আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতের অর্ধেকের বেশী মানুষ, খোলা আকাশের নিচেই এ কর্ম সারে। মোবাইল আছে, টয়লেট নেই !!!

সাধারণ মানুষের সাধারণ কথা। ভারতের জনসংখ্যার অর্ধেকই খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ করে। কেননা মোট বসতবাড়ির অর্ধেকেই কোনো টয়লেট নেই। অথচ দেশটিতে এর চেয়ে বেশি মানুষের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে। সমপ্রতি প্রকাশিত এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।

ভারতের শুমারি বিভাগের ওই জরিপে দেখা যায়, ভারতের মোট ২৪ কোটি ৪৬ লাখ বসতবাড়ির মধ্যে টয়লেট আছে ৪৬.৯ শতাংশ বাড়িতে। বাকি ৪৯.৮ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দারা খোলা আকাশের নিচেই এ কর্ম সারে। ৩.২ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দা ব্যবহার করে পাবলিক টয়লেট। অন্যদিকে দেশটির ৬৩.২ শতাংশ বাড়িতেই ল্যান্ডফোন বা মোবাইল ফোন সংযোগ আছে। অর্থাৎ যে বাড়িতে টয়লেট নেই, সেই বাড়িতেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়।

জরিপে দেখা যায়, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ৭৭ শতাংশ বাড়িতেই টয়লেট নেই। উড়িষ্যায় এ হার ৭৬.৬ শতাংশ এবং বিহারে ৭৫.৮ শতাংশ। এ তিনটি রাজ্যই ভারতের সবচেয়ে অবহেলিত অঞ্চল যেখানে বেশির ভাগ মানুষই দৈনিক এক ডলারেরও কম আয়ে জীবন ধারণ করে। ভারতের শুমারি কমিশনার ও রেজিস্ট্রার জেনারেল সি চন্দ্রমউলি গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এ জরিপের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ অব্যাহত থাকা ভারতের জন্য একটি গভীর উদ্বেগের ব্যাপার।

দেশের অর্ধেক মানুষই এ কাজে বাধ্য হচ্ছে। ' প্রচলিত সংস্কৃতি ও সংস্কার এবং উপযুক্ত শিক্ষার অভাবই এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের জন্য দায়ী বলে তিনি উল্লেখ করেন। জরিপে ভারতের পরিবার ব্যবস্থা সম্পর্কে আরেকটি বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে। ভারতীয় পরিবারগুলোর ৭০ শতাংশই এখন এক দম্পতিবিশিষ্ট। এ ফলাফল ভারতের পারিবারিক ও আর্থসামাজিক অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন নির্দেশ করে যেখানে আগে যৌথ পরিবারকেই ভারতীয় ঐতিহ্যের আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

এ ছাড়া বিনোদন ও তথ্যের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারতের সমাজজীবনে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে তার একটি চিত্রও উঠে আসে জরিপের তথ্যে। জরিপে দেখা গেছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫৩.২ শতাংশই বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। এ ছাড়া ৪৭.২ শতাংশের বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে। তবে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারতের বিশাল জনগোষ্ঠী এখনো পিছিয়ে আছে। মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.১ শতাংশ ইন্টারনেট সুবিধাসহ কম্পিউটার ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে আসে।

এ জরিপের ফল আসলে সবার সামনে একটি তিক্ত সত্য উন্মোচিত করে। দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে যেখানে ভারতে সৃষ্টি হওয়া উঠতি মধ্যবিত্ত ও ধনিক শ্রেণী নাগরিক জীবনের সামপ্রতিকতম সুবিধাগুলো সহজেই গ্রহণ করতে পারে, সেখানে উন্নয়নের চাকায় পিষ্ট হয়ে দেশটির বেশির ভাগ মানুষই এখনো তাদের বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারে না। বাজার অর্থনীতির এই যুগে এ সত্য শুধু ভারতের জন্যই প্রযোজ্য নয়, বরং তৃতীয় বিশ্বের স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল সব দেশের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। সম্পদের সুষম ব্যবহার এবং সামাজিক সমতা এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একটি উপায় হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.