সামুতে অর্থহীন অশুদ্ধ বাংলা ও বাংলিশ শব্দ পরিহার করি
নরসিংদী সরকারি কলেজের মানবিক শাখার মেধাবী ছাত্রী হাওয়া আক্তার জুঁই। পূর্ব ভেলানগর গ্রামের ইউনুস মিয়ার মেয়ে জুঁইয়ের ২০০৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগর উপজেলার নূরজাহানপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর রফিকুল জুঁইকে তার বাবার বাড়ি ভেলানগরে রেখে দুবাই চলে যায়। বিদেশ যাওয়ার আগে রফিকুল জুঁইকে সাফ জানিয়ে দেয় লেখাপড়া করা চলবে না। স্বামীর এই কথা মানতে পারেনি জুঁই।
বাবাকে চাপ দিতে থাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়ার জন্য। মেয়ের পড়াশোনার প্রতি এই আগ্রহ দেখে জামাইয়ের নিষেধ সত্ত্বেও জুঁইকে নরসিংদী সরকারি কলেজে ভর্তি করে দেন ইউনুস মিয়া। স্ত্রী কলেজে ভর্তি হয়েছে- এ খবর জানতে পেরে রফিক দেশে চলে আসে। জুঁইকে উপহার সামগ্রী দেয়ার কথা বলে কৌশলে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রফিকের ভগ্নীপতির বাসায় নিয়ে আসে। গয়না পরানোর কথা বলে জুঁইকে হাত বাড়িয়ে দিতে বলেই গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সকালে চাপাতি দিয়ে এক কোপে পাঁচ আঙুল কেটে নেয় রফিক।
স্বামী ভেবেছিল আঙুল কেটে নিলেই সে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু কী এক দৃপ্ত প্রত্যয়ে ঠিকই পড়াশোনা করেছে সে। স্বামীর চাপাতির কোপে ডান হাতের পাঁচ আঙ্গুল হারালেও মনোবল হারায়নি সে। আজ রবিবার থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় সবার সঙ্গে অংশ নিচ্ছে নরসিংদীর সেই লড়াকু জুঁই।
গত বছরের ২৩ মার্চ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ১২ দিন আগে সাতুরিয়া গ্রামের বাড়ির পাশে র্যাবের গুলিতে আহত হয় লিমন।
পরে জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকেরা তার বাঁ পা কেটে ফেলেন। ক্রসফায়ারের প্রচলিত গল্পের আদলে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের অভিযোগ করে লিমনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়। একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে। লিমনকে সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করে র্যাব। লিমনের ওপর এই নিষ্ঠুরতার খবরে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠলে রাজাপুর থানার পুলিশ তড়িঘড়ি করে গোপনে অস্ত্র মামলায় লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
দুটি মামলাতেই প্রতি মাসে ঝালকাঠি জেলা সদরে গিয়ে লিমনকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়। সরকার লিমনের নামে দায়ের করা দুটি মিথ্যা মামলা এখনো প্রত্যাহার করেনি। পা হারানোর পর র্যাবের দুটি ‘মিথ্যা’ মামলা নিয়েও মনোবল হারায়নি লিমন। কৃত্রিম পা নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে সামনে এগিয়ে চলার। সারা দেশে আজ রোববার থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সেও অংশ নেবে।
পরীক্ষা দেবে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে। মিথ্যা মামলার অভিযোগ মাথায় নিয়েই লিমনকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।
আমরা জীবন যুদ্ধে হার না মানা এই দুই লড়াকু সৈনিকের সাফল্য কামনা করছি। আমাদের শুভেচছা ও আশির্বাদে তাদের পিছনের সকল দুঃখ কষ্ট লাঘব হবে পাথেয় হবে আগামীর দূর্গম পথ পাড়ি দেবার। ভালো থেকে জুঁই মনোবল দৃঢ় রাখো লিমন।
দেশের মানুষ তোমাদের সংগ্রামের সাথী হবে সব সময়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।