কলকাতার সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকা প্রকাশ করেছে এশিয়া কাপে টাইগারদের খেলা দেখে অভিভূত কলকাতার 'মহারাজা' সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এর উচ্ছ্বসিত অনুভূতি। ফাইনালের সেই মাহেন্দ্রক্ষনে তার যে লেখাটি ছিল তা হুবহু এ রকম -
অভিনন্দন বাংলাদেশ। আমি নিশ্চিত প্রতিটি বাংলাদেশি এখন স্বপ্ন দেখছে, ক্রিকেটে তাদের দেশ এশিয়ার রাজা হতে যাচ্ছে। আর ব্যাপারটা ঘটলে সেটা হবে ওদের ক্রিকেটের টার্নিং পয়েন্ট।
ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, সমর্থক ও খেলাটার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশের প্রত্যেকে উদ্বুদ্ধ হবে ওদের দেশের ক্রিকেটকে পরের ধাপে তোলার জন্য।
এবারের এশিয়া কাপ শুরুর সময় কেউ ভাবেনি, খেতাবের দাবিদার হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।
বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত এবং রানার আপ শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠার জন্য বাংলাদেশ দল সমস্ত প্রশংসা প্রাপ্য।
নিজের দেশে বাংলাদেশ সব সময়ই শক্তিশালী। এবার ওরা খুব ভালো খেলে বিশ্ব ক্রিকেটের দুটো বড় শক্তিকে হারিয়েছে। আমি নিশ্চিত, ফাইনালেও ওরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খুব আত্মবিশ্বাসী হয়েই নামবে।
মনে রাখবেন, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের রানের খুব কাছে পৌঁছেছিল বাংলাদেশ। শেষে স্নায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। সুতরাং পাকিস্তানকে ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে পুরোদমে সতর্ক থাকতে হবে।
আর বাংলাদেশের উচিত কোন কিছু হারানোর নেই মনোভাব নিয়ে মাঠে নামা। ফাইনালে ওঠাটাই ওদের কাছে একটা বিরাট সাফল্য, এরপরে ওরা যা পাবে সেটাই ওদের লাভ।
বাংলাদেশ টিমে বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। অভিজ্ঞ সাকিব, তামিম, মাশরাফিদের সঙ্গে তরুণ নাসিরদের মিশ্রণটা খুব ভালো হচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা, ওরা কেউ মাঠে নেমে ঘাবড়ায় না।
যদি ঘাবড়াত, তাহলে ভারত আর শ্রীলঙ্কার রান কেন টেনশন ছাড়াই তাড়া করে জিততে পারত না। পরিস্থিতির চাপে ভেসে না যাওয়াটাই এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সাফল্যের চাবিকাঠি।
আমি নিশ্চিত এর পিছনে বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ বা বিপিএলের অবদান আছে। বিশ্ব ক্রিকেটের বড় বড় নামের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করার মহাসুযোগটা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে 'ফার্স্টহ্যান্ড' অভিজ্ঞতা প্রচুর দিয়েছে।
সাকিবকে আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার বিশ্বাস, ও বিদেশের মাঠেও সফল হবে। স্পিনার হিসেবে দারুণ পরিণত মন্তিষ্ক, খুব ভালো ফিল্ডার, কার্যকর ব্যাটসম্যানও।
সাকিবের খেলা আমি খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করি।
অন্যদিকে পাকিস্তান নিশ্চয়ই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে যে, ফাইনালে ভারতকে খেলতে হচ্ছে না। কিন্তু মনে হয় পাকিস্তানিদের খুব আরামে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ নেই, কেননা ওরা বুঝছে, বাংলাদেশকে তাদের ঘরের মাঠে হারানোটা খুব সহজ ব্যাপার হবে না।
বিশেষ করে এই মুহূর্তে। কাগজ-কলমে দুই ফাইনালিস্টের তুলনা করলে পাকিস্তান অবশ্যই শক্তিশালী।
কিন্তু পর্দার পিছনে এই ফাইনাল ঘিরে যে প্রবল আবেগের ঝড় উঠেছে বাংলাদেশে, তাতে এ ম্যাচে ফেভারিট বলে কেউ থাকতে পারে না।
আগে ব্যাট করলে বোর্ডে ঠিক কত রান তুলে রাখা উচিত, সেটা পাকিস্তানের কাছে একটা চিন্তার বিষয় হবে। কারণ মিরপুরের মাঠে তিনশ'র ওপর রানও সহজে তাড়া করে সফল হওয়া যাচ্ছে। এর জন্য এশিয়া কাপের পিচ প্রস্তুতকারকের প্রশংসাই প্রাপ্য। টুর্নামেন্টটা এ জন্যই এত জমজমাট হয়েছে।
' বাংলানিউজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।