আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদটা আগে খাইয়া লন...

বিষয়টি নিয়ে বলার আগে একখান গল্প দিয়ে শুরু করি.. এক চোর গ্রামে চুরি করতে গিয়া ধরা পড়ল। তো গ্রামের মাতব্বরগনদের নিয়ে চেয়ারম্যান সাহেব বিচার করতে বসলেন। নিজের পছন্দমত শাস্তি বেছে নেয়ার জন্য চেয়ারম্যান সাহেব চোরকে দুটি অপশন দিলেন এবং বললেন যে এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটা বেছে নিতে । - অপশন দুটো হলো - ১) ১০ টি বড় ধরনের কাঁচা পেয়াজ খাওয়া এবং ২) ১০ টি জোড়া বেতেরবাড়ি খাওয়া। - চোর কিছুক্ষন চিন্তা করল (মনে মনে হসল পেঁয়াজ খাওয়া আবার শাস্তি হলো না-কি) এবং সিদ্ধান্ত জানালো যে পোঁয়াজ-ই খাবে।

যথারীতি শাস্তি হিসেবে চোরকে প্রথম পেঁয়াজটি খেতে দেয়া হলো। অনেক কষ্টে সেটি শেষ করলো বটে কিন্তু এত্ত ঝাঁঝ ছিলো যে, সে আর সহ্য করতে পারলো না। তখন নতুন সিদ্ধান্ত জানালো, না পোঁয়াজ নয় বেতের বাড়িই শাস্তি হিসেবে নিবে সে। চেয়ারম্যান সাহেব তাই করলেন। শক্ত সামর্থ একজনকে দায়িত্ব দিলেন যে শাস্তিটি এ্যাপ্লাই করতে।

বাড়িটি এত জোড়ে ছিলো যে, ব্যাথায় চোরটি চিৎকার করতে লাগলো। এবং পরক্ষনেই তার সিদ্ধান্ত বদলালো যে না, এত ব্যাথা সহ্য করতে পারুম না , সে আবার শাস্তি হিসেবে পেঁয়াজ খাওয়াকেই বেঁছে নিলো। - যথারীতি চোরকে ২য় পোঁয়াজটি খেতে দেয়া হলো; এবারো একই অবস্থা ঝাঁঝ এত ছিলো যে সে আর সহ্য করতে না পেরে আবারো সিদ্ধান্ত জানালো যে বেতের বাড়িই খাবে। বেতের বাড়ি ২য় কিস্তি এপ্লাই করার পর আবারও তার সিদ্ধান্ত বদলালো যে না, পোঁয়াজই খাবে......এভাবে চলতেই থাকলো । শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো সে একই সঙ্গে ১০ টি পেঁয়াজ এবং ১০ টি জোড়া বেতের বাড়ি উভয় শাস্তিই নিজ থেকে নিয়েছে।

যদিও সে এর যে কোনো একটা নিতে পারতো। গল্প শেষ। মোরাল অব দ্যা ষ্টোরি কি? অনেকেই আন্দাজ করতে পেরেছেন নিশ্চয়ই। বিষয়টা রাজনৈতিক। আমরা একবার মনে করি এই সরকার ভালো এই মনে করি ভোট প্রদান করি আবার মনে করি যে না, ঐ সরকারই ভালো ছিলো তাই তাকে আবার ভোট প্রদান করি।

এভাবে আমাদেরও চলছে..... এবার আসি শিরোনামের বিষয়টি নিয়ে, আজকে একটি টিভি চ্যানেলে এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথোপকোথনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান জনাব বি. চৌধুরী হাসি মুখে বলেন উক্ত কথাটি যে, " ঈদটা আগে খাইয়া লন..." এরপর তাঁরা আরও একটি জোট গঠন করে বর্তমান ১৮ দলের মহাজোটের সঙ্গে তীব্র আন্দোলনে যাবেন বলেছেন। আর বোঝাই যাচ্ছে বর্তমানে একটাই বিষয় নিয়ে আন্দোলন আর তা হলো তত্তাবধায়ক সরকার। এই তত্তাবধায়ক সরকার নিয়ে অনেক মত-দ্বিমত রয়েছে। তত্তাবধায়ক সরকার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন আমাদের মত দেশের জন্য কতটা প্রযোজ্য? পাকিস্থানের মত একটি রাষ্ট্র যাকে কি-না বলা হত ব্যার্থ রাষ্ট্র সেটি এখন তত্তাবধায়ক সরকারের আন্ডারে সফল নির্বাচন করল। যাই হোক এটা বলা যায় আগামী ঈদ পর্যন্ত দেশটি শান্ত থাকবে কিন্তু এর পর কি-হবে আমরা কেউ বলতে পারি না।

দেশের ভালো হবে না-কি খারাপ হবে এটা নিয়ে আমরা অনেক চিন্তিত কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদরা কি আদৌ চিন্তিত? সেটা হলে আমরা দেখতে পারতাম যে কোনো একদল সমঝোতা করতো। শেষে একটাই কথা আমরা যাচ্ছি একটি অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যে জানি না সেখানে কি অপেক্ষা করছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।