। বাংলা সনের হিসাব অনুযায়ী ফাল্গুন ও চৈত্র মাসের আনুষঙ্গিক মাস হচ্ছে মার্চ ।
এটা যে কখন কিভাবে বাংলা বৈশাখ মাস অর্থাৎ খ্রিষ্টীয় এপ্রিল (১২-১৫ এপ্রিল) হয়ে গেল ইতিহাসবিদ বা পণ্ডিতরা সে বিষয়ে নীরব। ১৯৪৭-এর পর ঢাকা ও কলকাতায় বাংলা নববর্ষ এবং সম্রাট আকবরের কৃতিত্ব নিয়ে বিস্তর গবেষণা হলেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তথ্য বা নিদর্শন পাওয়া যায়নি মুঘল আমলে বাংলা সন ব্যবহারকৃত কোনো খাজনা আদায়ের রসিদের। এ ব্যাপারে কোনো লিপি, পুঁথি, তালপাতা, ইস্টক, শিলাখণ্ড, স্থাপত্য নির্দশনও অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। তা হলে কোন প্রমাণের ভিত্তিতে লিখা হচ্ছে আকবর বৈশাখ মাস থেকে বাংলা সন চালু করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।