কোনমতে নাস্তা খেয়েই ল্যাপটপটা চার্জারের সাথে লাগিয়ে শুয়ে পড়লো অপু । চট্টগ্রাম থেকে পঞ্চগড় – দীর্ঘ ১৮ ঘন্টার জার্ণি শেষ হয়েছে কিছুক্ষণ আগে । এরমধ্যে ফেসবুকে ঢোকা হয়নি অপুর । মনটা খুব আকুপাকু করছিল । প্রতি ঘণ্টায় একবার ফেসবুকে ঢুঁ না দিলে তার ভালো লাগে না ।
নেশা হয়ে গেছে ।
মোবাইল , ল্যাপটপ দুটোরই চার্জ মাঝপথে শেষ হয়ে গিয়েছিল । মহা বিপদ ।
১০ মিনিট হয়েছে কি হয়নি- বাইরে শোরগোল শোনা গেল । এলাকার ছেলেপেলেরা হইহই করে দৌড়াচ্ছে ।
বাড়ির কাজের ছেলেটা হাপাতে হাপাতে এসে বলে গেল – ‘ অপু ভাইয়া আসেন, পাগলা কুত্তা বাইর হইছে । আইজ অইটাক মারি ফেলামো’ ।
অপুর রক্তও ছলকে উঠলো । পাগলা কুকুর মারাটা গ্রামের ছেলেপেলেদের কাছে একটা মহা বীরত্বের কাজ । ছোটবেলায় একবার পাগলা কুত্তাকে তাড়া করার স্মৃতিটা এখনো চোখে ভাসে ।
আম্মার জন্যে খুব একটা সুবিধা করা যেত না ।
বাইরে দৌড়াদৌড়ির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে । কিন্তু এতবড় ঘটনা ফেসবুকে স্ট্যাটাস না দিলে চলবে কীভাবে ? অপু তাড়াতাড়ি স্ট্যাটাস দিল ‘আইজ পাগলা কুত্তাডারে মাইরা ফালা ফালা কৈরা ফালামু’, ধর হালারে, মার !!’’
আঙ্গিনা থেকে একটা কাঠের চেলা নিয়ে অপুও দৌড় লাগালো । বীরত্বের কাজে অংশগ্রহণ করতে না পারলে জীবনটাই বৃথা কিনা !!
.............................................
তিনদিন পর ।
হঠাৎ অপুদের বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ি এসে উপস্থিত ।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই তড়িৎ বেগে বাড়িতে ঢুকে অপুকে গ্রেপ্তার করে ফেললো পুলিশ । অপুর বড় ভাই এগিয়ে এলেন । অভিযানের নেতৃত্ব দানকারী এসআইকে জিজ্ঞেস করলেন , ‘ভাই সমস্যা কি ? ও আমার ছোট ভাই, চট্টগ্রামে থাকে । কয়েকদিনের জন্য বাড়িতে এসেছে । কী করেছে অপু ? ওকে ধরছেন কেন ?’
- আপনার ভাই ছাত্রলীগকে খুন করার হুমকি দিয়েছে ।
- কন কি ? কখন কোথায় ?
- ফেসবুকে , তিনদিন আগে ।
- কী লিখেছিলিরে অপু ? দেখি ।
অপু স্ট্যাটাসটা দেখালো । কেন দিয়েছিল সেটাও বললো । বড়ভাই অবাক হয়ে পুলিশের এসআইকে বললেন – ‘ভাই আপনাদের ভুল হচ্ছে ।
গ্রামে একটা পাগলা কুত্তা বের হয়েছিল । অপু ঐটার কথা লিখেছিল’ ।
অপুকে গাড়িতে তুলতে তুলতে পুলিশের এসআই বললেন –‘ ভাই কথা বাড়াইয়া লাভ নাই । পাগলা কুত্তা কাদেরকে বলে আর হায়েনা কাকে বলে দেশের সবাই এখন এইটা জানে’ । বাকিটা আদালতেই দেখা যাবে ।
- পাগলা কুত্তা/ ২৮-০৬-২০১৩
সৌজন্যে- Muhsin Abdullah Mu ও সত্য পাঠক----- ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।