আমি আমার "বাস্তব" কর্মব্যস্ত জীবনের ফাকে একটু বিনোদনের আশায় সুধু মাত্র ফান/মজা/টাইম পাশ/বন্ধুত্ব/দুষ্টামি করার জন্যেই আমার " "ভার্চুয়াল লাইফ" ব্যাবহার করি। আমার কোনো কমেন্টে বা পোস্টে কেউ যদি আঘাত পান, তাহলে সরাসরি জানাবেন, আমি“প্রকাশ্য সরি” বলে দিব। কতদিন হয়ে গেল
দেখি না তোমায়,
কোথায় আছ তুমি
কোন অজানায়। ।
আমাকে কি কখনো ভুল করে
মাঝ রাতে মাঝে মাঝে মনে পড়ে?
বাচ্চু ভাইর এই গানটা আগে শুনা হয়নি, আজ হটাৎ করে ইমনের বাসায় শুনে সিডিটা নিয়ে আসলাম।
আসলে গানটি ভাল লাগার কারনও আছে, আজ কয়দিন ধরে শশী’কে খুব মনে পড়ছে।
শশী, আমার প্রথম এবং একমাত্র ভালবাসা, আমার জান।
আমি আসলেই জানি না ও এখন কেমন আছে, কোথায় আছে। সুধু জানি আমি ওকে খুব ভালবাসি। আমার সকল অস্তিত্ব দিয়ে আমি ওকে ভালবাসি।
(টিন টিনিই টিনিট টিনিট-মোবাইল রিং টোন)
ঃ হ্যালো,
ঃ কই, কি করিস?
ঃ বাসায় বাচ্চু ভাইর গান শুনছিরে।
ঃ কি গান?
ঃ এইত “কত দিন হয়ে গেল দেখিনা তোমায়”
ঃ তারমানে এখনো তুই শশী’ কথা মনে করছিস? থাক, বসে বসে পুরান প্রেম নিয়ে থাক।
ঃ হ্যালো, হ্যালো।
নাহ! সোনিয়া’কে নিয়ে আর পারি না! ও কখন রাগ করে আর কখন খুশি হয় সেটা বুঝাই মুসকিল।
হ্যা, আজ শশী’র কথা খুব মনে পড়ছে।
মনে হচ্ছে এই তো সেদিনের ঘটনা।
ইন্টারমিডিয়েট এ ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মামার বাড়ী বেরাতে গিয়েছিলাম। ৩ দিন পরে ঢাকায় আসি।
বাসায় এসে আমার বারান্দায় নীল একটি কাগজের চিরকুট পাই, খুব গুছিয়ে সুন্দর করে লিখাছিলঃ
আপনি ৩ দিন ধরে কোথায় ছিলেন?
বারান্দায় আসেন নাই কেন?
আপনি জানেন না, আপনাকে না দেখলে আমার খারাপ লাগে?
ওয়াওওওও তাহলে ... (চিৎকার)
আমি কিছুটা অবাক ও প্রচন্ড খুশি হয়েছিলাম সেদিন,
তারাতারি নিজের রুমের দরজায় বন্ধ করে বারান্দায় বসি আর অপেক্ষায় করি পাসের বাড়ির বারান্দায় কখন ঐ মেয়েটি আসবে? কখন তার রুমের লাইট জালাবে।
আমি অপেক্ষায় করি,
রাত ১১টা,
১২টা
১টা
নাহ, ঐরুমের লাইট বন্ধ।
আজ মনে হয় না আর জ্বলবে। হয়ত কোথাও বেড়াতে গিয়েছে।
সকালে একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠলাম, আমার তো এখন আর স্কুল নেই। কলেজে ভর্তি হয়েছি মাত্র।
আচ্চা, ঐ বাড়ির মানুষ কি এসেছে।
দোড়ে বারান্দায় যাই।
আআআআ!!! সুন্দরি মেয়েটা দাড়িয়ে আছে যে!!!!
আমি অপলক নয়নে অনেক্ষন ধরে তাকে দেখছি, আজ ওকে খুব সন্দর লাগছে। মনে হচ্ছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুন্দরি মেয়েটা আজ আমার সামনে এসেছে।
ও ঈশারা দিয়ে কি যেন বলছে,
হ্যা, বুঝতে পারছি, মেয়েটি বের হবে, আমাকে নিচে যেতে বলছে।
আমি খুব দ্রুত মুখ ধুয়ে নিচে নামি।
দুজন শ্যাওড়াপাড়ার ভিতরের রাস্তায় হাটছি। ও ইকটু সামনে, আমি পিছনে। যেন কেউ দেখে ফেললে কিছু না বুঝে।
কেউ কথা বলতে পারছি না সঙ্কোচে, ভয় করছে যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে সর্বনাশ!!
হেটে হেটে আনন্দ বাজার দিয়ে আবার ফিরতি পথ ধরলাম,
তখন আমিই জিজ্ঞেস করিঃ কাল কোথায় গিয়েছিলে?
শশীঃ কোথাও যাইনি তো, বাসায়ই ছিলাম।
আমিঃ মানে কি? আমি তো দেখলাম তোমার রুমের লাইট নিভানো।
শশীঃ ইচ্ছে করে নিভিয়ে রেখেছিলাম।
আমিঃ তার মানে তুমি ইচ্ছে করে লাইট অফ করে রেখেছিলে যাতে আমি তোমাকে দেখতে না পাই?
শশীঃ হুম। আমি দেখেতে চেয়েছিলাম আপনি কি করেন।
আমিঃ উফফফফ!!! আমি বোকার মত সারারাত কি কস্টই না করেছি। তোমার নাম’টা বলবে?
শশীঃ শশী।
আমিঃ আমার নাম সাইম।
শশীঃজানি।
আমিঃ কি ভাবে?
শশীঃ কিভাবে মানে? আমি জানি।
আমিঃ ওওও!!!! (কথা বলার মত আর কিছু খুজে পেলাম না)
আবার কিছুক্ষণ নিরবে হাটছি। কি যেন বলতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু বলতে পারছিনা।
এবার শশী’ই নিরবতা ভাঙ্গলঃ আমি এই গলি দিয়ে বাসায় ফিরব। আপনি অন্য রাস্তা দিয়ে যান।
আমিঃ কাল কি তোমার স্কুল আছে?
শশীঃ হু।
আমিঃ আমি তোমাকে আর একটু এগিয়ে দেই?
শষীঃ নাআআ!! এই রাস্তার মাথায় আমার চাচুরা আড্ডা দেয়। এক সাথে দেখলে পিটুনি দিবে।
আমিঃ ঠিক আছে, কাল স্কুলে যাবার সময় আমি রাস্তায় দাড়াব। তুমি কোন স্কুলে পড়?
শশীঃআপনি যে স্কুলের পাশে ক্রিকেট খেলেন।
আমিঃ মানে? তুমি অগ্রণীতে পড়? কোন ক্লাসে?
শশীঃ নাইনে। আর কথা না, আপনি এখন পিছন থেকে সরে যান। নইলে চাচ্চুরা কেউ দেখবে।
এই ছিল আমার প্রথম প্রেমের প্রথম দিন। জীবনের প্রথম প্রেমের সৃ্তি । আজ ১২ বছর পড় খুব বেশি মনে পড়ছে। মনে পরছে
সুখময় সব অনুভুতি।
(টিন টিনিই টিনিট টিনিট-মোবাইল রিং টোন)
সোনিয়া আবার ফোন করেছে,
আমিঃ হ্যালো
সোনিয়াঃ কি তুই রেডি হয়েছিস?
আমিঃ রেডি মানে?
সোনিয়াঃ কেন তোকে না একটু আগে বললাম, আজ বসুন্ধরায় যাব?
আমিঃ কোথায় বললি? তুই তো কিছু না বলেই ফোন রেখে দিয়েছ?
সোনিয়াঃ আচ্ছা, বাপ।
আমি আগে বলি নাই, এখন বললাম। তুই ১০ মিনিটে রেডি হ, আমি তোকে তুলে নিব।
সোনিয়া আসলেই পাগল। ও আমার ৫ বছরের ছোট, এবার বিবিএ থার্ড ইয়ারে পড়ে। তার পরেও তুই তুই করে এমন ভাব দেখায়, আমিই যেন ওর ছোট।
ওর বড় বোন আবার আমার বড় বোনের দির্ঘদিনের বান্ধবি। সেই হিসেবে পরিচয়। দুই ফ্যামিলির আসা যাওয়া আছে। তাই রাগ করে কিছু বলতেও পারি না।
আমি আর সোনিয়া বসুন্ধরার পিছনে কাশফুলে বাগানে হাটাহাটি করছি।
আমি আমার ক্যামেরা দিয়ে সোনিয়ার ছবি তুলছি, সোনিয়ার আবার ছবি তোলার খুব শখ।
সোনিয়াঃ নারে। আজ ছবি তুলতে ভাল লাগছে না। চল গাড়িতে গিয়ে বসি। কেন? “ফটোবিবি”র আজ এই কথা!!??
আমিঃ কি তোর মন খারাপ? বাসায় কোনো ঝামেলা?
সোনিয়াঃ হুম।
আম্মু বের হবার সময় বলল বাসায় আজ কারা যেন আসবেন। আমি যেন তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরি।
আমিঃ হে হে আমি বুঝতে পারছি। আজ তোকে মনে হয় দেখতে আসবে।
সোনিয়া (কিছুক্ষন চুপ করে থেকে) আমি বিয়ে করে দূরে চলে গেলে তুই খুশি হবি?
আমিঃ না, ব্যাপারটা ঠিক এ রকম নয়।
মেয়েদের তো একদিন বিয়ে হবেই।
হটাত আবহাওয়া অন্যরকম মনে হল, সোনিয়া গাড়ীতে গিয়ে বসে। গাড়িতে আমরা কেউ কোন কথা বল্লাম না, গাড়ি চলছে।
আমিঃ এই আমি বনানী নেমে যাই। তুই বাড়ি যা।
আমি নেমে গেলাম। ও আজ বিদায় জানাল না। অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি ওর দু চোখ পানিতে ভরে গিয়েছে।
_____________
আজ এই মাত্র আমি আংটি বদল করলাম।
আগামি ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ আমার বিয়ে।
না, এবার আর ভুল করি নি। আমি যাকে ভালবাসতাম তাকে আমি হারিয়েছি। কিন্তু এবার যে আমাকে ভালবাসে তাকে আমি হারিয়ে যেতে দেই নি। ভালবাসা হারানোর কস্ট আমি বুঝি, তাই সোনিয়া কে সেই কস্ট পেতে দেই নেই।
আজ সন্ধ্যার আগেই আমি আমার পরিবার কে নিয়ে সোনিয়াদের বাসায় এসেছি, আর পাগল’টাকে সবার সামনে আংটি পড়িয়ে দিয়েছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।