আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গার্মেন্টস সেক্টরের জিএসপি সুবিধা বাতিল এবং আমার কিছু কথা

© এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের। তাই লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যবহার না করার অনুরোধ রইল... বাংলাদেশ সময় গতকাল রাত দেড়টার দিকে ওবামা প্রশাস ইউএসএ'র বাজারে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পোশাকের জিএসপি সুবিধা বাতিল করে দিয়েছে। আশংকা করা হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও খুব দ্রুতই তাদের বাজারেও এই সুবিধা প্রত্যাহার করে নিবে। সুতরাং, সুস্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশের রপ্তানী আয়ের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের এই খাতটি চিরতরে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। আনুমানিক চল্লিশ লাখ নারী-পুরুষ গার্মেন্টসে কাজ করেন।

এর বাইরেও গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট বায়িং হাউজ/সিএন্ডএফ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এই সেক্টরের সংগে জড়িত। সামগ্রিকভাবে এই সেক্টরের সংগে সরাসরি জড়িতদের পাশাপাশি তাদের উপর নির্ভরশীল পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সংখ্যা বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, অন্তত কয়েক কোটি মানুষ এই শিল্পের সংগে জড়িত। আরেকটু খোলাসা করে বললে দেখা যায়: যে পোশাকশিল্প শ্রমিকটি গার্মেন্টসে কাজ করে মাসে ৬০০০ টাকা উপার্জন করে, i). সে ১৫০০ টাকা খরচ করে তার খাবার খরচ হিসেবে ii). ১২০০ টাকা খরচ করে তার বাসা ভাড়ার জন্য iii). ৩০০ টাকা খরচ করে চিকিৎসা খাতে iv). ৫০০ টাকা খরচ করে তার যাতায়াত, পোশাক-আশাক এবং অন্য প্রয়োজনীয় প্রসাধন কিনতে v). ২০০০ টাকা সে তার পরিবারে প্রদান করে এবং এই দুই হাজার টাকাও খরচ হয় নিত্যপ্রয়োজনী খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসা কিংবা অন্যান্য খাতে vi). বাকি ৫০০ টাকা সে সঞ্চয় করে এবং সঞ্চয়ের এই ৫০০ টাকা কোন সমিতি কিংবা অন্য কোনভাবে তা কোন না কোন প্রতিষ্ঠানে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ হয়। এই খরচের ছয়টি খাত দেখানো হয়েছে, এখানেও রয়েছে অসংখ্যা ইকোনমিক সাইকেল। একটু ব্যাখা করি: খাবার খরচ হিসে একজন গার্মেন্টসকর্মী যেই ১৫০০ টাকা খরচ করে, সেই টাকাটা যায় তেল-নুন, সবজি কিংবা মাছ বিক্রেতার পকেটে।

এই টাকা দিয়ে সেই ব্যবসায়ী একইভাবে তার ব্যবসা এবং পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করে। অনুরূপভাবে, গার্মেন্টসকর্মীর খরচের বাকি টাকাগুলোও কোন না কোনভাবে সমাজের অন্যান্য পেশাজীবি মানুষের পকেটে যায়। এবং এভাবেই অর্থনীতি সচল থাকে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, গার্মেন্টস সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হলে কেবল ৪০ লাখ গার্মেন্টসকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, বরং আমাদের গোটা অর্থনীতিই মারাত্নক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। আর এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী কে? অবশ্যই বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের নেতৃত্বাধীন হাসিনা সরকার।

গার্মেন্টস সেক্টরে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও তারা তা প্রতিকারের কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি। সর্বশেষ তাজরিন ফ্যাশন্স এবং রানা প্লাজা ধ্বসের পরও তাদের টনক নঁড়েনি। নামমাত্র তদন্ত কমিটি এবং দায়সর্বস্ব ক্ষতিপূরণ দিয়েই তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করেছেন। তাহলে এখন কি করতে হবে? - আগামী নির্বাচনে তাদেরকে আবার নির্বাচিত করে ক্ষমতায় এনে গার্মেন্টস সেক্টরকে চিরতরে সীলগালা করে ব্যানড ঘোষণা করে মুমূর্ষু অর্থনীতিকে দাফন করতে হবে । সবাই বলেন আমীন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.